Skip to main content

চুল পড়ার সমস্যায় মিনোক্সিডিল ব্যবহার করতে চাচ্ছেন?

একরাশ ঘন সুন্দর চুল সৌন্দর্যকে যেন বাড়িয়ে দেয় বহুগুনে। সবাই চায় ঝলমলে সুন্দর ঘন চুল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি যে, অত্যাধিক চুল পড়া, নতুন চুল না গজানো ও ধীরে ধীরে টাক পড়ে যাওয়া এসব সমস্যা সৌন্দর্যকে নষ্ট করে। প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি চুল পড়া স্বাভাবিক, কিন্তু যদি এর বেশি চুল পড়তে দেখা যায় তবে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বয়সের সাথে সাথে টাক সমস্যা এছাড়াও অস্বাভাবিক হারে চুল পড়া ও চুলের গ্রোথ না হওয়ার পিছনে যে কারণগুলো প্রধানত দেখা যায় তা হচ্ছে জেনেটিক্যাল, হরমোনাল ও শরীরের কোনো ভিটামিনের অভাব। মিনোক্সিডিল যেমন টাক সমস্যার সমাধান দেয় তেমনি চুল পড়া রোধ করা এবং সেই সাথে নতুন চুল গজানো ও পাতলা চুলের সমস্যার সল্যুশন। মিনোক্সিডিলের কার্যকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ও বিভিন্ন রিসার্চ দ্বারা স্বীকৃত। চুল পড়ার সমস্যায় মিনোক্সিডিল এর ব্যবহার জানবো আজকের ফিচারে।

মিনোক্সিডিল কী?

FDA দ্বারা স্বীকৃত ও গবেষণা দ্বারা পরীক্ষিত ওষুধ মিনোক্সিডিল যা নিশ্চিত ভাবে চুল গজাতে সক্ষম। এই ওষুধটি প্রাথমিক ভাবে প্রয়োগ করা হয় চুল গজানো, বৃদ্ধি ও পুরুষ-মহিলার টাক সমস্যা সমাধানের জন্য। মিনোক্সিডিল মূলত ভাসোডিলেটর হিসেবে পরিচিত ওষুধ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। ভাসোডিলেটর হল এমন ওষুধ যা রক্তনালীগুলোকে প্রশস্ত করে ও শিথিল করে, ফলে এদের মধ্য দিয়ে রক্ত ও অন্যান্য তরল আরও সহজে প্রবাহিত হয়। এই ওষুধটি ত্বকের উপর টপিক্যাল বা বাহ্যিকভাবে প্রয়োগ করা হয়। মিনোক্সিডিল যখন মুখের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়, তখন এই ওষুধটি অ্যান্টিহাইপারটেনসিভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এমনকি এটি উচ্চ রক্তচাপযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহৃত হয়। এলোপেসিয়ার মতো রোগের চিকিৎসার জন্য এই ওষুধটি প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও পাতলা চুলের সমস্যা, অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা, টাক ইত্যাদি সমস্যার সমাধান হিসেবে মিনোক্সিডিল ব্যবহার হয়।

গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করবেন না

মিনোক্সিডিল কাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না

১. গর্ভাবস্থায় মিনোক্সিডিল ব্যবহার করা যাবে না। এটি সেফ নয়। ব্রেস্ট ফিডিং অবস্থাতেও আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

২. যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের মিনোক্সিডিল ব্যবহার এর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তারা ব্যবহার করতে পারবেন না বিষয়টি এমন নয় তবে হার্টের রোগীর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর ব্যবহার করতে হবে।

৩. আপনার যদি কিডনি, লিভার বা মস্তিষ্কের ত্বক সম্পর্কিত কোনো রোগ থাকে তাহলেও আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মিনোক্সিডিল যে পদ্ধতি তে প্রয়োগ করা যায়

মিনোক্সিডিল দুইভাবে প্রয়োগ করা যায়।

১. টপিক্যাল বা মাথার স্ক্যাল্পে ব্যবহারের মাধ্যমে।

২. ওরালি বা মুখে খাওয়ার ওষুধ হিসেবে।

তবে ওরালি গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই আগে চিকিৎসকের পরামর্শ বা প্রেসক্রিপশন নিতে হবে।

চুল পড়ার সমস্যায় মিনোক্সিডিল স্ক্যাল্পে ব্যবহারের নিয়ম

প্রথমেই জানা থাকতে হবে যে ৫% মিনোক্সিডিল চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীতই ব্যবহার করা যায় যেহেতু এর সাইড ইফেক্ট খুবই কম। এর বেশি পার্সেন্টেজ এর মিনোক্সিডিল চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। ৫% মিনোক্সিডিল খুবই কার্যকর এবং মাত্র ৪-৬ মাসের ব্যবধানেই স্ক্যাল্পে চুলের পরিমান ৪৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সক্ষম বলে বিভিন্ন গবেষণা দ্বারা স্বীকৃত।

