ত্বকের যত্নে আমরা নিজেদের স্কিন কেয়ার রুটিনে বিভিন্ন ইনগ্রেডিয়েন্ট অ্যাড করে থাকি। আজকাল একটি স্কিন কেয়ার রিলেটেড টার্ম সবার মাঝে বেশ হাইপড। সেটি হলো সেরামাইড। সেরামাইড স্কিনের স্ট্রাকচার এবং ব্যারিয়ার ফাংশনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই সাথে এটি আমাদের স্কিনের ময়েশ্চার লস প্রিভেন্ট এবং বাইরের ড্যামেজ ও ব্যাকটেরিয়া থেকে স্কিনকে রক্ষা করে। তবে অনেকেই এটি সম্পর্কে সেভাবে জানেন না। সেরামাইড কী এবং ত্বকের যত্নে সেরামাইড কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তা সম্পর্কে জানুন আজকের ফিচারে।
সেরামাইড আসলে কী?
সেরামাইড হচ্ছে এক ধরনের ন্যাচারাল লিপিড যা দিয়ে আমাদের স্কিনের কম্পোজিশন তৈরি হয়। আরেকটু ডিটেইলে বলতে গেলে, সেরামাইড হলো এক ধরনের ফ্যাটি মলিকিউল যা দিয়ে স্কিনের আউটার লেয়ার বা এপিডার্মিসের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ তৈরি হয়। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজির মতে, সেরামাইড আমাদের স্কিন সেলগুলোর বাইন্ডার হিসেবে হিসেবে কাজ করে। এতে করে আমাদের স্কিন ব্যারিয়ার সঠিকভাবে কাজ করতে পারে এবং যেকোনো ধরনের জার্ম বা ইরিট্যান্ট ইত্যাদি থেকে স্কিনকে দূরে রাখে।
এটি স্কিনে ন্যাচারালি তৈরি হয়, কিন্তু বয়সের সাথে সাথে এর পরিমাণ কমতে থাকে। অনেক সময় খুব ঠাণ্ডা আবহাওয়া, কম হিউমিডিটি, একজিমা ইত্যাদি ফ্যাক্টর স্কিনের ন্যাচারাল সেরামাইড কমিয়ে দেয়। ফলে স্কিন ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে, সেই সাথে ড্রাইনেস ও ইরিটেশন দেখা যায়। এখনকার স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলোতে যে সেরামাইড থাকে সেগুলো সিন্থেটিক সেরামাইড। ইয়াং এইজে স্কিন যত দ্রুত সেরামাইড তৈরি করে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে তা সম্ভব হয় না বলে সিরাম, ক্লেনজার, ময়েশ্চারাইজার এগুলোতে সিন্থেটিক সেরামাইড যোগ করা হয়।
ত্বকের যত্নে সেরামাইড ব্যবহারের উপকারিতা
১) স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে সেরামাইড ইনক্লুড করা হলে স্কিনে প্রোপার ময়েশ্চার লেভেল নিশ্চিত হয়। এতে স্কিন স্মুদ ও হেলদি দেখায়।
২) স্কিন ব্যারিয়ারকে পুনরায় স্ট্রং করে তুলতে সেরামাইডের কার্যকারিতা অনেক। স্কিনের ন্যাচারাল এজিং প্রসেসের পাশাপাশি সাবান ও এক্সফোলিয়েন্টস ব্যবহার করার কারনে স্কিনের সেরামাইড লেভেল কমে যেতে থাকে। এতে করে স্কিন ব্যারিয়ারে ড্যামেজ ক্রিয়েট হতে শুরু করে। ময়েশ্চারাইজার ও সিরামে সেরামাইড থাকলে স্কিনের লিপিড লেভেল ঠিক থাকে এবং স্কিন ব্যারিয়ারও অটুট থাকে।
৩) আর্দ্রতা বজায় রাখতে স্কিনের সেলগুলোর প্রোপার বন্ডিং খুবই জরুরী। যখনই এই সেলগুলোতে ফাটল ধরে, তখন স্কিনের ন্যাচারাল ওয়াটার লস হতে থাকে, স্কিন ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায় এবং স্কিনের আওটার লেয়ার অর্থাৎ এপিডার্মিস ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। স্কিনে পর্যাপ্ত সেরামাইড থাকলে স্কিন সেলগুলো একে অপরের সাথে প্রোপারলি বন্ডিং হতে পারে। যে কারণে ভেতরের আর্দ্রতা বাইরে যেতে পারে না।
