Skip to main content

এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট | ঘর সাজানোর নান্দনিক আইডিয়া

সুঁই সুতা দিয়ে সেলাই করে কাপড়ে সুন্দর সুন্দর নকশা ফুটিয়ে তুলতে অনেকেই ভীষণ ভালোবাসেন। এই সেলাইয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ হলো সেলাইয়ের ফ্রেম। সাধারণত হাতে সেলাইয়ের জন্য আমরা নানা মাপের গোল ফ্রেম ব্যবহার করি। ক্ষেত্রবিশেষে চারকোনা ফ্রেমও ব্যবহার করা হয়। সেলাইয়ের জন্য দরকারি এই জিনিসটি দিয়ে কিন্তু বানানো যায় নানারকম নান্দনিক ঘর সাজানোর জিনিসও। ফ্রেমে রঙিন কাপড় আটকে অথবা এক রঙা কাপড়ে হ্যান্ড এমব্রয়ডারি করে নানা ধরনের ওয়াল হ্যাংগিং বানানো হয়। এটি বর্তমানে এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট নামে পরিচিত। এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই আপনার শৈল্পিক মনেরও প্রকাশ পায় এগুলোর মাধ্যমে। চলুন আজকে আমরা সেলাইয়ের ফ্রেম দিয়ে কিছু ঘর সাজানোর জিনিস বানানো শিখে ফেলি।

পকেট ওয়াল হ্যাংগিং

পকেট ওয়াল হ্যাংগিং দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এটি কাজেরও জিনিস বটে। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার সাথে সাথে এতে রাখা যাবে দরকারি জিনিসও। সহজলভ্য উপকরণে চটপট করে তৈরি করে ফেলা যায় এই হোম ডেকোর আইটেমটি।

বানাতে যা যা লাগবে
  • পছন্দমতো সাইজের সেলাইয়ের ফ্রেম (কাঠের হলে ভালো হয়)
  • দুটো এক রঙা অথবা প্রিন্টের কাপড় (ফ্রেম অনুযায়ী নিতে হবে)
  • হট গ্লু গান/কাপড়ের আঠা
  • লেইস, পুঁথি, আর্টিফিশিয়াল ফুল
যেভাবে বানাবেন

১। ফ্রেম থেকে ১/২ ইঞ্চি বড় মাপের গোল করে কাপড় কেটে নিন।

পকেট ওয়াল হ্যাংগিং

২। একটি গোল কাপড়ের টুকরোকে অর্ধেক করে ভাঁজ দিয়ে আয়রন করে নিন যেন মসৃণ প্রান্ত তৈরি হয়।

৩। ভাঁজ করা কাপড়টিকে আস্ত গোল কাপড়ের উপর বসিয়ে নিন।

৪। ফ্রেমের নিচের পার্টটি এই দুটি কাপড়ের নিচে মাঝ বরাবর বসিয়ে নিন। এরপর উপরের পার্টটি সাবধানের সাথে উপরে বসিয়ে আস্তে করে চাপ দিয়ে সেট করুন। ফ্রেমটিকে মাপমতো শক্ত করে নিন।

৫। ফ্রেম ও কাপড় উল্টিয়ে পেছন দিকে একটি গ্লু গানের সাহায্যে ফ্রেম ও কাপড়ে আঠা লাগিয়ে আটকে নিন। চেষ্টা করবেন যেন গ্লু ভেতর পর্যন্ত যায়। ফেব্রিক গ্লু হলে একইভাবে সেটাকেও ভাল করে লাগাবেন।

৬। বাড়তি কাপড়কে আঠা দিয়ে ফ্রেমের অংশের কাপড়ের সাথে আটকে দিন।

৭। সৌন্দর্যের জন্য লেইস, পুঁথি বা আর্টিফিশিয়াল ফুল লাগিয়ে নিন।

প্রিন্ট কাপড় দিয়ে পকেট ওয়াল হ্যাংগিং

ব্যস! খুব সহজে তৈরি হয়ে গেলো পকেট ওয়াল হ্যাংগিং। এর ভেতরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বা আর্টিফিশিয়াল ফুল রেখে সাজিয়ে ফেলতে পারেন আপনার দেয়ালের খালি অংশকে।

ডাবল হুপ ওয়াল হ্যাংগিং

অত্যন্ত নান্দনিক এই ওয়াল হ্যাংগিংটি বদলে দিতে পারে আপনার ঘরের পুরো চেহারাটাই। যারা হাতে সেলাই করতে পছন্দ করেন তারা সহজেই এটি বানিয়ে ফেলতে পারেন।

বানাতে যা যা লাগবে
  • দুই সাইজের সেলাইয়ের ফ্রেম (একটি ছোট, আরেকটি এটির থেকে কমপক্ষে ২ সাইজ বড়)
  • এক রঙের লিলেন কাপড় (সুতি কাপড় একটু কুঁচকে থাকে ফলে এটির নিখুঁত ভাব ফুটে ওঠে না। তাই সুতি কাপড় না নেয়াই ভালো)
  • পছন্দের ডিজাইনের টেম্পলেট
  • সুঁই ও পছন্দমতো রঙ এর সুতা
  • কেঁচি ও আঠা
যেভাবে বানাবেন

১। বড় ফ্রেম থেকে ৩-৪ ইঞ্চি বড় করে কাপড় কেটে নিন।

এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট ডিজাইন টেম্পলেট

২। প্রথমে কাপড়ের সাথে ছোট ফ্রেমটি লাগিয়ে নিন। এরপর ছোট ফ্রেমটি যেন মাঝ বরাবর পড়ে এমনভাবে বড় ফ্রেমটি সেট করে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন কাপড় কুঁচকে না যায় এবং ফ্রেম যেন অবশ্যই টাইট থাকে।

