Skip to main content

হাইজিন মেনটেইনের জন্য স্যানিটারি প্যাড কতক্ষণ পর পর চেঞ্জ করা উচিত?

বাংলাদেশে মাসিক বা পিরিয়ডের বিষয়টি এখনো ট্যাবু। কিন্তু এটি একদম স্বাভাবিক ব্যাপার! সব মেয়েদেরকেই একটা নির্দিষ্ট বয়সে এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাহলে এই বিষয়টি নিয়ে লুকোচুরি কেন? হাইজিন মেনটেইনের জন্য স্যানিটারি প্যাড কতক্ষণ পর পর পাল্টাতে হবে, সেটা কি জানেন? একটা টিনেজ মেয়েকে সঠিক শিক্ষা দিতে হবে যে পিরিয়ডের সময় দিনে কতবার স্যানিটারি প্যাড চেঞ্জ করতে হবে এবং কীভাবে পারসোনাল হাইজিন মেনটেইন করতে হবে। আজকের ফিচারে আমরা জানবো মাসিককালীন পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

যুগের সাথে বদলাচ্ছে জীবনযাত্রার ধরন

আগে মাসিকের সময় কাপড়ের টুকরা পরে আমাদের মায়েরা তাদের নিজেদের মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন মেনটেইন করতো। এখনো কিন্তু গ্রামের দিকে মেয়েরা এই কাজ করছে। যারা আজকের এই লেখা পড়ছেন, তারা একটু পরিবারের বয়স্ক মহিলাদের জিজ্ঞেস করে দেখুন তো! তারা বাড়িতে কখনো স্যানিটারি প্যাড দেখেছেন কিনা? আমাদের দাদি, নানি, মায়েরা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের বিষয়ে জানতেন না। সেই আমলে এগুলো এতটা সহজলভ্য ছিলো না। পুরাতন ত্যানা কাপড় পরে এই সময় পার করে দিয়েছেন তারা। যার ফলে অনেকেই ভ্যাজাইনাল ক্যান্ডিডিয়াসিস, ট্রাইকোমোনাস ইনফেকশন, হেপাটাইটিস- বি কিংবা জরায়ুমুখ ক্যান্সারের রিস্কে আছেন এবং আরও বিভিন্ন রকম প্রাণঘাতি রোগে তারা আক্রান্ত হতে পারেন। যুগ পাল্টিয়েছে, এর সাথে সাথে আমাদের মধ্যে সচেতনতাও বেড়েছে।

মাসিকের সময় ব্যবহার্য সামগ্রী

হাইজিন মেনটেইনের জন্য স্যানিটারি প্যাড

স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের সুবিধা

  • স্যানিটারি প্যাডে ব্লাড অ্যাবসর্ব করার জন্য লেয়ার থাকে, যার ফলে ভেজাভাব আপনি ফিল করবেন না
  • টাইম টু টাইম চেঞ্জ করলে ইনফেকশনের চান্স কমে যায়
  • হাঁটা চলাফেরা করা সহজ হয় এবং দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটে না

হাইজিন মেনটেইনের জন্য স্যানিটারি প্যাড কখন চেঞ্জ করবেন?

এটা আসলে পিরিয়ডের ফ্লো আর প্যাডের শোষণ ক্ষমতার উপর ডিপেন্ড করে। বেল্টসহ ও বেল্ট ছাড়া- দু’ধরনের প্যাড পাওয়া যায়। নরমালি স্যানিটারি প্যাড ৬-৭ ঘন্টা পর পর চেঞ্জ করতে হয়। যাদের হেভি ফ্লো হয়, তাদের ৩-৪ ঘন্টা পর পর চেঞ্জ করতেই হবে। স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্পূর্ণভাবে ভিজে যাওয়ার আগেই পরিবর্তন করে ফেলুন। বেশি দেরি করলে লিকেজ হতে পারে, ইনফেকশনের চান্স বেড়ে যেতে পারে। হাইজিন মেনটেইনের জন্য কী কী করা উচিত, চলুন জেনে নেই।

১) পিরিয়ডের সময় জরায়ুতে খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুস্থ্ থাকার প্রথম শর্ত। প্যাড ব্যবহারের আগে হ্যান্ড ওয়াশ বা সাবান দিয়ে হাত ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে, যাতে হাতের মাধ্যমে জীবাণু কোনোভাবেই প্যাডে না ট্রান্সফার হয়।

হাত ধোয়া

২) প্যাড ব্যবহারের পর কাগজ বা প্যাকেট দিয়ে ভালোভাবে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলুন। স্যাঁতসেঁতে জায়গায় জীবাণুর জন্ম হয় খুব তাড়াতাড়ি। তাই খোলা অবস্থায় ওয়াশরুমে ফেলে রাখা যাবে না।

কাপড়ের প্যাড কি স্বাস্থ্যসম্মত?