৪) সেরামাইড সেনসিটিভ স্কিনের জন্যে দারুণ ভাবে কাজ করে। সেনসিটিভ স্কিনের আওটার ব্যারিয়ার খুব দুর্বল থাকে। যার কারণে স্কিনে ইরিটেশন, লালচে ভাব, একনে ইত্যাদি দেখা দিতে শুরু করে। স্কিন কেয়ার রুটিনে সেরামাইড অ্যাড করা হলে এ ধরনের স্কিন প্রবলেম অনেক কমে যায়।
৫) ত্বকের যত্নে সেরামাইড ব্যবহারের আরেকটি উপকারিতা হলো স্কিনের এজিং প্রবলেম সলভ করতে এটি দারুণভাবে কাজ করে। নিয়মিত এর ব্যবহারে স্কিনের ফাইন লাইনস ও রিংকেলস দূর হয়ে যায়। তাই স্কিন কেয়ার রুটিনে অ্যান্টি এজিং প্রোডাক্ট অ্যাড করতে চাইলে সেখানে সেরামাইড আছে কিনা আগেই দেখে নিন।
৬) সান এক্সপোজারের কারণে যে স্কিন ড্যামেজ হয়, যেমনঃ পিগমেন্টেশন, রেডনেস, ফাইন লাইনস এগুলো থেকে অনেকাংশে রেহাই মিলবে সেরামাইড আছে এমন ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে।
৭) স্কিনের ব্যারিয়ার যখন ড্যামেজড অবস্থায় থাকে, তখন ডিহাইড্রেশনের কারণে স্কিন ফ্লেকি দেখায় এবং হাত দিলে খসখসে মনে হয়। সেরামাইড ব্যবহারের ফলে স্কিনের লিপিড লেভেল ঠিকঠাক থাকে বলে স্কিন হয়ে ওঠে আগের চেয়ে মসৃণ ও কোমল।
সেরামাইড কীভাবে ব্যবহার করবেন?
সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য সেরামাইড দিনে দুইবার ব্যবহার করবেন। এক্ষেত্রে সেরামাইড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। তবে খেয়াল রাখবেন, আপনার স্কিন ভেজা থাকা অবস্থায় এটি ব্যবহার করতে হবে। শাওয়ার করার পর অথবা ফেইস ভালোভাবে ক্লিন করার পর ড্যাম্প স্কিনে টোনার ও সিরাম লাগিয়ে এরপর ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন। সেই সাথে দিনের বেলা অবশ্যই সানস্ক্রিন ইউজ করুন।
সব স্কিন টাইপে স্যুইটেবল?
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, “আমি কি সেরামাইড ইউজ করতে পারবো? আমার স্কিনে কি সেরামাইড স্যুট করবে?” আসলে সেরামাইড সব ধরনের স্কিনের জন্যই উপযোগী। বিশেষ করে সেনসিটিভ ও একনেপ্রন স্কিনে এটি দারুণভাবে হেল্প করে। এর পাশাপাশি আপনার যদি ড্রাই স্কিন হয়ে থাকে এবং স্কিনে প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস থাকে, তাহলে চোখ বন্ধ করে স্কিন কেয়ার রুটিনে সেরামাইড যোগ করতে পারেন। স্কিনের ড্রাইনেস কমানোর জন্য সেরামাইড রয়েছে এমন প্রোডাক্ট হতে পারে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড।
আশা করি ত্বকের যত্নে সেরামাইড কেন গুরুত্বপূর্ণ তা আপনারা বুঝতে পেরেছেন। ত্বকের সুরক্ষায় অথেনটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করার কোনো বিকল্প নেই। বেস্ট কোয়ালিটির মেকআপ, স্কিন ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টস পারচেজ করার জন্য সাজগোজ হতে পারে আপনার জন্য পারফেক্ট অপশন। তাই ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবিঃ সাজগোজ
The post ত্বকের যত্নে সেরামাইড ব্যবহারের উপকারিতা কী কী? appeared first on Shajgoj.
from Shajgoj https://ift.tt/G5dBUWZ
Sumaiya Rahman
Comments
Post a Comment