Skip to main content

কম পরিচর্যায় ও স্বল্প আলোতে ভালো থাকে এমন ৭টি ইনডোর প্ল্যান্ট

বাড়ি বা অফিস সাজাতে গাছের ব্যবহার বেশ প্রচলিত। এই যান্ত্রিক জীবনে একটু সবুজের ছোঁয়া পেতে কার না মন চায়! সবুজঘেরা এক টুকরো অরণ্য দেখতে বেশ ভালো লাগে, হুট করে যেন মনে প্রশান্তি নিয়ে আসে, তাই না? কিন্তু ইট-পাথরের এই শহরে সবুজের দেখা মেলা ভার। শহরের বাড়িগুলো যেন ছোট ছোট খাঁচা! একটু শখ করে বাগান করবেন সেই সুযোগও হয়ে উঠে না। অনেকে বারান্দায় নিজের শখ পূরণের জন্য ছোট করে বাগান করে থাকেন। বারান্দা ছোট হওয়ার কারণে আবার অনেকে বারান্দায়ও বাগান করতে পারেন না। তারা চাইলে ঘরের অন্যান্য জায়গাতেও কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট লাগাতে পারেন। কম পরিচর্যায় ও স্বল্প আলোতে ভালো থাকে, এমন ইনডোর প্ল্যান্টের সন্ধান পেলে কেমন হয়, বলুন তো? অর্থাৎ যে গাছগুলো হেলাফেলাতেও বেড়ে ওঠে, আবার ঘরের শোভাও বাড়ায় আর কোনোটার ভেষজ গুণাগুণ আছে। এতক্ষণে নিশ্চয়ই ধরতে পেরেছেন, ইনডোর প্ল্যান্ট এর গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের ফিচার।

কম পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা ইনডোর প্ল্যান্ট

আজকাল গৃহসজ্জায় নতুন মাত্রা যোগ করতে অনেকেই বেডরুম, ড্রয়িং রুমে গাছ রাখেন। এমন অনেক ইনডোর প্ল্যান্ট আছে, যা কম পরিচর্যায়, কড়া রোদ না পেলেও বেশ ভালো থাকে। আবার এই গাছগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে, বাতাস পরিশুদ্ধ করবে। চলুন তাহলে জেনে নেই ৭টি ইনডোর প্ল্যান্ট নিয়ে।

১) স্পাইডার প্ল্যান্ট

সবুজ আর সাদা বর্ডারসহ একদম সরু পাতাবাহার গাছ অনেকের ঘরেই দেখা যায়। এই গাছটির নাম স্পাইডার প্ল্যান্ট। এই গাছের জন্য যত্নআত্তি কিংবা একটানা রোদের প্রয়োজন নেই। ঘরের এককোণে চুপি চুপি বেড়ে উঠবে স্পাইডার প্ল্যান্ট। চাইলে বারান্দা বাগানে ঝুলিয়েও রাখতে পারেন। এই গাছ ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। নাসার এক গবেষণায় বেশ কিছু গাছের পাতা, মাটি, মূল পরীক্ষা করে দেখেছেন যে বেশ কিছু গাছ ফিল্টার হিসাবে কাজ করে বায়ু দূষণ রোধ করে। এই গাছের তালিকায় স্পাইডার প্ল্যান্ট রয়েছে। এটি বাতাসে থাকা বিষাক্ত ফর্মালডিহাইড সরিয়ে ফেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে। স্পাইডার প্ল্যান্ট ধারের কাছে সব নার্সারিতে পেয়ে যাবেন, আবার দামটাও আপনার হাতের নাগালে।

২) পিস লিলি

পিস লিলি

পিস লিলি নামটার মধ্যেই কিন্তু শান্তি শান্তি ভাব রয়েছে। এর ফুল দেখতেও অনেক সুন্দর। ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি বাতাসের কার্বন ড্রাই অক্সাইড ও Volatile organic compounds (VOCs) দূর করে থাকে। অর্থাৎ পিস লিলি বায়ু পরিষ্কার করতে ভূমিকা রাখে। তাই, আমাদের শরীরের জন্যও উপকারী। এটি অনেক বছর বেঁচে থাকে। পিস লিলির জন্য অনেক বেশি আলোর প্রয়োজন নেই, খুব বেশি যত্নআত্তিরও দরকার হয় না। দেখতেও এলিগেন্ট, তাই ড্রয়িং রুমে রাখা যেতে পারে অনায়াসে।

