Skip to main content

চুলের যত্নে এই ১০ টি ভুল আপনিও করছেন না তো?

সুন্দর আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল আমরা প্রত্যেকেই চাই। চুলের পরিচর্যা কিভাবে করতে হবে সে বিষয়ে আমাদের সবারই ভীষণ আগ্রহ। তবে চুলের যত্ন করতে গিয়ে কোনো ভুল হলো কিনা, সে বিষয়ে আমাদের কয়জনেরই বা ধারণা আছে? আসলে চুলের যত্নে আমরা নিজের অজান্তেই কিছু ভুল করে ফেলি, যা দিনশেষে চুলের আরো ক্ষতি করে। আসুন আজ জেনে নিই, কী সেই ভুলগুলো যা আমাদের চুলের ক্ষতি করছে প্রতিদিন।

১. প্রতিদিন হেয়ার অয়েল ব্যবহার করা

আগেকার দিনে আমাদের মা-খালারা প্রতিদিন নিয়ম করে চুলে তেল দিতেন। তাদের ধারণাই ছিলো, রোজ তেল ব্যবহার করলেই চুল থাকবে ঘন, কালো ও লম্বা! তবে হেয়ার এক্সপার্টদের মতে, রোজ রোজ চুলে তেল লাগানোর প্রয়োজন নেই। কারণ প্রতিদিন চুলে তেল ব্যবহার করলে মাথার ত্বক অতিরিক্ত অয়েলি হয়ে যায়। যা আমাদের চুলের জন্য মোটেই ভালো না। তাই প্রতিদিন তেল না দিলেও চলবে। চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখার জন্য সপ্তাহে এক দিন চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে তেল লাগাতেই হবে! তবে চুল যদি শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে দুইদিন পরপর তেল ম্যাসাজ করা ভালো।

সঠিকভাবে হেয়ার ওয়াশ করছেন তো?

২. সঠিক হেয়ার ওয়াশ রুটিন মেনটেইন না করা

অনেকেই আছেন প্রতিদিনই চুল শ্যাম্পু করেন। আবার অনেকে হয়তো সপ্তাহে এক দুইবার চুল পরিষ্কার করছেন। আপনার চুলের জন্য কোন হেয়ার ওয়াশ রুটিন সঠিক তা নির্ভর করবে আপনার মাথার ত্বক ও চুলের ধরনের উপর। আপনার মাথার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়ে থাকে, তাহলে ফ্রিকোয়েন্টলি হেয়ার ওয়াশ করা প্রয়োজন। কিন্তু যদি আপনার এই সমস্যা না হয়ে থাকে, তাহলে বারবার শ্যাম্পু ব্যবহারে আপনার মাথার ত্বক হতে পারে রুক্ষ। তাই নিজের স্ক্যাল্প ও চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু বেছে নিন।

৩. অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করা

চুলের জন্য সঠিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মনে রাখতে হবে, কখনোই বেশি তাপমাত্রার পানিতে হেয়ার ওয়াশ করা যাবে না। অতিরিক্ত গরম পানি মাথার ত্বকের অয়েল গ্ল্যান্ডগুলো অ্যাকটিভ করে। যার ফলে চুল পরিষ্কার করার পরও আঠালো ভাব তৈরি হয়। চুলের জন্য সবচেয়ে ভালো হলো, স্বাভাবিক তাপমাত্রার ঠান্ডা পানি। যদি গরম পানি ব্যবহার করতেই চান, তাহলে ব্যবহার করুন কুসুম গরম পানি।

৪.শ্যাম্পুর ভুল ব্যবহার

চুলের জন্য সঠিক শ্যাম্পু বাছাইয়ের পাশাপাশি সেটার সঠিক ব্যবহারের দিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। ঠিক কতটা পরিমাণ শ্যাম্পু ব্যবহার করা প্রয়োজন তা মাথায় রাখুন। চেষ্টা করুন সরাসরি শ্যাম্পু ব্যবহার না করে পানির সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে। শ্যাম্পু নিয়ে আলতোভাবে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া নরম থাকে বলে শ্যাম্পু ব্যবহারের সময় বেশি জোরে ম্যাসাজ করলে চুল পড়ে যেতে পারে।

চুলের যত্নে কন্ডিশনার ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া যাবে না

৫. চুলকে ময়েশ্চারাইজ না করা

আমাদের চুল খুব দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। তাই প্রতিবার শ্যাম্পু ব্যবহারের পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন এবং প্রতি সপ্তাহে একবার নিজের পছন্দের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে চুলের ধরন অনুযায়ী ঘরেই তৈরি করতে পারেন প্রাকৃতিক উপাদানের ময়েশ্চারাইজার। সমপরিমাণ পানি ও ভেজিটেবল গ্লিসারিন একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি গোসলের আগে অথবা পরে চুলে স্প্রে করুন। এতে চুল হবে সিল্কি ও সফট। চাইলে মিশ্রণটি কিন্তু শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন!

৬. সঠিকভাবে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করা

চুল সবসময় সাধারণভাবেই শুকিয়ে নেওয়া ভালো। তবে ব্যস্ততার কারণে অনেক সময়ই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে চুল শুকাতে। তবে অনেকেই জানেন না যে অতিরিক্ত ভেজা চুলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলে ড্রায়ারের হিট চুলকে ড্যামেজ করে দিতে পারে। তাই এক্ষেত্রে তাপমাত্রা কমিয়ে নিন এবং সেই সাথে একটি ভালো হিট প্রোটেক্টিং স্প্রে বা জেল ব্যবহার করুন। হেয়ার ড্রায়ার কখনোই মাথার তালুতে ব্যবহার করবেন না। সবসময় কিছুটা দূর থেকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চুল শুকান।

৭. মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার না করা

চুলের যত্নে ভালো চিরুনি বাছাইয়ের সাথে সাথে চুল সঠিকভাবে আঁচড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ। চুল জোরে ও বার বার আঁচড়ানো মোটেই ঠিক নয়। জট ছাড়াতে বা ভেজা চুলে মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করা উচিত সবসময়। এতে করে চুল কম ভাঙ্গে এবং সহজে গোছানো যায়। অন্যদিকে চিকন দাঁতের চিরুনি চুলকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।

৮. চুল খুলে ঘুমানো

চুল খুলে ঘুমিয়ে যাওয়ার অভ্যাস কিন্তু অনেকেরই থাকে। এই অভ্যাসটি আমাদের চুলের জন্য মোটেই ভালো নয়। চুল খুলে ঘুমালে চুলে জট বেঁধে যায় এবং চুলের ক্ষতি হয়। তাই যাদের চুল বড় তাদের সবসময় চুল বেঁধে ঘুমানো উচিৎ। আবার যাদের চুল ছোট তারা মাথায় একটি কাপড় পেঁচিয়ে নিতে পারেন ঘুমানোর সময়।চুলের যত্নে যে অভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে

৯. ভেজা চুলে ঘুমানো

অনেকেরই চুল ভেজা অবস্থাতে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাসটি চুলের মারাত্মক ক্ষতি করে! চুল ভেজা অবস্থায় শুয়ে পড়লে চুল ভালো করে শুকাতে পারে না। যার ফলে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও চুল পড়ে যাওয়ার প্রধান একটি কারণ হলো, চুল সঠিকভাবে না শুকানো। তাই যদি চুলের ক্ষতি এড়াতে চান, তাহলে চুল সঠিকভাবে শুকনো হওয়ার পরই তা বাঁধা উচিত এবং ঘুমানো উচিত।

১০. ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভাস

আমাদের যা খাই তা আমাদের ত্বক ও চুলের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। কিছু কিছু খাবার যেমন আমাদের চুল সুন্দর ও উজ্জ্বল করে, ঠিক তেমনি কিছু খাবার আবার চুলের জন্য হতে পারে ক্ষতিকর! যেমন অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার ইনফ্ল্যামেশন সৃষ্টি করে এবং চুলের ফলিকলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই অবশ্যই খাবার তালিকায় কী রাখা হচ্ছে তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এই ছিলো চুলের যত্নে করা কিছু সাধারণ ভুল নিয়ে যা আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত। পরিশেষে বলতে চাই, চুলের যত্নে শুধুমাত্র সঠিক প্রোডাক্ট বাছাই করার কোনো বিকল্প নেই। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।

লিখেছেনঃ নূরী শাহারীন

ছবিঃ সাটারস্টক

The post চুলের যত্নে এই ১০ টি ভুল আপনিও করছেন না তো? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/UADsVQp
Sumaiya Rahman

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...