পারসোনাল হাইজিনের একটি অ্যাসেনশিয়াল পার্ট হলো শরীরের অবাঞ্চিত লোম রিমুভ করা। সাজগোজের কমেন্ট সেকশন ও ইনবক্সে আমরা অনেক সময়ই প্রশ্ন পেয়ে থাকি, ‘বডি হেয়ার রিমুভ করার জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে সেইফ?’ বিশেষ করে টিনেজারদের এই রিলেটেড অনেক ধরনের কনফিউশন থাকে। বডি হেয়ার রিমুভালের জন্য সবচেয়ে পরিচিত প্রসেসগুলো হচ্ছে- শেভিং, ওয়্যাক্সিং ও হেয়ার রিমুভাল ক্রিমের ব্যবহার।
অনেকেই এগুলোর সুবিধা-অসুবিধা না জানার কারণে বুঝতে পারেন না যে কোনটি তার জন্য পারফেক্ট অপশন হবে। চলুন আজ এই বিষয়ে কিছু ইনফরমেশন আমরা জেনে নিবো।
১) ওয়্যাক্সিং
ওয়্যাক্সিং দু’ভাবে করা যায়। এই পদ্ধতিতে হট ওয়্যাক্স কিংবা কোল্ড ওয়্যাক্স স্ট্রিপ এর সাহায্যে হেয়ার ফলিকল বা রুট থেকে আনওয়ান্টেড হেয়ার রিমুভ করা হয়। এই প্রসেসের সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে, একবার ওয়্যাক্সিং করলেই পুরো মাস নিশ্চিন্তে থাকা যায় অর্থাৎ বার বার হেয়ার রিমুভ করার প্রয়োজন হয় না। এই কারণে অনেকে এই পদ্ধতিটি প্রিফার করেন।
ওয়্যাক্সিং এর দিন স্কিন প্রোপারলি ময়েশ্চারাইজড করতে ভুলবেন না! স্কিন ভালোমতো হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড থাকলে ওয়্যাক্সিং প্রসেস ইজি হয়ে যাবে আর পেইন কম হবে। ওয়্যাক্সিং এর পরে হাতে-পায়ে আইস কিউব রাব করতে পারেন কয়েক সেকেন্ড এর জন্য, এতে স্কিনে সুদিং ফিল পাওয়া যায়। হট ওয়্যাক্সিং এর সুবিধার সাথে সাথে কিছু অসুবিধাও আছে, কিন্তু পারসোন টু পারসোন এক্সপেরিয়েন্স আলাদা হতে পারে।
- সেনসিটিভ স্কিন হলে ওয়্যাক্সিংয়ের পর ইরিটেশন, রেডনেস হতে পারে
- হট ওয়্যাক্সিংয়ে তুলনামূলক বেশি সময় লাগে
- কিছুটা ব্যথা লাগে
হট ওয়্যাক্স এর বিকল্পে আপনারা জেল বেইজড কোল্ড ওয়্যাক্স স্ট্রিপ ব্যবহার করতে পারেন। হাত, পা, আন্ডারআর্মস ও বিকিনি লাইনে ব্যবহার করা যায় কোল্ড ওয়্যাক্স স্ট্রিপ। তবে ফেইস, প্রাইভেট পার্টের জন্য স্যুইটেবল না। প্রোডাক্ট প্যাকেজিংয়ে ব্যবহারবিধি ও সতর্কতা কিন্তু উল্লেখ করাই থাকে। তাই, লেবেল ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে ব্যবহারের আগেই। যদি আপনার স্কিনে কোনো ডিজঅর্ডার না থাকে এবং সঠিক গাইডলাইন ফলো করতে পারেন, তাহলে কোল্ড ওয়্যাক্স স্ট্রিপ আপনার জন্য পারফেক্ট সল্যুশন হতে পারে।
২) শরীরের অবাঞ্চিত লোম রিমুভে শেভিং
এটি বেশ পপুলার প্রসেস। রেজর বা এপিলেটরের সাহায্যে শুধুমাত্র স্কিনের সারফেস থেকে আনওয়ান্টেড হেয়ার কেটে ফেলা হয়। শেভিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে- বডি হেয়ার চটজলদি রিমুভ করা যায়, খরচও তুলনামূলক কম। তবে ঠিকভাবে ব্যবহার না করা হলে রেজর কাট ও বাম্পস হতে পারে, অনেকক্ষেত্রে ইরিটেশনও হতে পারে। রেজর ব্লেড এর শার্পনেস না থাকলে স্মুথলি শেভিং করা যায় না, তাই এদিকে লক্ষ্য রাখুন। রেজর ব্যবহার করার আগে ও পরে ব্লেড ভালোভাবে ক্লিন করে নেওয়াও জরুরি।
শেভিং নিয়ে এখনও কিছু মিসকনসেপশন আছে। ‘শেভিং কি হেয়ার গ্রোথ বাড়িয়ে দেয় অথবা পরবর্তীতে লোম পুরু হয়ে ওঠে?’ এই কনফিউশনটা কি আপনারও আছে? চলুন জেনে নেই আজ।
আসলে আমাদের হেয়ার গ্রোথ হেয়ার ফলিকল থেকে হয়ে থাকে। হেয়ার ফলিকল স্কিনের ডার্মিস লেয়ারে অবস্থিত। শেভিংয়ের সময় রেজর কিন্তু হেয়ার ফলিকলে টাচ করে না। শুধু স্কিনের বাইরে হেয়ারের যে অংশটুকু থাকে, সেটি কাটা হয়। তাই হেয়ার গ্রোথ বাড়া বা কমে যাওয়ার সাথে শেভিংয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। একইভাবে, শেভিং এর কারণে লোম পুরু হয়ে ওঠার কোনো সুযোগ নেই। জেনেটিক্যালি আপনার হেয়ারের থিকনেস যেমন, সেটিই থাকবে। আশা করি, আপনাদের কনফিউশন এবার ক্লিয়ার করতে পেরেছি।
