Skip to main content

ডিমের খোসা দিয়ে ঘর সাজানোর চমৎকার ৪টি আইডিয়া!

আমাদের অনেকেরই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রায়ই থাকে এমন একটি খাবার ডিম। খাওয়া শেষে ডিমের খোসা সাধারণত ফেলেই দেয়া হয়। অনেকে আবার এই খোসা দিয়ে গাছের জন্য সার তৈরি করেন। আপনি কি জানেন ডিমের খোসা দিয়ে ঘর সাজানোর জন্য দারুণ কিছু আইটেম তৈরি করা যায়? চলুন আজকে এমনই কিছু নান্দনিক জিনিস বানানো শিখে নেই।

ডিমের খোসা দিয়ে ঘর সাজানোর আইডিয়া 

ডিমের খোসা দিয়ে টিউলিপ ফুল

টিউলিপ ফুল দেখতে বেশ সুন্দর লাগে, তাই না? কিন্তু সব সময় ফুলটি কালেক্ট করা সম্ভব হয় না। তাই বলে কি এই ফুল দিয়ে ঘর সাজানো অধরা থেকে যাবে? একদম নয়! ডিমের খোসা দিয়ে খুব সহজেই বানিয়ে ফেলা যায় টিউলিপ ফুল। চলুন এটি বানানোর প্রসেসটি জেনে নেই-

যা যা লাগবে
  • ডিমের আস্ত খোসা (যে কয়টি ফুল আপনি বানাতে চান)
  • কাগজ
  • এক্রেলিক বা ফেব্রিক কালার
  • আঠা/হট গ্লু
  • কেঁচি
  • স্প্রে পেইন্ট
যেভাবে বানাবেন

১) ডিমের খোসাগুলো যতটা সম্ভব আস্তভাবে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করুন। ডিম ভাঙার যময় যে কোনো এক মাথা ফুটো করে ডিম বের করে নিন। খোসাগুলোকে সাবধানে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। যেখান থেকে ডিম ভেঙেছেন, সেখান থেকে আস্তে আস্তে আঙুল দিয়ে আরও খানিকটা ভেঙে নিন।

ভাঙা ডিমের খোসা

২) ভালোভাবে শুকানোর পর ডিমের উপরে ও ভেতরে পছন্দমতো কালার দিয়ে রঙ করে নিন। একটি রঙ অথবা দুটো রঙ এর শেডও করতে পারেন। খোসাতে চকচকে ভাব আনার জন্য স্প্রে পেইন্ট ব্যবহার করতে পারেন।

৩) এবার ফুলের ডাঁটি তৈরি করার জন্য চিকন ও লম্বা করে কাগজ কেটে রোল করে নিন। ডাঁটি বুঝানোর জন্য কাগজে সবুজ রঙ করে নিন। দুটো মাথা সমান করে কেটে নিন। একটি মাথায় কেঁচি দিয়ে লম্বাভাবে খানিকটা কেটে নিন, নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে কাগজের সরু অংশটুকু ৫/৬ টুকরো করে ছড়িয়ে নিয়ে বাইরের দিক দিয়ে একটু চাপ দিন। এতে করে মাথাটি অনেকটা ফুলের মত লাগবে।

৪) কয়েকটি সবুজ কাগজ পাতার শেইপে লম্বা করে কেটে নিন। সাদা কাগজ হলে সবুজ রঙ করে নিন।

৫) ডিমের খোসাটিকে কাগজের রোলের ফুলের মতো মাথাটিতে আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন। রোলের পছন্দমতো স্থানে পাতাগুলো লাগান।

ডিমের খোসা দিয়ে টিউলিপ ফুল

ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো ডিমের খোসার টিউলিপ ফুল। এবার সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলুন ফুলদানিতে।

ডিমের মোমবাতি বা ডিমবাতি 

আকর্ষণীয় ও রঙ বেরঙের ডিমের মোমবাতি হতে পারে ঘর সাজানোর একটি চমৎকার আইটেম। তাছাড়া অন্ধকারে কাজেও লাগতে পারে এই মোমবাতিও। ডিমের খোসা দিয়ে এমনই একটি মোমবাতি আপনি চাইলে বানিয়ে ফেলতে পারেন। চলুন দেখে নেই সহজেই কীভাবে এই মোমবাতি বানানো যায়-

যা যা লাগবে
  • ডিমের খোসার দুই তৃতীয়াংশ
  • বিভিন্ন রঙের মোম
  • মোমবাতির সুতলি
  • লিকুইড ক্রেয়ন (পছন্দমতো রঙের)
  • অ্যাসেনসিয়াল অয়েল  (অপশনাল)
যেভাবে বানাবেন

১) প্রথমে খুব ভালো করে ডিমের খোসাগুলো পরিষ্কার করে নিন। ডিমের তীব্র গন্ধ দূর করতে ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। এবার ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।

২) একটি পেন্সিলের মাঝ বরাবর সুতলিটা বেঁধে নিন। এক প্রান্ত ডিমের খোসার ভেতর শেষ পর্যন্ত যায় এমনভাবে ঢুকিয়ে পেন্সিলটি খোসাটির উপর আড়াআড়িভাবে রাখুন। এতে মোম ঢালার সময় সুতলিটি নড়বে না।

৩) মোম ও ক্রেয়ন একসাথে গলিয়ে নিয়ে সাবধানতার সাথে খোসাটির ভেতর ঢালুন। একটি কাঠি দিয়ে নাড়িয়ে দেবেন যেন ভেতরে বাতাসের কারণে কোনো বাবলস না থাকে। এবার এতে কয়েক ফোঁটা অ্যাসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ভালোভাবে নাড়িয়ে নিন। এতে পুরো মোমে অয়েল ছড়িয়ে যাবে। জ্বালানোর পর ঘরে সুগন্ধ ছড়িয়ে যাবে।

৪) মোম ভালোভাবে শুকিয়ে নিয়ে সুতলিটি পরিমাণমতো রেখে বাড়তি অংশ কেটে দিন।

ডিমের মোমবাতি

ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো ডিমবাতি। এবার খোসাগুলোকে রঙ করে, পুঁথি বা লেইসের সাহায্যে সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলতে পারেন। তারপর কয়েকটি রঙিন খোসা নিয়ে একটি ট্রে তে সাজালেই রেডি হয়ে যাবে আকর্ষণীয় ডিমবাতি!

ডিমের খোসার আর্টিফিশিয়াল ক্যাকটাস

ঘর সাজানোর জন্য আমাদের অনেকের বাসাতেই ক্যাকটাস আছে। কেমন হয় যদি ডিমের খোসা দিয়ে আর্টিফিশিয়াল একটি ক্যাকটাস বানানো যায়? অল্প সময়ে কীভাবে এটি বানাবেন সেটারই প্রসেস জানাবো আজকে। চলুন তাহলে শিখে ফেলা যাক-

যা যা লাগবে
  • ডিমের খোসা
  • রঙ ও তুলি
  • আঠা
  • টব ও ছোট বড় পাথর
  • কাগজ বা শোলা
যেভাবে বানাবেন

১) ডিমের খোসাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন।

২) খোসাগুলো শুকিয়ে গেলে ক্যাকটাসের আদলে রঙ করে নিন। বেসিক রঙ বিভিন্ন রকম সবুজ। চিকন তুলি দিয়ে ডিটেলিং করুন সাদা রঙ দিয়ে।

৩) আঠার সাহায্যে একটি খোসার উপর আরেকটি বসালে দেখতে ক্যাকটাসের মতো লাগবে। এভাবে ২/৩টি ক্যাকটাসের লাইন তৈরি করুন। চাইলে একটি খোসাও রাখতে পারেন। খোসার মাথায় রঙিন কাগজ দিয়ে ফুল বানিয়ে সাজাতে পারেন।

৪) এবার টব কাগজ অথবা শোলা দিয়ে ভরে ফেলুন। তৈরি করা খোসার ক্যাকটাসটি আঠা দিয়ে বসিয়ে দিন এর উপর। টবের চারপাশে পাথর দিয়ে সাজিয়ে ফেলুন।

Egg Shell Cactus

ব্যস! রেডি হয়ে গেলো ঘর সাজানোর জন্য আর্টিফিশিয়াল একটি ক্যাকটাস!

ডিমের খোসা দিয়ে মিনিয়েচার গার্ডেন 

আমাদের বারান্দায় সাধারণত টবে লাগানো গাছ থাকে। তবে যাদের মিনিয়েচার গার্ডেন পছন্দ তারা খুব সহজেই এই জিনিসটি দিয়ে দারুণ একটি বাগান বানিয়ে ফেলতে পারেন। কীভাবে? চলুন জেনে নেই-

যা যা লাগবে
  • ডিমের আস্ত খোসা (যে কয়টি গাছ লাগাতে চান)
  • হট গ্লু
  • প্লেট বা ট্রে ১টি
  • ছোট গাছ অথবা বীজ
যেভাবে বানাবেন

১) অল্প ফুটো করে ডিম বের করে পরিষ্কার করে নিন। ভিনেগার দিয়ে ক্লিন করে নিলে ডিমের গন্ধ থাকবে না। এবার খোসাগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।

২) এবার একটি প্লেট বা ট্রে, অথবা কোন মোটা টেবিল ম্যাটের উপর হট গ্লু গান দিয়ে খোসাগুলোকে সাজিয়ে নিন।

৩) খোসার ভেতর মাটি দিয়ে ছোট ছোট গাছ লাগান। যদি বীজ লাগাতে চান তাহলে গাছ হওয়ার জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে এ সময়টায় মাটিতে পানি দিতে ভুলবেন না যেন! যদি গাছ না লাগাতে চান তাহলে আর্টিফিশিয়াল ছোট ছোট ফুল দিয়েও ভেতরেটা সাজিয়ে নিতে পারেন।

৪) খোসাগুলোকে রঙ করে নিতে পারেন, পুঁতি বা লেইসের সাহায্যেও সাজিয়ে নিতে পারেন। অবশ্য একদম সাধারণ রাখলেও দেখতে মন্দ লাগবে না।

miniature garden

ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো দারুণ একটি মিনিয়েচার গার্ডেন।

ডিম যে শুধু স্বাস্থ্যকর একটি খাদ্য উপাদান তাই নয়, বরং এর খোসা দিয়ে তৈরি করা যায় আকর্ষণীয় ঘর সাজানোর আইটেমও। তাহলে খোসাগুলো ফেলে না দিয়ে এবার আপনিও বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনার পছন্দের যে কোনো জিনিস। আর জানেন তো, ঘর সাজিয়ে রাখলে মনও ভালো থাকে? তাই সাজিয়ে রাখুন ঘর, মনও থাকুক ভালো।

 

ছবিঃ Dream A Little Bigger, Youtube, Trendhunter, House Beautiful, deavita.net, consciouscraft.uk

The post ডিমের খোসা দিয়ে ঘর সাজানোর চমৎকার ৪টি আইডিয়া! appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/KdqfUuh
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...