৩) রাবার প্ল্যান্ট

রাবার প্ল্যান্ট

বেশ রাজকীয় ভাব আছে এই ইনডোর প্ল্যান্টের, তাই না? রাবার প্ল্যান্ট ফিকাস ইলস্টিকা নামে পরিচিত। খুব বেশি সময় নিয়ে যত্নের দরকার হয় না, সপ্তাহে একবার পানি দিলেই হয়। এতেও এয়ার পিউরিফাই করার উপাদান রয়েছে, যা ঘরের বায়ুকে দূষণ মুক্ত রাখে। তবে ঘরের পোষা প্রাণী ও বাচ্চাদের কাছ থেকে দূরে রাখবেন। এই গাছের পাতা বেশ বিষাক্ত, তাই মুখে গেলে ক্ষতি হতে পারে। অফিস ডেকোরেশনের জন্য এটি ব্যবহার করা যায় সহজেই।

৪) স্নেইক প্ল্যান্ট

স্নেইক প্ল্যান্ট

নাম স্নেইক হলেও এই গাছ সাপের মত বিষাক্ত নয়! অনেকে বলে, যদি কেউ একটি ইনডোর প্ল্যান্ট কিনেন তাহলে সেই একটি গাছ যেন স্নেইক প্ল্যান্ট হয়। খুব অল্প যত্নে এই গাছটি আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিবে অনেকখানি। আর এই গাছটিও কিন্তু বাতাস পরিশুদ্ধ করবে। মাটি একেবারে শুষ্ক হয়ে গেলে পানি দিবেন। মনে রাখবেন, পানি কম দিলে এই গাছের তেমন সমস্যা হবে না, তবে বেশি দিলে গাছ মারাও যেতে পারে।

৫) পোথোস

পোথোস

এই গাছটি কিন্তু আমরা সবাই চিনি। আমাদের কাছে মানিপ্ল্যান্ট নামে পরিচিত। পানি বা মাটি উভয় স্থানে এই গাছ জন্মাতে পারে, লতানো ধরনের। এটি বেশ জনপ্রিয়, ঘরে ঘরেই দেখা যায়। এই গাছের একটি পাতার সাহায্যে খুব সহজে নতুন গাছ পাওয়া সম্ভব। সাধারণ এই গাছও বাতাসে থাকা বিষাক্ত উপাদান দূর করে। বারান্দা কিংবা ডাইনিং রুমের জানালায় রাখতে পারেন পোথোস। ডেকোর আইটেম হিসেবে ওয়াল হ্যাংগিং পটেও রাখা যায়।

৬) এলিফ্যান্ট ইয়ার প্ল্যান্ট

হাতির কানের মতো গাছ! নামটি খুব অদ্ভুত কিন্তু এই গাছটিও বেশ কমন। এই গাছের পাতাগুলো অনেকটা হাতির কানের মত দেখতে হওয়ায় একে এলিফ্যান্ট ইয়ার প্ল্যান্ট বলে। আলোযুক্ত স্থানে গাছটি রাখা উচিত, গরম পরিবেশে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে এবং গাছের মাটি সবসময় নরম থাকা প্রয়োজন, যার জন্য নিয়মিত পানি দিতে হয়। আপনার লিভিং রুমে, শখের ব্যালকনিতে বা ছাদ বাগানে এই গাছ শোভা বর্ধন করবে অনেকখানি।

৭) অ্যালোভেরা

খুব পরিচিত একটি নাম ‘অ্যালোভেরা’, যার বাংলা হচ্ছে ঘৃতকুমারী। ভেষজ গুনাগুণের জন্য অনেকেই এটি চিনেন। এই গাছটি বারান্দার এক কোণে রাখলে অনেক সুবিধা পাবেন। হালকা বার্নিং হলে, পোকা কামড় দিলে অ্যালোভেরা পাতার ভেতরের জেল দারুণ কার্যকরী। অ্যালোভেরার সুদিং ও কুলিং প্রোপারটিজ আপনাকে তাৎক্ষণিক প্রশান্তি দিবে। ত্বক ও চুলের যত্নেও অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, অ্যালোভেরা গাছের তেমন যত্নের প্রয়োজন নেই। ছোট কোনো পটেও রাখতে পারেন। পানি কম দিতে হয়, কেবল মাটি শুষ্ক হয়ে গেলে পানি দিলেই হবে।

অ্যালোভেরা

গাছ শুধু যে ঘরের শোভা বৃদ্ধি করবে তা নয়,এই ব্যস্ত জীবনে আপনাকে দিবে মানসিক প্রশান্তি। গার্ডেনিং কিন্তু মেন্টাল স্ট্রেস দূর করার দারুণ একটি উপায় হতে পারে। খুব কম খরচে ও অল্প ইফোর্টে ঘর সাজানোর কাজটাও হয়ে গেলে কিন্তু। তাহলে, পছন্দের গাছ দিয়ে সাজিয়ে ফেলুন আপনার শখের বারান্দা অথবা প্রিয় ঘরটি।

ছবি- সাটারস্টক, susercontent.com, magicbricks.com, hallmarkchannel.com

The post কম পরিচর্যায় ও স্বল্প আলোতে ভালো থাকে এমন ৭টি ইনডোর প্ল্যান্ট appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/r3PVCui
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...