Skip to main content

শীতে স্কিন কেয়ারের যে ভুলগুলো আপনার ত্বককে করছে রুক্ষ ও প্রাণহীন

শীতের মৃদু হিমেল বাতাস সবার বেশ ভালো লাগে। আবহাওয়ার সাথে সাথে ত্বকের শুষ্কতা জানান দিচ্ছে শীতের তীব্রতা। ত্বকের সমস্যা বছর জুড়ে থাকে কিন্তু শীতের সময় একটু বেশি হয়ে থাকে। শুষ্ক, তৈলাক্ত, স্বাভাবিক কিংবা মিশ্র, ত্বক যে ধরনেরই হোক না কেন শীতের সময় সমস্যার সম্মুখীন হবেই। কারণ, এসময় ত্বকের সবচেয়ে ওপরের যে স্তর, সেই এপিডারমিসে পানির পরিমাণ কমে আসে। যার কারণে ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক, রুক্ষ ও প্রাণহীন। ত্বকের যত্ন নিতে যেয়ে কিছু কমন ভুল আছে যা আমরা কম-বেশি সবাই করে থাকি। ফলে স্কিন আরো বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। শীতে স্কিন কেয়ারের যে ভুলগুলো আপনার ত্বককে করছে রুক্ষ ও প্রাণহীন তা নিয়েই আজকের ফিচার।

শীতে স্কিন কেয়ারের ভুলগুলো

অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েট করা

এক্সফোলিয়েট ত্বকের মৃতকোষ দূর করে ত্বককে ভিতর থেকে ক্লিন করে। কিন্তু শীতকালে এটি ত্বককে আরো বেশি শুষ্ক করে তোলে। প্রতিদিন এক্সফোলিয়েট করার পরিবর্তে সপ্তাহে এক থেকে দুইবার এক্সফোলিয়েট করুন।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা

অনেকের ধারণা সানস্ক্রিন শুধু কড়া রোদে গেলে ব্যবহার করতে হয় কিংবা গ্রীষ্মকালে এটি ব্যবহার করা উচিত। শীতকালে সাধারণত কড়া রোদ থাকে না, তাই অনেকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে চান না। আর এটি একটি বড় মিসটেক। আপনি জানেন মেঘলা দিনেও ইউভি রশ্মি থাকে? যা আপনার ত্বকের ক্ষতি করে। শীত কিংবা গ্রীষ্ম দিনেরবেলা ঘরের বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা

শুষ্ক, তৈলাক্ত কিংবা মিশ্র যে ধরনের ত্বক হোক না কেন শীতকালে ময়েশ্চারাইজার সবাইকে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু অনেকে দিনে শুধু একবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। শীতের সময় এমনিতেই ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে, তারপর শুষ্ক ওয়েদার ত্বককে আরো বেশি ড্রাই করে তোলে। তাই এসময় একটু ঘন ঘন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, শিয়া বাটার, গ্লিসারিন বেইজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। মুখের সাথে সাথে সম্পূর্ণ শরীরে বডি লোশন ব্যবহার করবেন।

অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করা

শীতে গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করা খুব সাধারণ একটি ব্যাপার। কিন্তু সারাক্ষণ গরম পানি দিয়ে হাত-মুখ ধোয়া উচিত নয়। এটি ত্বক থেকে তেল শুষে নেয়। ফলে ত্বক আরো বেশি শুষ্ক হয়ে উঠে। কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন।

ঠোঁটকে ভুলে যাওয়া

মুখ, হাত-পা সবকিছুর তো যত্ন নেওয়া হলো, কিন্তু ঠোঁটের কী হবে? শীতে লিপ্স অনেক বেশি সেনসিটিভ হয়ে যায়। ময়েশ্চারাইজারের অভাবে অনেকের ঠোঁটের চারপাশ কালো হয়ে যায়। ঠোঁটের স্কিন বেশি নরম হওয়ায় খুব দ্রুত এটি ময়েশ্চার হারিয়ে ফেলে। তাই বার বার ঠোঁটে ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। এমনকি লিপস্টিকের আগে ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

লিপ্স ময়েশ্চারাইজ রাখুন

ফেইসওয়াস পরিবর্তন না করা

শীতের সময় কিছুটা সফট এবং জেন্টাল ক্লেনজার ব্যবহার করা উচিত। গরমকালের ব্যবহৃত ফেইসওয়াস শীতকালে স্কিনকে আরো বেশি ড্রাই করে তুলতে পারে। ত্বক ক্লিন করার পর যদি খুব শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যায় তবে অব্যশই ক্লেনজার পরিবর্তন করুন।

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ঘরোয়া কিছু প্যাক

অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক

অ্যালোভেরা একটি মাল্টি টাস্কিং উপাদান। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করার পাশাপাশি ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। ১ টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়া ও ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি মুখে ও ঘাড়ে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে আসলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

টক দই ফেসপ্যাক

টকদই ও হলুদের এই প্যাকটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। ২ টেবিল চামচ টকদই ও ১ চিমটি হলুদের গুঁড়া ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এই প্যাকটি মুখ, হাত ও ঘাড়ে ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।

ফেইস প্যাক ব্যবহার করুন

এগ ফেসপ্যাক

ডিমের কুসুমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড। এই ফেসপ্যাকটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করবে ন্যাচারালি। ১টি ডিমের কুসুম ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। একটি তুলোর বল দিয়ে প্যাকটি স্কিনে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে আসলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

শীতে স্কিন কেয়ারের ভুলগুলো এড়ানোর জন্য কিছুটা সচেতনতা আর বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। এই যত্নগুলো ভালোভাবে মেনটেইন করলেই স্কিন নিয়ে আর আলাদা ঝামেলা পোহাতে হবে না। চেষ্টা করুন অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করার। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।

ছবিঃ সাজগোজ।

The post শীতে স্কিন কেয়ারের যে ভুলগুলো আপনার ত্বককে করছে রুক্ষ ও প্রাণহীন appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/2PkvGoI
Apsara Hossain

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...