৩। ডিজাইনের টেম্পলেটটি দুই ফ্রেমের মাঝের জায়গায় ট্রেস করুন এবং সেলাই করুন। হ্যান্ড পেইন্টও করতে পারেন।

৪। পুরো ফ্রেম ও কাপড় উল্টিয়ে, পেছন থেকে ছোট ফ্রেমটির কাপড়ের মাঝ বরাবর কেঁচি দিয়ে ফুটো করে নিন এবং পেছনে আটকানো যায় এটুকু পরিমাণ কাপড় রেখে বাকিটা কেটে ফেলুন। ছোট ফ্রেমের পেছনের এই কাপড়কে আঠা বা সেলাইয়ের মাধ্যমে ফ্রেমের সাথে আটকে দিন।

৫। এখন মাঝখানে ফাঁকাসহ একটি সেটআপ হবে। বড় ফ্রেমের বাড়তি কাপড় এমনভাবে কাটুন যেন ফ্রেমের পেছনে আটকানোর মতো থাকে। এবার সেই কাপড়টিকে বড় ফ্রেমের সাথে আঠা বা সেলাইয়ের মাধ্যমে আটকে দিন।

এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট

ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো নান্দনিক ডাবল হুপ ওয়াল হ্যাংগিং। বাড়তি সৌন্দর্যের জন্য বড় ফ্রেমের নিচের দিকে পাটের দড়ি, রঙিন ফিতা ইত্যাদি দিয়ে ফুল তৈরি করে লাগিয়ে দিতে পারেন।

ক্লক উইথ এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট

ঘড়ি আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। কেমন হবে যদি একটি হাতে বানানো ঘড়ি থাকে আপনার দেয়ালে? নিজের নাম অথবা পছন্দের নকশা দিয়ে এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট করে খুব সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন ঘড়ি।

যা যা লাগবে
  • পছন্দমতো সাইজ অনুযায়ী কাঠের সেলাইয়ের ফ্রেম
  • সুঁই এবং যে কোনো রঙের সুতা
  • চটের কাপড়/ একটু মোটা কাপড়
  • ঘড়ির মেশিন ও কাঁটার সেট
  • কার্ডবোর্ড, আঠা, কেঁচি
  • পুঁথি, লেইস বা বোতাম
  • ডিজাইন টেম্পলেট
যেভাবে বানাবেন

১। প্রথমে ডিজাইনের টেম্পলেট তৈরি করুন। ঘড়ির জন্য গোল করে তার চারপাশে মার্কিং করে নিন। মাঝ বরাবর চিহ্ন দিন। চিহ্ন দেয়া না থাকলে পরবর্তীতে ঘড়ির মেশিন সেট করতে ঝামেলা হতে পারে।

২। একটু মোটা কাপড় বা চট নিন। কাপড়ের উপর টেম্পলেট দিয়ে ডিজাইন ট্রেস করে নিন। কার্ডবোর্ডকে ফ্রেমের সাইজের থেকে একটু ছোট করে কেটে নিন। যেন কার্ডবোর্ড এর টুকরাটি ফ্রেমের ভেতর ভালোভাবে বসে।

৩। শক্তভাবে ফ্রেম সেট করে ডিজাইন সেলাই করে নিন।

৪। সেলাই শেষ হলে ফ্রেমটি উল্টে নিন। ফ্রেমের পিছনে বাড়তি কাপড় এমনভাবে কাটুন যেন পেছনে কাপড় মোড়ানোর মত কিছুটা অংশ থাকে। কার্ডবোর্ড এর টুকরায় এবং কাপড়ের মাঝ বরাবর ফুটো করে নিন সাবধানে। এক্ষেত্রে একটু বড় করে ফুটো করবেন যেন মেশিনটি সেট করা যায়।

৫। কাপড়ের পেছনে আঠা দিয়ে কার্ডবোর্ড এর টুকরোটা বসিয়ে দিন। ঘড়ির মেশিন ও কাঁটা সেট করুন।

ক্লক উইথ এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট

৬। কাপড়ের বাড়তি অংশে সুঁই সুতা দিয়ে আলগা করে সেলাই দিন, শেষ প্রান্তে এসে সুতা টেনে দিলে কাপড়টি সুন্দর করে ভেতরের দিকে মুড়িয়ে যাবে। এটিকে গিঁট দিয়ে শক্ত করে নিন। প্রয়োজন হলে আঠা দিয়ে কাপড়টিকে কার্ডবোর্ড এর সাথে লাগিয়ে দিন।

ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো সেলাই ফ্রেমের একটি নান্দনিক ঘড়ি। ঘড়িটি দেখতে যেমন চমৎকার, তেমনই ঘরে নিয়ে আসে ভিন্নতা। তাছাড়া ডিজাইনের ক্ষেত্রে আপনার রঙিন কল্পনাই হয়ে উঠতে পারে এই ঘড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

 

ঘর সাজাতে যারা ভিন্ন কিছু পছন্দ করেন তাদের কাছে এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট বেশ জনপ্রিয়। সেই সাথে দেয়ালে এমন একটি হ্যাংগিং থাকলে ঘরেও আসে নান্দনিকতার ছোঁয়া। তাহলে আর দেরি কেন! পছন্দসই সাইজের ফ্রেম ও কাপড় দিয়ে আজই বানিয়ে ফেলুন নান্দনিক এই হোম ডেকোরটি!

ছবিঃ পিন্টারেস্ট, polkadotchair, Jessica Long Embroidery, Etsy

The post এমব্রয়ডারি হুপ আর্ট | ঘর সাজানোর নান্দনিক আইডিয়া appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/ADjbJg7
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...