Skip to main content

শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ দেখায়?

শীতে ত্বকের জন্য এমনিতেই দরকার হয় একটু বাড়তি যত্নের। কিন্তু শরীরের অন্যান্য অংশের যত্ন নেওয়ার প্রতি যতটা মনোযোগ দেওয়া হয় পায়ের যত্নের দিকে আসলে সেভাবে খেয়াল করা হয় না। অথচ পায়ের ওপরেই থাকে সারা শরীরের ভর। আর পা সুন্দর রাখতে গেলে শীতে পায়ের জন্য প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন। তা না হলে পায়ের ত্বক হয়ে পড়বে রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ। সাথে দেখা দিতে পারে পা ফাটার সমস্যা। শীত আসলেই পায়ের ত্বক নিষ্প্রাণ যেন না হয়, সেজন্য ফলো করতে হবে কিছু টিপস!

শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ? 

পায়ের ত্বক ভালো রাখতে কিন্তু খুব কঠিন কিছু করার প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন অল্প কিছু সময় ব্যয় করেই আপনি আপনার পায়ের ত্বক ভালো রাখতে পারেন। চলুন জেনে নিই পায়ের যত্নের সহজ কিছু পদ্ধতি।

১. ময়েশ্চারাইজড রাখুন

শীতে আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ার কারণে বাতাসে ধুলো ময়লার পরিমাণ বেশি থাকে। তাই প্রতিদিন বাইরে থেকে ফেরার পর অবশ্যই পা দুটো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর হালকা ভেজা থাকা অবস্থায় পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন, ক্রিম বা বডি অয়েল ব্যবহার করুন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য। প্রতিদিন গোসলের পরেও পায়ে ভেজা ভাব থাকা অবস্থাতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

২. রাতেও চাই বিশেষ যত্ন

রাতের বেলা পায়ের ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন ভালোভাবে লাগিয়ে তারপর সুতির মোজা পরে থাকতে পারেন। এতে পায়ের শুষ্কতা ও পা ফাটার সমস্যাও দূর হবে।

৩. অয়েল ম্যাসাজ করুন

পায়ের শুষ্কতার সমস্যা থেকে বাঁচতে পায়ে তেল ম্যাসাজ করা বেশ উপকারী। এক্ষেত্রে অলিভ অয়েল, তিলের তেল বা বাদাম তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ম্যাসাজের আগে তেল হালকা গরম করে নিতে পারেন। এতে যেমন ক্লান্তি দূর হয়ে পায়ের আরাম হবে, তেমন নিয়মিত অয়েল ম্যাসাজের কারণে পায়ের ত্বকও ভালো থাকবে। কারণ এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।

৪. ট্রাই করুন DIY টোটকা

পায়ের ত্বক খুব বেশি রুক্ষ হলে গোলাপজল ও গ্লিসারিনের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। এতে কয়েক ফোঁটা আর্গান অয়েল যোগ করে নিন। এতে শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে যাবে না! বরং পায়ের ত্বক হবে কোমল ও মসৃণ।

৫. নিজেই করে নিন পেডিকিওর

সপ্তাহে একদিন পায়ের যত্নে একটু বাড়তি সময় ব্যয় করুন। কুসুম গরম পানিতে অল্প লবণ, এক চা চামচ বডি অয়েল বা অলিভ অয়েল, এক চা চামচ শ্যাম্পু বা শাওয়ার জেল মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর একটি পিউমিস স্টোন বা ঝামা পাথর দিয়ে পায়ের গোড়ালি ঘষে নিন, ভেজা গোড়ালি থেকে সহজেই পায়ের মৃত কোষ দূর হয়ে গোড়ালি মসৃণ হয়ে উঠবে। পায়ের ত্বকে কোনও স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। এরপর লাগিয়ে নিন কোনও ঘরোয়া প্যাক। যেমনঃ টমেটো ও মধুর প্যাক। এটি রোদে পোড়া ভাব দূর করে এবং ত্বককে করে তোলে কোমল ও মসৃণ। সবশেষে পা ভালোভাবে মুছে পায়ে লোশন বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

৬. জুতোর দিকেও খেয়াল রাখুন

পায়ের ত্বক সুন্দর রাখতে এবং পা ফাটা প্রতিরোধ করতে ঘরেও নরম জুতো বা স্যান্ডেল পরে থাকার অভ্যাস করুন। পাশাপাশি প্রতিদিনের ব্যবহারে ভালো মানের জুতো ব্যবহার করুন। ভালো মানের জুতো বা স্যান্ডেল পায়ের অনেক সমস্যা কমিয়ে দেয়।

৭. লোশন নির্বাচনে উপাদান দেখে নিন

শীতের সময় যতবার পায়ে পানি ব্যবহার করবেন ততবারই পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে শুষ্কতা অনেকটাই কমে যাবে। শীতকালে এমন ময়েশ্চারাইজার পায়ের ত্বকের জন্য বেছে নিন যাতে অয়েলের পরিমাণ বেশি থাকে। শিয়া বাটার, আর্গান অয়েল বা ভিটামিন ই আছে এমন লোশন আপনার জন্য বেস্ট অপশন হতে পারে।

৮. পায়ের ত্বকের সান প্রোটেকশন জরুরি

পায়ের ত্বক শীতে আরো সুরক্ষিত রাখতে বাইরে গেলে পা ঢাকা জুতা পরতে পারেন। পা দুটোকে যতো বেশি শীত ও ধুলোবালি থেকে রক্ষা করা যাবে পা ততোই ভালো থাকবে। দিনের বেলায় খোলা স্যান্ডেল ব্যবহার করলে পায়ের ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না।

শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে যাওয়ার সমস্যা যারা ফেইস করেন, তারা আজ সল্যুশন পেয়ে গেলেন! ছোট ছোট এই কৌশলগুলো নিয়মিত মেনে চললে শীতে জুড়ে আপনার পায়ের ত্বক নিয়ে আপনাকে কোনও চিন্তাই করতে হবে না। ঘরোয়া যত্নের পাশাপাশি আরামদায়ক জুতোর ব্যবহার, পায়ের ত্বক নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার পা থাকবে কোমল ও মসৃণ। সাথে পা ফাটার সমস্যাও আর থাকবে না। আশা করি আজকের ফিচারটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিল। আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

ছবি- সাটারস্টক

The post শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ দেখায়? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/VWAhGNn
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...