Skip to main content

ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে কি?

আজকাল আমরা কম বেশি সবাই স্বাস্থ্য সচেতন। একটু ওজন বেড়ে গেলেই সেই বাড়তি ওজন কমানোর জন্য আমরা ক্রমাগত চেষ্টা করে যাই। অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে ফেলার সাথে সাথে মাথার চুলও যখন পড়তে শুরু করে তখন আমরা খুব হতাশ হয়ে যাই! ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়া সমস্যা বেড়ে যাওয়ার কোথায় যেন একটা কানেকশন আছে। এই সিচুয়েশন কি আপনিও ফেইস করছেন?

হতাশ হওয়ার কিছু নেই! আপনি যখন ওয়েট লসের সাথে হেয়ার ফল বেড়ে যাওয়ার আসল কারণগুলো ভালোভাবে জানবেন ও বুঝবেন, তখন আপনি চাইলে এর প্রতিকারও সহজেই করতে পারবেন। শুধু সেই উপায়গুলো জেনে নিতে হবে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

ওজন কমানোর সাথে চুল পড়ার সম্পর্ক কী?

খুব দ্রুত ওজন কমানো বা ওয়েট লস সার্জারির ফলাফল হিসেবে শরীরে যে নিউট্রেশনের ঘাটতি হয়, হরমোনাল চেঞ্জ আসে, ওজন নিয়ে যে স্ট্রেস আমরা নেই; সেগুলোর কারণে আমাদের শরীর অনেক সময় প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই প্রতিক্রিয়ার একটি হচ্ছে চুল পড়ে যাওয়া।

ওজন কমানোর সাথে চুল পড়ার সম্পর্ক

আমরা যখন ওজন কমানো শুরু করি, তখন একটি নিয়ন্ত্রিত ডায়েট চার্টে সীমাবদ্ধ থাকি। ঐ সময় আমাদের শরীরে এক ধরনের কন্ডিশন তৈরি হয় যেটাকে বলা হয় Acute Telogen Effluvium। ওয়েট লসের পরে চুল পড়ার ক্ষেত্রে শরীরের এই কন্ডিশনটাই মূলত দায়ী। সাধারণত ডায়েট বা ওজন কমানোর প্রসেস শুরু করার তিন মাসের দিকে এই কন্ডিশন শুরু হয় এবং ছয় মাস পর্যন্ত এটি স্থায়ী হয়ে থাকে। তবে এটি ক্রনিক হয়ে গেলে ছয় মাসের বেশি সময় ধরেও স্থায়ী হতে পারে এবং চুল অনেক বেশি পাতলা হয়ে মাথায় টাক পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। এই কন্ডিশন তৈরির কারণগুলো আমরা জানার চেষ্টা করবো আজ। কারণ জানা থাকলে আগের থেকেই সচেতন হতে পারবেন। চলুন দেখে নেই তাহলে।

কেন চুল পড়া বেড়ে যায়?

ক্র্যাশ ডায়েট

ক্র্যাশ ডায়েট ও অতিরিক্ত হেয়ার ফল একটি আরেকটির সাথে কানেক্টেড, সেটি আমরা অনেকেই জানি। ক্র্যাশ ডায়েট খুব লিমিটেড ফুড আইটেমে সীমাবদ্ধ থাকে বলে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ফ্যাটি অ্যাসিড, জিংক, আয়রন এগুলোর চাহিদা পূরণ করতে পারে না। আর হঠাৎ করে খুব অল্প আর সিলেক্টেড খাবারে সীমাবদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মেন্টাল স্ট্রেসও পড়ে আমাদের। কি বিষয়টি রিলেট করা যাচ্ছে? স্ট্রেস ও পুষ্টির ঘাটতির কারণে চুল পড়া শুরু হয়।

