Skip to main content

ফেইস অয়েল আর সিরাম কখন কোনটা ব্যবহার করবেন?

সময়ের সাথে সাথে স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে বিভিন্ন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এই পরিবর্তনের সূত্র ধরেই আমরা মার্কেটে বিভিন্ন ফর্মুলার নতুন নতুন স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট দেখতে পাই। যারা স্কিনকেয়ার করেন, ফেইস অয়েল আর সিরাম – এ দু’টা প্রোডাক্ট তাদের কাছে বরাবরই খুব পছন্দের। কারণ এই প্রোডাক্টগুলো আমাদের স্কিন হেলদি রাখতে এবং বিভিন্ন স্কিন কনসার্ন দূর করতে খুব ভালো কাজ করে।

তবে অনেকেই রয়েছেন যারা ফেইস অয়েল ও সিরামের ডিফারেন্স না জেনে দু’টাকে একই প্রোডাক্ট মনে করেন। তাদের জন্য আজকের ফিচারে জানাবো ফেইস অয়েল আর সিরাম কীভাবে একটা আরেকটার থেকে আলাদা এবং কখন কোনটা ইউজ করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

ফেইস অয়েল আর সিরাম এর মধ্যে পার্থক্য কী?

দু’টাই লিকুইড স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট হলেও এগুলোর ফর্মুলা কিন্তু একদমই আলাদা। প্রথমেই আসি ফেইস অয়েলে৷ ফেইস অয়েল মূলত একটা অয়েল বেইজড প্রোডাক্ট। এটার কনসিসটেন্সি একটু থিক হয়ে থাকে এবং এই কারণে স্কিনে অ্যাবজর্ব হতে তুলনামূলকভাবে বেশি সময় লাগে। সাধারণত ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে কিংবা ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করার পর ফেইস অয়েল অ্যাপ্লাই করতে সাজেস্ট করা হয়।

ফেইস অয়েল আর সিরাম

অন্যদিকে ফেইস সিরাম ওয়াটার বেইজড হওয়ায় এটার কনসিসটেন্সি অনেক লাইট হয়। তাই আপনারা খেয়াল করে দেখবেন সিরাম অ্যাপ্লাই করার পর সেটা আপনার স্কিনে খুব তাড়াতাড়ি অ্যাবজর্ব হয়ে যাচ্ছে। স্কিনকেয়ার রুটিনে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাইয়ের আগে সিরাম অ্যাপ্লাই করতে হয়৷

উপাদানেও আছে পার্থক্য

ফেইস অয়েল ও সিরামের আরেকটা উল্লেখযোগ্য পার্থক্য এগুলোর উপাদান। ফেইস অয়েলের মূল উপাদান হলো টি ট্রি অয়েল, আমন্ড অয়েল, রোজহিপ অয়েল, জোজোবা অয়েল ইত্যাদি। এগুলোতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের স্কিনের সারফেসে এক ধরনের ব্যারিয়ার তৈরি করে। এই ব্যারিয়ারের কারণেই মূলত স্কিন ময়েশ্চারাইজড থাকে। অর্থাৎ ফেইস অয়েলের কাজ আমাদের স্কিন ময়েশ্চারাইজড রেখে স্কিন ব্যারিয়ারের ড্যামেজ যেন রিপেয়ার হয় তা নিশ্চিত করা। এজন্যে ফেইস অয়েলে সেভাবে কোনো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ইউজ করা হয় না।

আর ফেসিয়াল সিরামের মূল উদ্দেশ্য হলো আমাদের স্কিনের বিভিন্ন প্রবলেম, যেমন- এজিং সাইনস, ক্লোজড কমেডোনস, একনে, হাইপারপিগমেন্টেশন ইত্যাদি দূর করা। তাই সিরামে আমরা বিভিন্ন অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট, যেমনঃ নিয়াসিনামাইড, রেটিনল, ল্যাকটিক অ্যাসিড ইত্যাদির উপস্থিতি দেখতে পাই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিরামে এই ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো এমন পরিমাণে থাকে, যাতে করে সেগুলো আমাদের বিভিন্ন স্কিন কনসার্ন দূর করতে সহায়তা করতে পারে। আশা করি এখন আপনারা ফেইস অয়েল আর সিরাম এর ডিফারেন্সগুলো খুব ভালোমতো বুঝতে পেরেছেন।

ফেইস অয়েল

সিরাম

অয়েল বেইজড

ওয়াটার বেইজড

থিক, ইমোলিয়েন্ট কনসিসটেন্সি

থিন, লাইট কনসিসটেন্সি

অ্যাবসর্ব হতে সময় নেয়

দ্রুত স্কিনে অ্যাবসর্ব হয়ে যায়

ড্রাই স্কিনকে সফট ও ময়েশ্চারাইজড রাখে

দাগছোপ, সানট্যান, পিগমেন্টেশন কমায়

ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাইয়ের পর ইউজ করতে হয়

ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাইয়ের আগে ইউজ করতে হয়

কোনটা কখন ইউজ করবেন?

সিরাম অ্যাপ্লাই

আমি জানি এখন আপনাদের সবার মাথায় একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটা হলো “আচ্ছা তাহলে ফেইস অয়েল ইউজ করবো নাকি সিরাম? নাকি দু’টাই একসাথে ইউজ করবো?” এবার এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে দিচ্ছি।

সাধারণত আমরা আমাদের স্কিনকেয়ার রুটিনে এমন প্রোডাক্টগুলোই অ্যাড করতে পছন্দ করি, যেগুলো আমাদের স্কিনের ইমপারফেকশন দূর করার পাশাপাশি স্কিনকে হেলদি ও ময়েশ্চারাইজড রাখতে হেল্প করবে। তাই আপনি ফেইস অয়েল নাকি সিরাম ইউজ করবেন, সেটা পুরোপুরি ডিপেন্ড করে আপনার স্কিন টাইপ এবং কোনো স্কিন কনসার্ন আছে কিনা সেটার উপর।

 

ড্রাই স্কিনের যত্নে ফেইস অয়েল

যদি আপনার স্কিন টাইপ ড্রাই হয়ে থাকে এবং ফেইসে এক্সট্রা ময়েশ্চার প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনার স্কিনে ফেইস অয়েল খুব ভালো কাজ করবে। ফেইস অয়েল একটা দারুণ ময়েশ্চারাইজার তো বটেই, এর পাশাপাশি চাইলে মেকআপ করার সময় ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাইয়ের আগে একটু ফেইস অয়েল অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এতে গ্লোয়ি মেকআপ বেইজ ক্রিয়েট করতে পারবেন। তবে আপনার যদি অয়েলি কিংবা একনে প্রন স্কিন হয়ে থাকে, তাহলে ফেইস অয়েল ব্যবহার না করাই বেটার। কারণ এক্ষেত্রে ব্রেক আউট হওয়ার চান্স থাকে। তবে লাইট ওয়েট ফর্মুলার নন কমেডোজেনিক ফেসিয়াল অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফেইস অয়েল

স্কিন কনসার্ন বুঝে সিরাম

আবার যদি কোনো স্পেসিফিক স্কিন কনসার্ন এর সল্যুশন চান, সেক্ষেত্রে ফেইস সিরামই বেটার চয়েজ। যেমন- ফেইসের হাইপারপিগমেন্টেশন কমাতে নিয়াসিনামাইড সিরাম কিংবা এজিং সাইন কমাতে রেটিনল সিরাম ইত্যাদি ইউজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন৷ যদি স্কিনকেয়ার রুটিনে সিরাম অ্যাড করেন, তাহলে দিনের বেলা সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না।

দু’টাই একসাথে ব্যবহার করা যায় কি?

অবশ্যই! যদি ফেইস অয়েল ব্যবহার করলে আপনার স্কিনে কোনো ব্রেক আউট না হয় এবং আপনি কোনো স্কিন কনসার্নও দূর করতে চান, তাহলে স্কিনকেয়ার রুটিনে ফেইস অয়েল আর সিরাম দু’টাই ইউজ করতে পারেন। যেমন- ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড স্কিনের যত্নে ফেইস অয়েল আর হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে নিশ্চিন্তে!  এক্ষেত্রে বেস্ট রেজাল্ট পেতে আগে সিরাম এবং সবার শেষে ফেইস অয়েল অ্যাপ্লাই করুন।

ক্লেনজার> টোনার> সিরাম> ময়েশ্চারাইজার> ফেইস অয়েল

হেলদি স্কিন

এটুকুই ছিলো আজকের আলোচনা। সত্যি বলতে ফেইস অয়েল ও সিরাম দু’টাই আমাদের স্কিনের জন্য দারুণ উপকারী। তাই পারফেক্ট, হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পেতে চাইলে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। সবসময় মনে রাখবেন, ত্বক ভালো রাখতে অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের কোনো বিকল্প নেই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের পাশাপাশি সাজগোজে আপনারা পেয়ে যাচ্ছেন মেকআপ ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টের হিউজ কালেকশন। তাই ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ কিংবা ফিজিক্যাল স্টোরে।

অনলাইনে অথেনটিক বিউটি প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ছবি- সাজগোজ, ytimg.com

 

The post ফেইস অয়েল আর সিরাম কখন কোনটা ব্যবহার করবেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/IQ2AjU5
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...