স্কিনকেয়ার রুটিনে সময়ের সাথে সাথে যুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন প্রোডাক্টস। আর এখন তো সিরাম ব্যবহার করা বহুল প্রচলিত একটি স্কিনকেয়ার স্টেপ। আর হবেই বা না কেন, এর হাই কনসেনট্রেশনের অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট স্কিনের স্পেসিফিক প্রবলেমগুলো টার্গেট করে সেটার উপর কাজ করে। যেমন একনে ট্রিটমেন্টে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড অথবা স্কিন ব্রাইটেনিংয়ের জন্য ভিটামিন সি সিরাম। কিন্তু সিরাম নিয়ে অনেকেরই কমপ্লেইন থাকে যে ‘সিরাম ঠিকমতো কাজ করছে না’ বা ‘এত হাই প্রাইস দিয়ে কিনলাম সিরামটা, সে অনুযায়ী বেনিফিট তো পেলাম না’। তো আজকে আলোচনা করবো কেন সিরাম ঠিকমতো কাজ করছে না সে বিষয়ে।
সিরাম ব্যবহার করেও উপকার পাচ্ছেন না?
বয়স ২০+ হলে স্কিনকেয়ার রুটিনে সিরাম অ্যাড করতে পারবেন। কিন্তু সেই সাথে বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেনটেইন করা খুবই জরুরি। সিরাম অ্যাপ্লাই করলে দিনের বেলাতে সানস্ক্রিন স্কিপ করা যাবে না। সিরাম ব্যবহার করেও স্কিন প্রবলেমের সল্যুশন হচ্ছে না কেন, সেটা জানতে হলে পড়তে হবে আজকের ফিচার।
১. সঠিকভাবে প্রোডাক্টস লেয়ারিং করা
আমরা অনেকেই স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করি। তাড়াতাড়ি কোনোমতে অ্যাপ্লাই করতে পারলেই হলো! কিন্তু সব কিছুর তো একটা নিয়ম আছে। স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে স্টেপ ঠিকভাবে ফলে না করলে ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ভালোভাবে স্কিনে পেনিট্রেট হয় না। সবসময় হালকা বা থিন > ভারি বা থিক, এই ক্রম বা কনসেনট্রেশন অনুযায়ী প্রোডাক্ট ইউজ করতে হয়। কারণ যেটা লাইট সেটা যত তাড়াতাড়ি ফেইসে অ্যাবসর্ব হবে, থিক কনসেনট্রেশন হলে সেভাবে হবে না। তাই সিরাম ব্যবহারের আগে টোনার এবং পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। ক্লেনজার > টোনার > সিরাম > ময়েশ্চারাইজার- এই ক্রম ফলো করতে হবে।
২. সঠিক অ্যামাউন্ট ও সঠিক টাইমে অ্যাপ্লাই করা
আমাদের অনেকের মাঝে একটা ভুল ধারণা আছে যে বেশি প্রোডাক্ট লাগালে হয়তো স্কিন কন্ডিশন তাড়াতাড়ি ইম্প্রুভ হয়, কিন্তু সিরাম এর জন্য এটি সম্পূর্ণ বিপরীত। যেহেতু হাইলি কনসেন্ট্রেটেড তাই সামান্য পরিমাণে অ্যাপ্লাই করলেই হয়ে যায়। আর উচিত হলো দিনে দুইবার অর্থাৎ সকালে ও রাতে টাইপ বুঝে সিরাম ব্যবহার করা। রেটিনল সিরাম যেমন রাতে অ্যাপ্লাই করতে বলা হয়, দিনের বেলায় আপনি ভিটামিন সি বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ইউজ করতে পারেন। কিন্তু টাইম মেনটেইন করা মাস্ট। ইচ্ছেমতো কোনোদিন দিলেন তাও বেশি পরিমাণে, আবার কয়েকদিন দিলেন না; এতে কিন্তু কোনো বেনিফিট পাবেন না।
৩. টাইম গ্যাপ দেওয়া ও প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া
আগেই বলেছি যত তাড়াহুড়ো সব আমরা স্কিনকেয়ারের সময়ই করতে চাই। একটি প্রোডাক্ট দিয়েই সাথে সাথে আরেকটি লাগানো উচিত না। সেটা ভালোভাবে স্কিনে অ্যাবসর্ব হতে দিন, তারপর আরেকটি প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করুন। না হলে রিঅ্যাকশন হতেও পারে। অনেকেই যে বলে সিরাম দিলেই স্কিন জ্বালাপোড়া করে, এটাও একটা কারণ। সবই তো কেমিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট, তাই প্যাচ টেস্ট ও টাইম গ্যাপিং খুব অ্যাসেনশিয়াল।