ক্র্যাশ ডায়েট

প্রোটিনের ঘাটতি

আপনি যখনই সীমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করবেন, আপনার প্রোটিন ইনটেকও কিন্তু কমে যাবে। অ্যামিনো অ্যাসিডের কমতি হলে চুলের যে স্ট্রাকচারাল প্রোটিন থাকে, সেটার উৎপাদন কম হবে। ফলে প্রথমে চুল ভেঙে যাওয়া শুরু হয়, পরে আস্তে আস্তে গোড়া থেকে ঝরতে থাকে। আপনার শরীরের অভ্যন্তরীন সিস্টেমের প্রথম কাজ হচ্ছে আপনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যে ফাংশনগুলো কার্যকর রাখা একান্ত প্রয়োজন, সেগুলোতে আগে পুষ্টি সরবরাহ করা। যখন শরীরে হুট করে খুব সীমিত পরিমাণে প্রোটিন ইনটেক হয়, তখন আপনার চুল বা ত্বক কম প্রাধান্য পায় বলে সেখানে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছায় না। যার ফলাফল হিসেবে চুল পড়া আগের থেকে বাড়ে ও চুলের আগা ফেটে যায়!

ওয়েট লস সার্জারি

দ্রুত ও সহজে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে ওয়েট লস সার্জারি বেছে নেন অনেকেই। যেখানে পাকস্থলীর কিছুটা অংশ কেটে ফেলা হয়, যাতে খাবার গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলেও বেশি খাবার একবারে খেতে পারবেন না। এতে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব! ফলাফল হিসেবে শরীরে প্রোটিন, মিনারেল ও প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে। এর সরাসরি ইফেক্ট দেখা যায় চুল ও ত্বকে। চুল পড়ে যায়, ত্বক রুক্ষ ও মলিন হয়ে যায়। তবে আমাদের দেশে এই সার্জারি এতটা পপুলার না।

সল্যুশন কী তাহলে?

চুল পড়ার সমাধান

বিভিন্ন কারণেই অনেক সময় আমাদের ওয়েট কন্ট্রোল করতে হতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন অসুখ বাসা বাঁধে শরীরে। ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যেন না যায়, সেক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে-

১) ডায়েটিশিয়ান বা নিউট্রিশনিস্ট এর পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ক্র্যাশ ডায়েটে যাওয়া যাবে না। তিনি আপনার ওজন, বয়স, হেলথ কন্ডিশন বুঝে আপনাকে ডায়েট চার্ট প্রোভাইড করবেন। না জেনে বুঝে নিজে নিজে ডায়েট করলে সেটি স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করুন।

২) বিশেষ কোনো ডায়েট প্ল্যান মেনে চলতে হলে মেন্যু এমনভাবে সাজাতে হবে যেন প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।

৩) খাবারে বিচিত্রতা রাখবেন এবং মাঝে মাঝে চিট মিল রাখতে হবে ডায়েট করলেও! এতে মানসিকভাবে আপনি প্রফুল্ল থাকবেন। স্ট্রেস নেওয়া যাবে না একদমই। মন ভালো থাকলে ত্বক ও চুলেও পজেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়ে।

চুলের যত্নে বেছে নিন সঠিক প্রোডাক্ট

চুলের যত্ন

ডেইলি ৫০-১০০টা চুল পড়া স্বাভাবিক। ওজন কমানোর প্রসেসে প্রথম দিকে কিছুটা হেয়ার ফল হতে পারে, এই সিচুয়েশন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। এসময় ব্যালেন্স ডায়েট করার পাশাপাশি চুলের এক্সট্রা কেয়ার করুন। অ্যান্টি হেয়ার ফল রেঞ্জ বেছে নিন। হার্শ কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলুন। দু’দিকে ব্যালেন্স করুন; তাহলে ওজনও কমবে আর চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে যদি চুল পড়তে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অনলাইনে অথেনটিক হেয়ার কেয়ার রেঞ্জ কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

 

ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক

The post ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে কি? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/jinWU76
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...