৩) হেয়ার রিমুভাল ক্রিম
শরীরের অবাঞ্চিত লোম রিমুভ করার জন্য আরেকটি কার্যকরী উপায় হচ্ছে হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ব্যবহার করা। হুটহাট কোনো আউটিং এর প্ল্যান হলে বা পার্টির আগে খুব সহজেই কিন্তু ঘরে বসে আপনি এই কাজটি করে নিতে পারবেন। এটি একদম হ্যাসেল ফ্রি প্রসেস। অল্প সময়ে স্মুথলি সব বডি হেয়ার রিমুভ হয়ে যায়, তাই সাধারণত আমি হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ব্যবহার করাটাই প্রিফার করি। রিসেন্টলি ট্রাই করলাম Veet Pure Hair Removal Cream। ‘ভিট’ এখন ‘ভিট পিওর’। খুব সংক্ষেপে এই প্রোডাক্টটির রিভিউ একটু শেয়ার করে ফেলি। যারা বডি হেয়ার রিমুভালের জন্য ইজি সল্যুশন খুঁজছেন, তাদের জন্য বেশ সুবিধা হবে আশা করি।
ভিট ব্র্যান্ডটি খুবই পপুলার, নতুন করে এই ব্র্যান্ড নিয়ে কিছু বলা নেই। নতুন Veet Pure Hair Removal Cream এখন পাওয়া যাচ্ছে ৩টি ভ্যারিয়েন্টে। ড্রাই স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড ক্রিমে আছে গ্রেপ সিড অয়েল, নরমাল স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড ক্রিমে আছে কিউকাম্বার বা শসা এবং সেনসিটিভ স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড ক্রিমে আছে অ্যালোভেরার নির্যাস।
Veet Pure কেন সাজেস্ট করছি?
নতুন ফর্মুলেশনে আছে প্রাকৃতিক নির্যাস আর দারুণ সুগন্ধ। ইজি অ্যাপ্লিকেশনের জন্য হেয়ার রিমুভাল ক্রিমের সাথে একটি স্প্যাচুলা দেওয়া থাকে। ভিট পিওর হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ড্রাইনেস ছাড়াই খুব স্মুথলি মাত্র ৫ মিনিটে বডি হেয়ার ক্লিন করে দেয়। হেয়ার রিমুভালের পর স্কিন বেশ ময়েশ্চারাইজড লাগে। বিকিনি লাইন, আন্ডারআর্মস, হাতে, পায়ে ইজিলি ব্যবহার করা যায়।
এই প্রোডাক্টটি ডার্মাটোলজিক্যালি টেস্টেড, তাই ত্বকের জন্য নিরাপদ। কিন্তু আমাদের একেক জনের স্কিন টাইপ ও কনসার্ন একেক রকম। তাই, ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে। প্যাচ টেস্ট করার জন্য হাত কিংবা পায়ের স্কিনের খুব ছোট অংশে অল্প পরিমাণে ভিট পিওর হেয়ার রিমুভাল ক্রিম অ্যাপ্লাই করে আবার রিমুভ করে ফেলুন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হয়, তাহলে আপনি এটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
প্যাকেজিংয়ে ব্যবহারবিধি ও টাইমিং সম্পর্কে সব তথ্য দেওয়া আছে। ব্যবহারের আগে ভালোভাবে লেবেল পড়ে নিতে হবে এবং সেই গাইডলাইন ফলো করতে হবে। রেজর বাম্প ও কাটের ভয়ে যারা শেভিং করতে একটু ভয় পান, তাদের জন্য আমি এই প্রসেসটি সাজেস্ট করবো।
তো এই ছিলো আজকের আলোচনা। শরীরের অবাঞ্চিত লোম রিমুভ করার জন্য এই সবগুলো পদ্ধতি-ই নিরাপদ ও কার্যকরী, কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার ত্বকের ধরন, বাজেট, প্রিফারেন্স সবগুলো বিষয়কেই প্রাধান্য দিতে হবে। আসলে, আপনি কোন প্রসেসটি ফলো করবেন সেটা কিন্তু একান্তই আপনার পারসোনাল চয়েজ। আজ আমরা সব প্রসেসেরই সুবিধা-অসুবিধা জেনে নিলাম। এবার সঠিক পদ্ধতিটি বেছে নিতে আর কোনো অসুবিধা হবে না আশা করি।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক
The post শরীরের অবাঞ্চিত লোম রিমুভ করার জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে সেইফ? appeared first on Shajgoj.
from Shajgoj https://ift.tt/0v6zgck
Munia
Comments
Post a Comment