স্কিনকেয়ার লাভারদের কাছে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস হচ্ছে হলিগ্রেইল। কেন জানেন? কারণ এই অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো আমাদের বিভিন্নরকম স্কিন প্রবলেম দূর করে স্কিন কন্ডিশন ভালো করতে এবং লং টার্মে স্কিন হেলদি রাখতে ইফেক্টিভলি কাজ করে। তবে অনেকেই রয়েছেন যারা এগুলো সম্পর্কে সেভাবে জানেন না। তাদের জন্য আজকের ফিচারে থাকছে স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে ব্যবহৃত অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস সম্পর্কে বিস্তারিত।
অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস বলতে কী বোঝায়?
একদম সহজ বাংলায় অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস হচ্ছে এমন কিছু এলিমেন্ট বা উপাদান যেগুলো আমাদের বিভিন্ন স্কিন কনসার্ন, যেমন- হাইপারপিগমেন্টেশন, অ্যাকনে, ক্লোজড কমেডোনস, সানবার্ন, ফাইন লাইনস, রিংকেলস ইত্যাদি কমাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে।
তবে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট কিন্তু ডিরেক্ট স্কিনে অ্যাপ্লাই করা যায় না। বরং এই উপাদানগুলো স্কিন টাইপ ও স্কিন কনসার্ন দুটোই বিবেচনা করে নির্দিষ্ট মাত্রায় বিভিন্ন স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে, যেমন- ফেইস ওয়াশ, টোনার, সিরাম কিংবা ময়েশ্চারাইজারে অ্যাড করা হয়। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো, অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট রয়েছে এমন সিরাম, এসেন্স কিংবা অ্যাম্পুল ইউজ করলে তুলনামূলকভাবে বেটার রেজাল্ট পাওয়া যায়৷
স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে ব্যবহৃত অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস কোনগুলো?
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক, এমন কয়েকটি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস সম্পর্কে যেগুলো স্কিনকেয়ারে সবচেয়ে বেশি ইউজ করা হয়।
১) হায়ালুরোনিক অ্যাসিড
স্কিনে বয়সের ছাপ কমাতে এবং স্কিন ময়েশ্চারাইজড রাখতে দারুণ জনপ্রিয় একটি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না, এই অ্যাসিড কিন্তু ন্যাচারালিই আমাদের স্কিনে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্কিনে এই অ্যাসিডের প্রোডাকশন কমতে থাকে। এবার আসি এটার কার্যকারিতায়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড রয়েছে এমন ময়েশ্চারাইজার কিংবা সিরাম ইউজ করলে স্কিন সবসময় হাইড্রেটেড থাকে এবং স্কিনে বয়সের ছাপও লক্ষণীয়ভাবে কমে যায়।
২) নিয়াসিনামাইড
নিয়াসিনামাইড হলো ভিটামিন বি৩ থেকে তৈরি একটা অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট যা স্কিনের ইরিটেশন ও রেডনেস কমাতে খুব ভালো কাজ করে। এটা স্কিনের ডালনেস কমিয়ে স্কিন ব্রাইট করতেও খুবই ইফেক্টিভ। এর পাশাপাশি নিয়াসিনামাইড আমাদের স্কিন ব্যারিয়ার রিপেয়ার করে এবং স্কিনে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারের যোগান দেয়।
৩) রেটিনল
রেটিনলকে স্কিনকেয়ারের গেইম চেঞ্জার বলা হয়। মূলত ভিটামিন এ থেকে এটা তৈরি করা হয়। কোনো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের মাধ্যমে ফেইসে রেটিনল অ্যাপ্লাই করা হলে তা রেটিনয়িক অ্যাসিডে কনভার্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন ফ্রি র্যাডিকেলের কারণে আমাদের স্কিনে যে ড্যামেজ এবং এজিংয়ের সাইনস দেখা যায়, রেটিনল তা কমাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। শুধু তাই নয়, এটা আমাদের স্কিনের ডেডসেলস দূর করে, পোরস আনক্লগ করে এবং স্কিন টেক্সচার ইমপ্রুভ করতেও হেল্প করে।