স্ক্যাল্পে ব্যবহার করুন

ব্যবহারের পদ্ধতি যদিও প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে। মিনোক্সিডিল ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই তা ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। তবে সাধারণ কিছু নিয়ম অনুসারে মিনোক্সিডিল লিকুইড ফর্মে স্প্রে বোতলে আসে, দিনে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করতে হয় মাথার ত্বকে অর্থাৎ যেখানে টাক পড়ে যাচ্ছে বা আক্রান্ত স্থানে। প্রতিবার ব্যবহারের মাঝে কমপক্ষে ১২ ঘন্টার গ্যাপ রাখতে বলা হয় বিভিন্ন কোম্পানির মিনোক্সিডিলের প্যাকেজিং এ। এছাড়াও মিনোক্সিডিল প্রয়োগের পর কমপক্ষে ৪ ঘন্টা তা ত্বকে রাখতে হয়।

মিনোক্সিডিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু জরুরি তথ্য

১. মিনোক্সিডিলের প্যাকেজিং এর গায়ে প্রায় সময়েই ব্যবহারের পর শ্যাম্পু করার কথা উল্লেখ থাকে না। তবে মিনোক্সিডিল শুকিয়ে যাওয়ার পর পাউডার টাইপের হয়ে যায় এবং অনেকেরই মাথার ত্বক চুলকাতে পারে। তাই যাদের মাথার ত্বকে ইচিং হবে তারা ও বাকিরাও প্রয়োজন অনুযায়ী মিনোক্সিডিল ব্যবহার করার পর প্রতিদিন মাইল্ড শ্যাম্পু ও সপ্তাহে এক-দুইদিন ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।

২. মিনোক্সিডিলের ফল পেতে অন্তত ৪-৬ মাস লাগতে পারে, তাই ধৈর্য ধরে ব্যবহার করতে হবে।

৩. মিনোক্সিডিল দুই ধরনের হেয়ার লসের ক্ষেত্রে কাজ করে। প্রথমটি হলো Androgenic Alopecia বা বয়স জনিত হেয়ার লস ও দ্বিতীয়টি হলো Telogen Effluvium বা অসুস্থতা অথবা স্ট্রেসজনিত হেয়ার লস। তবে যদি শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা যেমন হরমোন ঘাটতি, ভিটামিন ডি এর ঘাটতি বা অভ্যন্তরীণ অন্য কোনো কিছুর ঘাটতি, এছাড়াও মাথার স্ক্যাল্পে যদি কোনো সংক্রমণ থাকে তাহলে মিনোক্সিডিল কাজ নাও করতে পারে। তাই সবার আগে হেয়ার লসের কারণ সম্পর্কে জানতে হবে।

ফেসিয়াল হেয়ার বেড়ে যেতে পারে

মিনোক্সিডিল ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো

  • মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা
  • দ্রুত হার্টবিট, শ্বাসকষ্ট
  • বুকে ব্যাথা
  • হাত পা ফুলে যাওয়া
  • ওজন বৃদ্ধি
  • শরীরের অন্য কোথাও অবাঞ্ছিত লোম
  • মাথার ত্বকে জ্বলুনি

মিনোক্সিডিল অতিমাত্রায় গ্রহণ করলে করনীয়

মিনোক্সিডিলের ডোজ খুব সাবধানে প্রয়োগ করা আবশ্যক। শুধুমাত্র ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত বা প্যাকেজিং এ উল্লেখিত ডোজ নিন। যদি অতিরিক্ত মাত্রার ডোজ নিয়েই ফেলেন তবে নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত যান।

মিনোক্সিডিল সংরক্ষণের পদ্ধতি

এটি অবশ্যই সরাসরি সূর্যালোক, অতিরিক্ত তাপ, আদ্রতা থেকে দূরে রাখতে হবে। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। বোতলের মুখ ও স্প্রে অংশ খুব ভালোভাবে বন্ধ রাখতে হবে।

মিনোক্সিডিল যে ওষুধ চলমান থাকা অবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না

গুয়ানিডিন, ডিসালফিরাম এবং মেট্রোনিডাজলের সাথে মিনোক্সিডিল সংঘর্ষ করতে পারে, তাই এই ধরনের ওষুধ চলাকালীন মিনোক্সিডিল গ্রহণে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনি যদি এমন কোনো ওষুধ গ্রহণ করেন যা রক্তচাপ বাড়াতে পারে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সতর্কতার সাথে ব্যবহার করুন

চুল পড়ার সমস্যায় মিনোক্সিডিল যারা ব্যবহার করতে চাচ্ছেন আশা করছি আজকের আর্টিকেল তাদের জন্য হেল্পফুল হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ও সতর্কতার সাথে এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। এটি ব্যবহারের পাশাপাশি চুলের সঠিক যত্ন নিতে একদম ভুলবেন না। চুলের জন্য অথেনটিক হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট এর জন্য আমার একমাত্র ভরসার জায়গা শপ.সাজগোজ.কম

লিখেছেনঃ জাফরিন জাহান, রসায়ন শিক্ষার্থী।

ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক।

The post চুল পড়ার সমস্যায় মিনোক্সিডিল ব্যবহার করতে চাচ্ছেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/o07BAEL
Apsara Hossain

Comments

Popular posts from this blog

স্ট্রেসের কারণে একনে বা প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস দেখা দিচ্ছে না তো?

আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন তখন আমি বুঝতেই পারছি আপনার হাতে টেকনোলজির সুবিধা রয়েছে। যার কারণে আপনি এখন চাইলেই যে কোনো ভিডিও দেখতে পারেন, যে কোনো তথ্য সম্পর্কে জানতে ইন্টারনেটে সার্চ করতে পারেন। জীবন আগের চেয়ে এখন অনেক সহজ। তারপরও কিন্তু আমরা সবাই কমবেশি স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাই। আর এই স্ট্রেস মানসিকভাবে আমাদের যতটা অসুস্থ করে দিচ্ছে, ঠিক ততটাই এফেক্ট ফেলছে আমাদের স্কিনের উপর। যেমন- স্ট্রেসের কারণে একনে বা প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস দেখা দিচ্ছে, সেই সাথে হচ্ছে ত্বকের নানা সমস্যা। স্ট্রেস কতভাবে স্কিনের উপর প্রভাব ফেলে এবং কীভাবে স্ট্রেস কমিয়ে আনা যায় তা নিয়েই আলোচনা করবো আজ। স্ট্রেস কেন হয়? বিভিন্নভাবে স্ট্রেস হতে পারে। যেমন- এনভায়রনমেন্টাল বা টেম্পারেচার চেঞ্জ (এক্সটার্নাল ফ্যাক্টর)। ধরুন আপনি অনেকটা সময় ঠান্ডা রুমে ছিলেন। হুট করে যখন গরম পরিবেশে চলে আসলেন তখন শরীরে একটা স্ট্রেস হয়। আবার আর্থিক অবস্থা, লেখাপড়া, পারিবারিক সমস্যা ইত্যাদির কারণে সাইকোলজিক্যাল স্ট্রেস দেখা দেয়। স্ট্রেস এমন একটি বিষয় যেটার সাথেও আমরা থাকতে পারি না, যেটা ছাড়াও আমাদের থাকা সম্ভব নয়। সময়ের সাথে সাথে আমরা বেশ আধু

কীভাবে পারফেক্টলি ক্যামেরা বন্দী করা যায় সুন্দর মুহূর্তগুলো?

একটা সময় ছিল, যখন ছবি তোলা বা কারো কাছে ক্যামেরা থাকা যেন বড়সড় ব্যাপার। স্টুডিওতে যেয়ে ছবি তুলতে হতো বা কোনো কিছুর ছবি, ভিডিও এত সহজ ছিল না। অনেকদিন অপেক্ষা করে হাতে ছবি পাওয়া যেতো এবং সেটা অ্যালবামে যত্নের সাথে সংরক্ষণ করা হতো। আর এখন ছবি তোলা অনেক সহজ। বাজারের বিভিন্ন মডেলের ক্যামেরা বা হাই মেগাপিক্সেল সম্পন্ন ফোন সবার হাতে হাতে। আমরা এখন চাইলেই আমাদের সুন্দর সময়গুলোর বা শখের কাজ কিংবা ঘুরতে যেয়ে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির ছবি, ভিডিও ক্যামেরা বন্দী করতে পারি। এখন কীভাবে পারফেক্টলি ক্যামেরা বন্দী করা যায় সুন্দর মুহূর্তগুলো তা নিয়েই টুকিটাকি টিপস শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। ক্যামেরা নিয়ে কিছু বেসিক ধারণা যেকোনো ডিভাইস ব্যবহার করার পূর্বে তার সম্পর্কে ধারণা নেওয়া জরুরী। অনেক সময় দেখা যায় একটা ডিভাইস সম্পর্কে ঠিকভাবে না জানার কারণে ছবি তুলতে গিয়ে আমরা অনেক অপশন মিস করে ফেলি। ফলস্বরূপ ছবি সুন্দর হয় না। এই জন্য ম্যানুয়ালটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। তবে ম্যানুয়াল পড়াটা অনেকের কাছে বিরক্তিকর লাগে। তাই বিভিন্ন ফিচার নিয়ে যদি বারবার প্র্যাকটিস করা যায় তাহলে ফটোগ্রাফি বিষয়টা সহজে আয়ত্তে আসে। এখন

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina