Skip to main content

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ | ঘরেই শুরু করুন ফিটনেস জার্নি

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা জিমে গিয়ে ব্যায়াম করেন। জিমে যাওয়ার প্রধান কারণের মধ্যে আছে- ওজন কমানো, বাড়তি ফ্যাট (যেটা বেশিরভাগ সময় পেটের চারপাশে দৃশ্যমান থাকে) এবং ক্যালরি বার্ন করে সুন্দর বডি শেইপ পাওয়া। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই কিছুদিন করার পর সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন জিমে যাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই কারণে তারা ঘরে বসেই এমন কিছু এক্সারসাইজ করতে চান, যাতে ওজনও কমে এবং বডি শেইপও সুন্দর হয়। অ্যারোবিক এক্সারসাইজ হতে পারে এমনই একটি সমাধান। যারা জিমে যান না, তারাও যদি ঘরে বসেই ফিটনেস জার্নি শুরু করতে চান তাহলে এই ব্যায়ামগুলো করতে পারেন। ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট এর কাছ থেকে জেনে নিন এই এক্সারসাইজগুলো সম্পর্কে।

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ এর হেলথ বেনিফিটস 

  • দ্রুত ফ্যাট বার্ন হয়
  • হার্ট ভালো থাকে
  • ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে
  • কাজ করার মনোবল বেড়ে যায়
  • উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা কমে আসে
  • এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়
  • ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে

কীভাবে করবেন?  

এতক্ষণ তো অ্যারোবিক এক্সারসাইজ এর হেলথ বেনিফিট সম্পর্কে জানা হলো। এবার চলুন এই এক্সারসাইজগুলোর ধরন এবং কীভাবে করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। বিস্তারিত জানা থাকলে ঘরে বসে সহজেই আপনি ফিটনেস জার্নি শুরু করতে পারবেন।

জাম্পিং জ্যাকস (Jumping Jacks)

এই এক্সারসাইজ পুরো বডির জন্য উপকারী হলেও পায়ের সামনের দিকের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করতে বেশি ফোকাস করা হয়। পরবর্তীতে কাঁধ, পেট, হিপ, পায়ের নিচের অংশের মাংসপেশি, পিঠ এবং পায়ের অন্যান্য অংশ এবং থাইয়ের মাংসপেশির ফ্যাট লসে ভূমিকা রাখে। গবেষণায় জানা গেছে, ৩০ মিনিট জাম্পিং জ্যাকস করলে ২০০ ক্যালরি বার্ন হয়। সাধারণত ১০ মিনিট এক্সারসাইজ করার পর কিছু বিরতি নিতে হয়। এই এক্সারসাইজ ফ্যাট লসের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ (জাম্পিং জ্যাকস)

যেভাবে করবেন

ছবির মতো পজিশনে দুই পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুই হাত মাথার উপর রাখুন। এই অবস্থাতেই লাফ দিতে হবে। লাফানোর সময় দুই হাত ও পায়ের মধ্যে দূরত্ব কমে কাছাকাছি আসবে। ছন্দ মেলাতে হাত জড়ো করার সময় তালিও দিতে পারেন।

মাউন্টেইন ক্লাইম্বার (Mountain Climber)

এই এক্সারসাইজ করলে পেট, থাই, হিপসহ পুরো পায়ের মাংসপেশির দৃঢ়তা বাড়ে। প্রথমে ৮/১০ বার করে ২ সেট করা ভালো। পরবর্তীতে সময় বাড়িয়ে করতে হবে।

যেভাবে করবেন

দুই হাত ও হাঁটু মেঝেতে রাখুন। শুরুতে ডান পা ডান হাতের কাছে এবং বাম পা বাম হাতের কাছে আনুন। একই পজিশনে হাত পা কয়েকবার করে সুইচ করুন।

বিয়ার ক্রলস (Bear Crawls)

এই একটা এক্সারসাইজের মাধ্যমে পুরো দেহের এক্সারসাইজ হয়ে যায় এবং মাংসপেশি শক্তিশালী হয়। এতে করে দেহের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং হৃদযন্ত্র সবল থাকে। এই এক্সারসাইজ ১৫-২০ বার করে ২/৩ সেট করতে হয়।

বিয়ার ক্রলস

যেভাবে করবেন

চার হাত পা মাটিতে রাখুন। এবার দুই হাঁটু মাটি থেকে ইঞ্চিখানেক উপরে রাখুন। এ সময় এক হাঁটু ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে ভাঁজ হয়ে থাকবে। এবার ডান হাত ও বাম পা একসাথে সামনে এগোবে। ঠিক একইভাবে বাম হাত ও ডান পা সামনে এগোবে। এই ক্রলিং স্টেপটাই কয়েকবার করে করতে হবে।

দড়ি লাফ (Skipping)

সাধারণত ১০০ বার দড়ি লাফ দিলে ২০০ ক্যালরি ফ্যাট বার্ন হয়। এই এক্সারসাইজ নিয়মিত করলে কাঁধের মাংসপেশি, হাত, পা সুগঠিত হয়। যত দ্রুত এই লাফ দেয়া যায়, ক্যালরি ক্ষয়ের পরিমাণও তত বেশি হয়। নিয়মিত দড়িলাফের অভ্যাস গড়ে তুললে ওজন তো কমবেই, পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণে থাকবে রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার পরিমাণও। জোড় পায়ে দড়িলাফ দেওয়া ভালো, আবার এক পা এক পা করেও দিতে পারেন। যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবেই করুন। সব বয়সীরাই দড়িলাফ দিতে পারেন। তবে হাঁটু ব্যথা থাকলে এবং গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে দড়ি লাফ না দেয়াই ভালো।

বার্পিস (Burpees)

যারা শুধু একটি এক্সারসাইজ করেই পুরো দেহকে ফিট রাখতে চান, তাদের জন্য এই এক্সারসাইজ একদম পারফেক্ট। এটি নিয়মিত করলে দেহে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, হার্ট ভালো থাকে, মাংসপেশির দৃঢ়তা বাড়ে এবং সেই সাথে দেহ নমনীয় হয়। এটি ৮-১৫ বার করে ৩-৫ সেট করা ভালো।

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ (বারপিস)

যেভাবে করবেন

ছবির পজিশনে প্রথমে মাথা, কাঁধ এক লাইনে রেখে হাত দুটিকে উপরে তুলে হালকা লাফ দিতে হবে। এবার চেস্ট একটু এগিয়ে নিয়ে স্কোয়াটের ভঙ্গি করতে হবে। তারপর পা দুটো ছড়িয়ে, হাতের উপর জোর দিয়ে বসে পড়তে হবে এবং ওই অবস্থাতেই লাফিয়ে পা দুটিকে পেছন দিকে সোজা টানটান করে দিতে হবে। প্ল্যাঙ্কের মতো করে শরীরটাকে উপুড় করে রেখেই একটা পুশ আপ করে, আবার পা দুটিকে এক লাফে ভাঁজ করে হাতের কাছে আনতে হবে।

সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা (Stair Climbing)

এই এক্সারসাইজ পায়ের জন্য খুবই ভালো। পায়ের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করা ছাড়াও এটা এনার্জি বুষ্ট করে, শ্বাসযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। প্রথম দিকে ধীরে ধীরে ১৫-২০ মিনিট সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করতে পারেন। পরবর্তীতে সময় বাড়িয়ে সেটাকে ৩০ মিনিট করা যেতে পারে।

স্কোয়াট জ্যাকস (Squat Jacks)

এই এক্সারসাইজ দেহের নিচের অংশ এবং দেহের গঠন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও সুগঠিত পায়ের জন্য এটি একটি সেরা এক্সারসাইজ হিসেবে পরিচিত। সাধারণত ৮-১৫ বার করে ২ সেট করে করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

যেভাবে করবেন

দুই পা পাশাপাশি রেখে দুই হাত মাথার উপরে তুলে দাঁড়ান। এবার হাত বুকের সামনে নিয়ে এসে জাম্প করুন। এ সময় দুই পা ছড়ানো থাকবে। একই পদ্ধতিতে কয়েকবার স্কোয়াট করুন।

ইঞ্চওয়ার্ম (Inchworm)

এক্সারসাইজ শুরু করার আগে ওয়ার্ম আপ করে নিতে বলা হয়। এতে করে ভারী এক্সারসাইজ করার সময় পেশিতে টান লাগে না, পেশি নমনীয় থাকে এবং এক্সারসাইজ করার জন্য বডি প্রস্তুত থাকে। ইঞ্চওয়ার্ম এক্সারসাইজের মাধ্যমে পুরো দেহকে ওয়ার্ম আপ করা যায়। এটি নিয়মিত করলে হাত, বুক, পেট, দেহের উপরের ও নিম্নাংশ সুদৃঢ় হয়। সাধারণত এই এক্সারসাইজ ১০-১৫ বার করে ২-৩ সেট করতে হয়।

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ (ইঞ্চওয়ার্ম)

যেভাবে করবেন

ছবির মতো পজিশনে লম্বা হয়ে দাঁড়ান। এবার রোল হয়ে হাত দিয়ে মেঝে টাচ করুন। এবার হাত একটু সামনের দিকে নিয়ে প্ল্যাঙ্ক পজিশনে দাঁড়ান। এবার পা পেছন দিকে টান টান করে ছবির মতো পজিশনে আসুন।

হাই নি’স (High Knees)

যারা দ্রুত ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এই এক্সারসাইজ বেশ হেল্পফুল। এই এক্সারসাইজ করলে দ্রুত ক্যালরি বার্ন হয় এবং দেহের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। প্রতিটি পায়ে ১৫ বার করে ২ সেট করলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।

ডাংকি কিকস (Donkey kicks)

যাদের দেহের নিচের অংশ ভারী তাদের এই এক্সারসাইজ নিয়মিত করা ভালো। এই ব্যায়াম রেগুলার করলে দেহের গঠন সুন্দর হয়। ১৫-২০ বার করে ৩ সেট করে দেয়া ভালো।

যেভাবে করবেন

শুরুতে দুই হাঁটু ও দুই পা মেঝেতে রাখতে হবে। এবার এক পা পেছন দিকে উঁচু করে কয়েক সেকেন্ড থাকতে হবে। একইভাবে পা বদলে কয়েকবার করে করতে হবে।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের অ্যারোবিক এক্সারসাইজ রয়েছে। ফিটনেস পেতে হলে এক্সারসাইজের কোনো বিকল্প নেই। ঘরে বসেই এই এক্সারসাইজগুলো করা যায়। তাই জিমে যাওয়া হচ্ছে না বলে এক্সারসাইজ করা ছেড়ে না দিয়ে ঘরেই শুরু করে দিন ফিটনেস জার্নি। শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

ছবিঃ সাটারস্টক

The post অ্যারোবিক এক্সারসাইজ | ঘরেই শুরু করুন ফিটনেস জার্নি appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/3ydDIvM
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina

হেভি ব্রেস্ট এর জন্য পিওর কটন ফেব্রিকের কমফোর্টেবল ব্রা খুঁজছেন?

বডি শেইপ ও বয়স অনুযায়ী ইনার ওয়্যারে যে ভ্যারিয়েশন আসে, সেটা আমরা অনেকেই জানি না! টিনেজে ডেভেলপিং ব্রেস্ট এর জন্য এক ধরনের ব্রা, বয়স্ক নারীদের জন্য এক ধরনের ব্রা, নতুন মায়েদের জন্য আরেক ধরনের ব্রা। শারীরিক গঠন বা ব্রেস্ট শেইপ অনুযায়ী ইনার ওয়্যার সিলেকশন খুবই জরুরি! মধ্যবয়সী বা বয়স্ক নারীদের জন্য স্যুইটেবল লঞ্জেরির রিভিউ জানাবো আজকের ফিচারে। হেভি ব্রেস্ট এর জন্য পিওর কটন ফেব্রিকের কমফোর্টেবল ব্রা যারা খুঁজছেন, তাদের জন্য রিভিউটি হেল্পফুল হবে আশা করি। হেভি ব্রেস্ট এর জন্য কেমন ব্রা বেছে নিতে হবে? ব্রেস্টকে প্রোপারলি সাপোর্ট দেয়, এনাফ কভারেজ পাওয়া যায় এবং প্রশস্ত ব্যান্ড থাকে, এমন ব্রা আপনাকে চুজ করতে হবে। বয়সের সাথে সাথে শারীরিক গঠনেও বেশ পরিবর্তন আসে। বাল্কি ফিগার বা কার্ভি বডির জন্য পারফেক্ট ব্রা সিলেক্ট করাটা একটু ডিফিকাল্ট মনে হয়। চিন্তা নেই, আজ এমনই একটি ব্রা সম্পর্কে জানাবো। মধ্যবয়সী ও বয়স্ক নারীদের জন্য স্যুইটেবল ব্রা আমাদের বাসায় মা, দাদি বা বয়স্ক নারী সদস্য যারা আছেন, তাদের কমফোর্টের বিষয় নিয়ে আমরা কখনো ভেবেছি কি? আরামের বিষয়টিকেই এই বয়সে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। এই বয়সে হে

রিবন্ডিং নাকি কেরাটিন ট্রিটমেন্ট, কোনটি আপনার জন্য পারফেক্ট?

কোনো অকেশন বা ইভেন্টে যাওয়ার জন্য নিজের পছন্দের আউটফিট পরে, সুন্দরভাবে সেজেগুজে যদি দেখতে পান, চুল একদম ফ্রিজি হয়ে আছে, চুলে কোনো শাইন নেই, সিল্কি ভাবও নেই তখন মনটাই খারাপ হয়ে যায়, তাইনা? সত্যি বলতে চুল রাফ ও আনম্যানেজেবল হয়ে থাকলে স্টাইলিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ স্ট্রাগল করতে হয়। দেখা যায়, চুল ছেড়েও রাখা যায় না, আবার শখ করে কোনো হেয়ারস্টাইল করলেও দেখতে ভালো লাগেনা। রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই সিল্কি, স্ট্রেইট এবং হেলদি লুকিং চুল পাওয়া পসিবল। তবে অনেকেই এই দু’টো ট্রিটমেন্টের পার্থক্য বুঝতে পারেন না, যার ফলে ডিসিশন নিতে পারেন না যে কোনটি তাদের চুলের জন্য বেশি স্যুইটেবল হবে। আপনাদের সব কনফিউশন ক্লিয়ার করতে আজকের ফিচারে থাকছে রিবন্ডিং নাকি কেরাটিন কোন ট্রিটমেন্টটি আপনার জন্য ভালো হবে তা নিয়ে বিস্তারিত। রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কি সেইম অনেকেই মনে করেন, রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে যেহেতু স্ট্রেইট, স্মুথ ও ম্যানেজেবল হেয়ার পাওয়া যায়, তাই এগুলোর মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। এটি একটি বড় মিসকনসেপশন। এই দু’টো ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে একই রকম আউটপুট আসে ঠিকই, কিন্তু