যদি কাপড়ের প্যাড ব্যবহার করতেই হয় সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে কাপড়টি যেন পরিষ্কার, নরম, শুকনা ও অধিক শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। যদি একই কাপড় বার বার ব্যবহার করতে হয়, সেক্ষেত্রে একবার ব্যবহার করার পর সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুতে হবে। সম্ভব হলে স্যাভলন বা জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে কড়া রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। পরিষ্কার ও শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। একজনের ব্যবহৃত কাপড় অন্য আরেকজন ব্যবহার করা যাবে না। ব্যবহৃত কাপড় কাগজে মুড়িয়ে ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। অথবা গর্ত করে মাটির নিচে পুতেও রাখা যাবে। কিন্তু কাপড়ের থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা ভালো। এতে হাইজিন মেনটেইন করা ইজি হয়।

আমাদের দেশে মেয়েদের ইউরিন ইনফেকশন আর জরায়ুর ক্যান্সার বেশ কমন, আর এটা বেশিরভাগ সময় অপরিচ্ছন্নতার কারণেই হয়ে থাকে। এখন দেশেই ভালোমানের প্যাড বা ন্যাপকিন তৈরি হচ্ছে, যা আপনি তুলনামূলক রিজনেবল প্রাইসে পেয়ে যাবেন। তাই নিজেকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।

প্যাডের বিকল্প মেনস্ট্রুয়াল কাপ

সিলিকন বা ল্যাটেক্স রাবার দিয়ে তৈরি কাপের মতো এই বস্তুটি ঋতুস্রাবের সময়ে ব্যবহার করা হয়। এই প্রোডাক্টটি কিন্তু ইউরোপ আমেরিকাতে এখন বেশ পপুলার। স্যানিটারি ন্যাপকিন অথবা ট্যাম্পনের মতো এটি রক্ত শুষে নেয় না, বরং জমিয়ে রাখে যা পরবর্তিতে ফেলে দেয়া যায়। স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পন যেমন একবার ইউজ করেই ফেলে দিতে হয়, মেনস্ট্রুয়াল কাপ ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ঠিকভাবে পরিষ্কার করার পর এই কাপ বহুবার ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি বার বার প্যাড চেঞ্জ করার হ্যাসেল নিতে না চান, তাহলে কাপ ট্রাই করতে পারেন। নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে ভালোমানের মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করতে হবে।

মেনস্ট্রুয়াল কাপ

তবে যদি যোনিপথে বা ইউটেরাসে কোনো সমস্যা থাকে, তা হলে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

মাসিক খুবই স্বাভাবিক একটি শারীরিক প্রক্রিয়া। মাসিকের মাধ্যমে একজন মেয়ে নারীতে পরিণত হয়। মাসিকের মাধ্যমেই একজন নারী সন্তান জন্মদানের প্রাথমিক সক্ষমতা অর্জন করে। তবুও এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা সহজে কথা বলতে চাই না, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। এমনকি মায়েরাও মেয়েদের ছোট থেকেই পিরিয়ড সম্পর্কে সচেতন করার ব্যাপারে সংকোচ বোধ করেন। মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন না থাকলে দেহে নানারকম রোগ বাসা বাঁধতে পারে। হাইজিন মেনটেইনের জন্য স্যানিটারি প্যাড সঠিকভাবে ব্যবহার করুন, সময়মতো চেঞ্জ করুন। নিজের যত্ন নিন। ভালো থাকুন!


ছবি- সাটারস্টক

The post হাইজিন মেনটেইনের জন্য স্যানিটারি প্যাড কতক্ষণ পর পর চেঞ্জ করা উচিত? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/XT7uAv6
Munia

Comments

Popular posts from this blog

স্ট্রেসের কারণে একনে বা প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস দেখা দিচ্ছে না তো?

আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন তখন আমি বুঝতেই পারছি আপনার হাতে টেকনোলজির সুবিধা রয়েছে। যার কারণে আপনি এখন চাইলেই যে কোনো ভিডিও দেখতে পারেন, যে কোনো তথ্য সম্পর্কে জানতে ইন্টারনেটে সার্চ করতে পারেন। জীবন আগের চেয়ে এখন অনেক সহজ। তারপরও কিন্তু আমরা সবাই কমবেশি স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাই। আর এই স্ট্রেস মানসিকভাবে আমাদের যতটা অসুস্থ করে দিচ্ছে, ঠিক ততটাই এফেক্ট ফেলছে আমাদের স্কিনের উপর। যেমন- স্ট্রেসের কারণে একনে বা প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস দেখা দিচ্ছে, সেই সাথে হচ্ছে ত্বকের নানা সমস্যা। স্ট্রেস কতভাবে স্কিনের উপর প্রভাব ফেলে এবং কীভাবে স্ট্রেস কমিয়ে আনা যায় তা নিয়েই আলোচনা করবো আজ। স্ট্রেস কেন হয়? বিভিন্নভাবে স্ট্রেস হতে পারে। যেমন- এনভায়রনমেন্টাল বা টেম্পারেচার চেঞ্জ (এক্সটার্নাল ফ্যাক্টর)। ধরুন আপনি অনেকটা সময় ঠান্ডা রুমে ছিলেন। হুট করে যখন গরম পরিবেশে চলে আসলেন তখন শরীরে একটা স্ট্রেস হয়। আবার আর্থিক অবস্থা, লেখাপড়া, পারিবারিক সমস্যা ইত্যাদির কারণে সাইকোলজিক্যাল স্ট্রেস দেখা দেয়। স্ট্রেস এমন একটি বিষয় যেটার সাথেও আমরা থাকতে পারি না, যেটা ছাড়াও আমাদের থাকা সম্ভব নয়। সময়ের সাথে সাথে আমরা বেশ আধু

কীভাবে পারফেক্টলি ক্যামেরা বন্দী করা যায় সুন্দর মুহূর্তগুলো?

একটা সময় ছিল, যখন ছবি তোলা বা কারো কাছে ক্যামেরা থাকা যেন বড়সড় ব্যাপার। স্টুডিওতে যেয়ে ছবি তুলতে হতো বা কোনো কিছুর ছবি, ভিডিও এত সহজ ছিল না। অনেকদিন অপেক্ষা করে হাতে ছবি পাওয়া যেতো এবং সেটা অ্যালবামে যত্নের সাথে সংরক্ষণ করা হতো। আর এখন ছবি তোলা অনেক সহজ। বাজারের বিভিন্ন মডেলের ক্যামেরা বা হাই মেগাপিক্সেল সম্পন্ন ফোন সবার হাতে হাতে। আমরা এখন চাইলেই আমাদের সুন্দর সময়গুলোর বা শখের কাজ কিংবা ঘুরতে যেয়ে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির ছবি, ভিডিও ক্যামেরা বন্দী করতে পারি। এখন কীভাবে পারফেক্টলি ক্যামেরা বন্দী করা যায় সুন্দর মুহূর্তগুলো তা নিয়েই টুকিটাকি টিপস শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। ক্যামেরা নিয়ে কিছু বেসিক ধারণা যেকোনো ডিভাইস ব্যবহার করার পূর্বে তার সম্পর্কে ধারণা নেওয়া জরুরী। অনেক সময় দেখা যায় একটা ডিভাইস সম্পর্কে ঠিকভাবে না জানার কারণে ছবি তুলতে গিয়ে আমরা অনেক অপশন মিস করে ফেলি। ফলস্বরূপ ছবি সুন্দর হয় না। এই জন্য ম্যানুয়ালটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। তবে ম্যানুয়াল পড়াটা অনেকের কাছে বিরক্তিকর লাগে। তাই বিভিন্ন ফিচার নিয়ে যদি বারবার প্র্যাকটিস করা যায় তাহলে ফটোগ্রাফি বিষয়টা সহজে আয়ত্তে আসে। এখন

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina