Skip to main content

রাতের যে ৮টি অভ্যাস আপনার ঘুম নষ্ট করে!

রাত হলেই ঘুম উধাও? ভালো ঘুম সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। রাতের ভালো ঘুম প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি করে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, কাজে মনোযোগ বাড়ায়। সাধারণত পূর্ণবয়স্ক মানুষের কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর প্রয়োজন। দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। রাতে ঘুম না আসা বা আসলেও বারবার ভেঙে যাওয়াকে বলা হয় ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ। যার ফলে দিনের বেলা ঘুমানো, সারাদিন ঝিমুনি ভাব, কাজে মনোযোগ না দিতে পারা, সারাদিন মেজাজ খিটখিটে ও বিষণ্ণ হয়ে থাকার মত ঘটনা ঘটে থাকে। পরের দিনের কাজের শক্তি, আগ্রহ অনেকখানি নির্ভর করে রাতের ঘুমের উপর। রাতের যে অভ্যাসগুলো ঘুমের রুটিন নষ্ট করে, তা আমরা ক’জন জানি?

একটি কর্মব্যস্ত দিন কাটানোর পর রাতে বিছানায় যাওয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু আধুনিক সময়ে রাতের ঘুম যেন সোনার হরিণ! হাজার চেষ্টা করার পরও ঘুম আসতে চায় না। আপনি কি জানেন এই ঘুম না আসার জন্য আপনি নিজে দায়ী? আপনার কিছু অভ্যাসের কারণে আপনি অনিদ্রা সমস্যায় ভুগছেন।

আজকের ফিচারটি এমন সব অভ্যাস নিয়ে কথা বলব যা আপনার রাতের ঘুম নষ্ট করছে।

রাতের যে অভ্যাস আপনার ঘুম নষ্ট করে 

১) ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভারি খাবার খাওয়া

রাতের খাবার ঘুমাতে যাওয়ার ২/৩ ঘন্টা আগে খাওয়া উচিত। সাধারণত বিশেষজ্ঞরা রাতের খাবার রাত ৮টার মধ্যে শেষ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে হেভি মিল নিলে অ্যাসিডিটি, গ্যাস্ট্রোসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স, বুকে ব্যথা, পেটে ব্যথা হতে পারে। এটি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। শরীরে চর্বি জমতে সাহায্য করে। তাই ঘুমাতের যাওয়ার আগে অতিরিক্ত ক্যালোরির শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

২) অ্যালকোহল অথবা ক্যাফিনেটেড পানি পান করা

ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেকেই আছেন চা বা কফি পান করতে পছন্দ করেন। এটি হলো আরেকটি বদ অভ্যাস যা আপনার রাতের ঘুমকে হারাম করে। এমনকি অ্যালকোহল পান করা উচিত না। অ্যালকোহল আপনাকে ঘুম ঘুম ভাব দিবে কিন্তু প্রোপারলি ঘুমাতে সাহায্য করবে না। ক্যাফিনেটেড পানীয় সাধারণত ঘুমাতে যাওয়ার ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পূর্বে পান করা উচিত। নিকোটিনও আপনার ঘুম নষ্ট করতে পারে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন।

৩) বিছানায় কাজ করা

অনেকেই ঘুমাতে যাওয়ার আগে ল্যাপটপে পরের দিনের কাজ গুছিয়ে রাখেন কিংবা অফিসের অসমাপ্ত কাজ শেষ করেন। ল্যাপটপের আলো আপনার মস্তিষ্ককে মেলাটোনিন নিঃসরণ করতে বাধা দেয় এবং মস্তিষ্ককে সংকেত দেয় যে এখনো ঘুমানোর অনেক সময় বাকি রয়েছে, আপনি জেগে থাকুন। এই প্রক্রিয়া আপনার ঘুমের রুটিনকে বাধাগ্রস্ত করে।

৪) ফোন ব্যবহার করা

সবার হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। বিছানায় শুয়ে সবার আগে আমরা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে থাকি। এ সব ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন হরমোনের (ঘুমের হরমোন) নিঃসরণ বাধা দেয় যা স্লিপ সাইকেলে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে। তাই ঘুমানোর সময় যাবতীয় ডিভাইস দূরে রাখুন।

৫) ছুটির দিনে অতিরিক্ত ঘুমানো

যদি আপনার ছুটির দিনের ঘুমানোর শিডিউল আর ওয়ার্কিং ডে তে ঘুমানোর শিডিউলের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য থাকে তাহলে আপনি সোস্যাল জেট লেগ এর সম্মুখীন হবেন। এই দুই সময়ের পার্থক্য আপনার ঘুমের সার্কেলে ব্যাঘাত ঘটাবে। যা পরবর্তীতে ইনসমনিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, অথচ আমরা বুঝতেও পারি না। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার ও ওঠার একটি নির্দিষ্ট সময় মেনে চলুন।

৬) অতিরিক্ত গরম বা শব্দময় স্থানে ঘুমানো

অতিরিক্ত গরম কিংবা ঠান্ডা স্থান ঘুমানোর জন্য উপযোগী নয়। আবার শব্দময় স্থানও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। শোবার ঘরটি শব্দমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। পরিবেশ অনেক বড় একটি বিষয়। আরামদায়ক বিছানা আর পরিবেশ আপনাকে কোয়ালিটিফুল ঘুম দিবে।

৭) কঠোর ব্যায়াম করা

নিয়মিত ব্যায়াম করা শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু ঘুমাতে যাওয়ার আগে কঠোর ব্যায়াম করা একদম উচিত নয়। ঘুমানোর আগে এই ধরনের ব্যায়াম ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারণ হতে পারে। এটি আপনার হার্ট রেট, ব্লাড প্রেশার আর শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।