৪. স্কিনের টাইপ বুঝে সিরাম বেছে নেওয়া
বর্তমানে এই সিচুয়েশনটা খুবই কমন যে কোনো একটা প্রোডাক্টের হাইপ উঠলেই সেটার পিছনে সবাই ছোটাছুটি করে! ধরা যাক, ভিটামিন সি সিরামে স্কিন ব্রাইট হয়, সবাই দিচ্ছে খুব ভালো কথা! আমাকেও দিতে হবে এমন একটা মনোভাব!! কিন্তু আগে তো বুঝতে হবে যে আপনার স্কিন কেমন, আপনার স্কিনে ভিটামিন সি স্যুট করবে কিনা। অনেকেরই কিন্তু ভিটামিন সি স্যুট করে না। আপনার স্কিন যদি ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড হয়, তাহলে তো আপনার দরকার হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বেইজড প্রোডাক্ট। তাই নিজের স্কিন টাইপ যাচাই করুন, বুঝুন স্পেসিফিক প্রবলেমটা কোথায়, তারপর সে অনুযায়ী প্রোডাক্ট ইউজ করুন।
৫. লো কোয়ালিটির প্রোডাক্ট সিলেক্ট না করা
এই যুগে এসে প্রোডাক্ট নকল করা খুবই সহজ। প্যাকেজিং কপি করে রেপ্লিকা বানানো হচ্ছে, তাই সব সময় অথেনটিক প্রোডাক্ট সেল করে এমন প্লেস থেকেই প্রোডাক্ট কিনবেন। সিরামের দাম একটু বেশি হয় এর ইফেক্টিভনেসের কারণে। ভালো মানের বা বেস্ট কোয়ালিটির স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করলে ত্বক ভালো থাকবে।
৬. ইনগ্রেডিয়েন্ট লিস্ট চেক করা
আপনার সিরামে যদি ইনগ্রেডিয়েন্টস যথেষ্ট পরিমাণে না থাকে, অবশ্যই সেটা ফেইসে ঠিকভাবে কাজ করবে না। সুতরাং প্রোডাক্ট কেনার আগে এতে থাকা লেবেল আগে চেক করে নিবেন। বিগেইনার হলে কম পারসেনটেজ দিয়ে স্টার্ট করাই ভালো। আস্তে আস্তে স্কিনকে অভ্যস্ত করাতে হবে, যদি রিঅ্যাকশন হয় তাহলে সেটা ইউজ করা বন্ধ করে দিবেন।
৭. ঠিকভাবে সিরাম স্টোর করা
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, বাট অনেকেই খেয়াল করে না। টেম্পারেচার যদি বেশি হয়, সিরামের ইফেক্টিভনেস কমে যায়, না হয় অক্সিডাইজ হয়ে যায়। তাই ঠান্ডা জায়গায় মানে সূর্যের আলো থেকে দূরে এগুলো স্টোর করা উচিত। আর প্রোডাক্টের প্যাকেজিংয়ে লেখা থাকে কীভাবে সেটা স্টোর করতে হবে।
৮. এক্সপায়ার্ড সিরাম ব্যবহার না করা
প্রোডাক্ট কেনার আগে ভালোভাবে দেখে নিন মেয়াদ আছে কিনা! যদি কোনো প্রোডাক্ট ৬-১২ মাস অব্যবহৃত থাকে বা ডেট এক্সপায়ার্ড হয়ে যায়, তাহলে সেটি ইউজ করবেন না। বোতলের মুখ খুলে ফেলার পরে ৬ মাসের মধ্যে শেষ করা ভালো। এক্সপায়ার্ড হলে প্রোডাক্টের ভেতর কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন হয় যা ব্যবহারে আপনার স্কিনে বার্নিং সেনসেশন হতে পারে।
৯. আর্টিফিসিয়াল ফ্রেগ্রেন্সযুক্ত সিরাম ব্যবহার না করা
অনেকেই কালারড ও ফ্রেগ্রেন্সযুক্ত প্রোডাক্ট পছন্দ করেন। কিন্তু যাদের স্কিন সেনসিটিভ, তাদের ক্ষেত্রে আর্টিফিসিয়াল ফ্রেগ্রেন্সযুক্ত সিরাম ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। এতে স্কিন প্রবলেম বাড়তে পারে।
এসব টুকিটাকি বিষয় আমরা অনেকেই খেয়াল করি না, তাই সিরাম ব্যবহার করেও উপকার পাই না। আশা করি এই লেখাটি পড়ে সিরাম নিয়ে আপনাদের যত কমপ্লেইন আছে, সেটা কমে যাবে! অথেনটিক সিরাম পাবেন সাজগোজেই। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ
The post সিরাম ব্যবহার করেও স্কিন প্রবলেমের সল্যুশন হচ্ছে না? appeared first on Shajgoj.
from Shajgoj https://ift.tt/2iRw4QO
Munia
Comments
Post a Comment