৪) আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড
হাইড্রক্সি অ্যাসিডের মূল উৎস হচ্ছে বিভিন্ন ফ্রুট, সুগার কিংবা মিল্ক। স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে দুই ধরনের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এগুলো হলো ল্যাকটিক অ্যাসিড ও গ্লাইকলিক অ্যাসিড। আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড আমাদের স্কিনকে ইরিটেট না করে এক্সফোলিয়েট করতে, ডেডসেলস দূর করতে, স্কিন ব্রাইট করতে এবং অ্যাকনেজনিত প্রবলেম দূর করতে খুব ভালো কাজ করে।
৫) ভিটামিন সি
ভিটামিন সি হলো সবচেয়ে ইফেকটিভ অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলোর মধ্যে একটা। এটা আমাদের স্কিনের জন্য ক্ষতিকর সব ফ্রি রেডিক্যালকে নিউট্রালাইজ করে, যার ফলে স্কিনে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না৷ তাই যদি স্কিনকেয়ারে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট অ্যাড করেন, তাহলে দেখতে পাবেন স্কিনের ডার্ক স্পটস, ফাইন লাইনস, রিংকেলসের মতো প্রবলেমগুলো অনেকটাই কমে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ভিটামিন সি স্কিন ব্রাইটেনিংয়েও খুব ভালো কাজ করে।
৬) বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড
আমাদের স্কিনের ব্রেকআউট কমাতে, ডেডসেলস রিমুভ করতে, পোরস আনক্লগ করতে এবং এক্সট্রা অয়েল কন্ট্রোল করতে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড খুবই হেল্পফুল। বিশেষ করে যাদের ক্লোজড কমেডোনস এবং অ্যাকনের প্রবলেম রয়েছে, তাদের জন্য কোনো সাইড ইফেক্ট ছাড়া কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর হিসেবে এটা বেশ ইফেক্টিভ। বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড অন্যতম। স্কিনে থাকা ডেডসেলস দূর করতে কিংবা ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করতে এটা খুবই কার্যকর।
৭) বেনজোয়িল পার অক্সাইড
যাদের অ্যাকনে প্রন স্কিন, তাদের জন্য বেনজোয়িল পার অক্সাইড একটা পিওর ব্লেসিং। কারণ এই অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টটি আমাদের পোরসের ভেতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এর ফলে তখন স্কিনে অ্যাকনে ব্রেকআউটও কম হয়। তবে নিজের স্কিনকেয়ার রুটিনে বেনজোয়িল পার অক্সাইড অ্যাড করার আগে অবশ্যই একজন ডার্মাটোলজিস্টের সাথে কনসাল্ট করে নিন।
এটুকুই ছিলো আজকের ডিসকাশন। স্কিনকেয়ার রুটিনে যেকোনো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট অ্যাড করার আগে নিজের স্কিন কন্ডিশন এবং স্কিন কনসার্ন অবশ্যই কনসিডার করুন। একইসাথে পরামর্শ থাকবে অথেনটিক ব্র্যান্ডের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট পারচেজ করার। নতুবা স্কিন তো হেলদি হবেই না, উল্টো আরো সাইড ইফেক্টস দেখা দিবে।
যেকোনো স্কিনকেয়ার, হেয়ারকেয়ার কিংবা মেকআপ আইটেম পারচেজ করার জন্য আমার অন্যতম পছন্দের প্লেস হলো সাজগোজ। অনলাইনে অথেনটিক বিউটি প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। এছাড়া ভিজিট করতে পারেন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগরে থাকা সাজগোজের ফিজিক্যাল স্টোরে।
ছবিঃ সাজগোজ
The post স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে ব্যবহৃত অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস কীভাবে কাজ করে? appeared first on Shajgoj.
from Shajgoj https://ift.tt/hGEuFKj
Arfatun Nabila
Comments
Post a Comment