৮) অযথা বিছানায় শুয়ে থাকা

ঘুম না আসলে আমরা মনে করি যে বিছানায় শুয়ে থাকলে ঘুম চলে আসবে! ডিনার করেই সাথে সাথে বেডে বিশ্রাম নিতে চলে যায়। তবে, বিছানায় শুয়ে বার বার এপাশ ওপাশ ফিরলে নানা চিন্তা এসে মাথায় উঁকি দিবে। তাই এই কাজটি করা উচিত নয়। ঘুম না আসলে রিল্যাক্সিং কাজ করুন যেমন বই পড়ুন। তাও যদি ঘুম না আসে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন। তবে ভুলেও মোবাইল ফোন হাতে নিবেন না।

ভালো ঘুম কিন্তু সুন্দর একটি দিনের সূচনা করে। এটি আমাদের সবার জন্য অনেক বেশি জরুরি। নিজেদের অসচেতনতায় আমরা এই ঘুমের রুটিন নষ্ট করে থাকি। রাতের যে অভ্যাস আমাদের বদলানো উচিত, সেগুলো তো জানা হলো। একটু নিয়মানুবর্তিতা আর সচেতনতা আপনাকে এনে দিবে শান্তির ঘুম।

ছবি- সাটারস্টক

The post রাতের যে ৮টি অভ্যাস আপনার ঘুম নষ্ট করে! appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/o20aRk3
Munia

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina

হেভি ব্রেস্ট এর জন্য পিওর কটন ফেব্রিকের কমফোর্টেবল ব্রা খুঁজছেন?

বডি শেইপ ও বয়স অনুযায়ী ইনার ওয়্যারে যে ভ্যারিয়েশন আসে, সেটা আমরা অনেকেই জানি না! টিনেজে ডেভেলপিং ব্রেস্ট এর জন্য এক ধরনের ব্রা, বয়স্ক নারীদের জন্য এক ধরনের ব্রা, নতুন মায়েদের জন্য আরেক ধরনের ব্রা। শারীরিক গঠন বা ব্রেস্ট শেইপ অনুযায়ী ইনার ওয়্যার সিলেকশন খুবই জরুরি! মধ্যবয়সী বা বয়স্ক নারীদের জন্য স্যুইটেবল লঞ্জেরির রিভিউ জানাবো আজকের ফিচারে। হেভি ব্রেস্ট এর জন্য পিওর কটন ফেব্রিকের কমফোর্টেবল ব্রা যারা খুঁজছেন, তাদের জন্য রিভিউটি হেল্পফুল হবে আশা করি। হেভি ব্রেস্ট এর জন্য কেমন ব্রা বেছে নিতে হবে? ব্রেস্টকে প্রোপারলি সাপোর্ট দেয়, এনাফ কভারেজ পাওয়া যায় এবং প্রশস্ত ব্যান্ড থাকে, এমন ব্রা আপনাকে চুজ করতে হবে। বয়সের সাথে সাথে শারীরিক গঠনেও বেশ পরিবর্তন আসে। বাল্কি ফিগার বা কার্ভি বডির জন্য পারফেক্ট ব্রা সিলেক্ট করাটা একটু ডিফিকাল্ট মনে হয়। চিন্তা নেই, আজ এমনই একটি ব্রা সম্পর্কে জানাবো। মধ্যবয়সী ও বয়স্ক নারীদের জন্য স্যুইটেবল ব্রা আমাদের বাসায় মা, দাদি বা বয়স্ক নারী সদস্য যারা আছেন, তাদের কমফোর্টের বিষয় নিয়ে আমরা কখনো ভেবেছি কি? আরামের বিষয়টিকেই এই বয়সে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। এই বয়সে হে

রিবন্ডিং নাকি কেরাটিন ট্রিটমেন্ট, কোনটি আপনার জন্য পারফেক্ট?

কোনো অকেশন বা ইভেন্টে যাওয়ার জন্য নিজের পছন্দের আউটফিট পরে, সুন্দরভাবে সেজেগুজে যদি দেখতে পান, চুল একদম ফ্রিজি হয়ে আছে, চুলে কোনো শাইন নেই, সিল্কি ভাবও নেই তখন মনটাই খারাপ হয়ে যায়, তাইনা? সত্যি বলতে চুল রাফ ও আনম্যানেজেবল হয়ে থাকলে স্টাইলিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ স্ট্রাগল করতে হয়। দেখা যায়, চুল ছেড়েও রাখা যায় না, আবার শখ করে কোনো হেয়ারস্টাইল করলেও দেখতে ভালো লাগেনা। রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই সিল্কি, স্ট্রেইট এবং হেলদি লুকিং চুল পাওয়া পসিবল। তবে অনেকেই এই দু’টো ট্রিটমেন্টের পার্থক্য বুঝতে পারেন না, যার ফলে ডিসিশন নিতে পারেন না যে কোনটি তাদের চুলের জন্য বেশি স্যুইটেবল হবে। আপনাদের সব কনফিউশন ক্লিয়ার করতে আজকের ফিচারে থাকছে রিবন্ডিং নাকি কেরাটিন কোন ট্রিটমেন্টটি আপনার জন্য ভালো হবে তা নিয়ে বিস্তারিত। রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কি সেইম অনেকেই মনে করেন, রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে যেহেতু স্ট্রেইট, স্মুথ ও ম্যানেজেবল হেয়ার পাওয়া যায়, তাই এগুলোর মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। এটি একটি বড় মিসকনসেপশন। এই দু’টো ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে একই রকম আউটপুট আসে ঠিকই, কিন্তু