Skip to main content

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য ট্রাই করুন গ্রিন টির এই ৫টি ফেইসপ্যাক

ওজন কমানোর জন্য অনেকেই নিয়মিত গ্রিন টি পান করে থাকেন। বহুবিধ গুণ সম্বলিত গ্রিন টি শুধু যে ওজন কমাতে সাহায্য করে তাই না, এটি ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, এমনকি ব্লাড প্রেশারও নিয়ন্ত্রণ করে। স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে জনপ্রিয় গ্রিন টি কিন্তু রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও পিছিয়ে নেই। ত্বকের যত্নে গ্রিন টি বর্তমানে এতোটাই জনপ্রিয় যে ফেইসওয়াশ, টোনার, সিরাম ইত্যাদি বিভিন্ন প্রোডাক্টে গ্রিন টি নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। সুন্দর আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য গ্রিন টি পান করার পাশাপাশি আপনিও নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন গ্রিন টির কিছু ঘরোয়া ফেইস প্যাক।

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য গ্রিন টি

গ্রিন টির ফেইস প্যাক সম্পর্কে জানার আগে চলুন জেনে নিই এর উপকারিতা।

১) বয়সের ছাপ কমায়ঃ গ্রিন টি তে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকে বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।

২) চোখের ফোলাভাব দূর করেঃ গ্রিন টির কোল্ড কম্প্রেস চোখের ফোলা ভাব ও ডার্ক সার্কেল কমাতে সাহায্য করে।

৩) অয়েলিনেস দূর করেঃ গ্রিন টি স্কিনের অতিরিক্ত সিবাম দূর করে স্কিন ফ্রেশ রাখতে সাহায্য করে।

৪) ব্রণ দূর করতে সাহায্য করেঃ গ্রিন টি-তে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ কমাতে কার্যকরী। এছাড়াও এটি স্কিনের অন্যান্য সমস্যা যেমন লালচে ভাব, ইরিটেশন এগুলো দূর করতেও বেশ সাহায্য করে।

৫) চুল পড়া কমায়ঃ গ্রিন টি-তে থাকা এপিগ্যালোক্যাটেকিন গ্যালেট নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং চুল পড়া কমাতেও সাহায্য করে।

গ্রিন টি দিয়ে তৈরি সহজ কিছু ফেইস প্যাক

ব্রাইটেনিং ফেইস প্যাক

এই ফেইস প্যাকটি তৈরি করতে লাগবে ১ চা চামচ বেসন, ১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং ২ চা চামচ গ্রিন টি। হলুদ ও বেসনের সাথে গ্রিন টি মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হলুদ স্কিনকে হেলদি ও ব্রাইট করে। এর সাথে গ্রিন টির মিশ্রণ ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। যাদের স্কিনে ব্রণ বা অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব রয়েছে, তাদের জন্য এই ফেইস প্যাকটি বেশ উপকারী।

অ্যান্টি এজিং ফেইস প্যাক

১ টেবিল চামচ গ্রিন টি, ১ টেবিল চামচ কমলার খোসা গুঁড়ো আর আধা চা চামচ মধু একত্রে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে পুরো মুখে অ্যাপ্লাই করুন। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কমলার খোসায় থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট স্কিনের নমনীয়তা ধরে রাখে, স্কিন ব্রাইট করে এবং স্কিনের বলিরেখা প্রতিরোধ করে। আর মধু স্কিনকে রাখে নরম, কোমল ও হাইড্রেটেড।

দাগহীন ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য ফেইস প্যাক

১ টেবিল চামচ গ্রিন টি ভিজিয়ে রেখে তাতে ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো (কোনো হার্শনেস যেন না থাকে, একদম ফাইন ডাস্ট হতে হবে) আর টকদই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। ১০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এই প্যাকটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বিশেষ উপযোগী। ত্বকের দাগ, ব্রণ ও কালচে ভাব দূর করতে এটি সাহায্য করে। এছাড়াও স্কিনের ইরিটেশন ও হাইপারপিগমেন্টেশন কমিয়ে আনতে হেল্প করে।

অয়েল কন্ট্রোলের জন্য ফেইস প্যাক

অতিরিক্ত সিবাম দূর করতে এবং স্কিন ডিপ ক্লিন করতে এই ফেইস প্যাকটি দারুণ কাজ করে। গ্রিন টি তৈরি করে সেটি ঠাণ্ডা করে নিয়ে ১ চামচ মুলতানি মাটির সাথে ২ চামচ পরিমাণ গ্রিন টি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি যেন কিছুটা ঘন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। এই প্যাকটি মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ দিন এই ফেইস প্যাক ব্যবহার করে দেখুন স্কিন কতটা গ্লো করে!

নারিশিং ফেইস প্যাক

মধু ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় একটি উপাদান। এটি স্কিনকে হেলদি ও স্মুথ রাখতে সাহায্য করে। এর সাথে গ্রিন টির মিশ্রণ স্কিনের অয়েল ব্যালেন্স করে এবং স্কিনের ইনফ্ল্যামেশন কমিয়ে স্কিনকে এনে দেয় ন্যাচারাল গ্লো। ১ টেবিল চামচ ফ্রেশ গ্রিন টির সাথে ২ টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে পুরো ফেইসে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ড্রাই স্কিনের জন্য খুব ভালো কাজ করে।

পুষ্টিগুণ বিচারে গ্রিন টি বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। গ্রিন টির যেমন রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা; তেমনি স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্যও এর ভূমিকা অতুলনীয়। তবে যেকোনও ফেইস প্যাক ব্যবহারের ক্ষেত্রেই প্যাচ টেস্ট করে নিতে হয় তেমন গ্রিন টির তৈরি ফেইস প্যাকও প্যাচ টেস্ট করে তারপর ব্যবহার করুন। DIY ফেইস প্যাকগুলো সেনসিটিভ ত্বকের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে, এটি খেয়াল রাখবেন। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে নিয়মিত গ্রিন টি পান করার পাশাপাশি স্কিন কেয়ার রুটিনে এই জাদুকরী উপাদানটির ব্যবহার আপনার আপনার ত্বকে এনে দেবে এক নতুন সতেজতা।

ছবি- সাটারস্টক

The post স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য ট্রাই করুন গ্রিন টির এই ৫টি ফেইসপ্যাক appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/mAuUQV7
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...