Skip to main content

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন এর সুবিধা ও কৌশল

বেশ কিছুদিন ধরেই ইউটিউব বা ইন্সটাগ্রামে ১০টা রিলস দেখলে অন্তত একটা তো চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি সম্পর্কেই থাকে! স্কিন ও হেয়ার নিয়ে নতুন যুগের নারীদের সচেতনতার এক দারুণ উদাহরণ এই পদ্ধতি, যেখানে কোনও রকমের তাপ ব্যবহার ছাড়াই চুলে দারুণ লুক পাওয়া যায়। চুল যেমন এখানে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে একইসাথে নিশ্চিন্তে করা যায় স্টাইলিং!

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়?

আজকাল হিটলেস কার্লিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ইউনিভার্সিটি ও অফিস যাওয়া নারীদের মধ্যে। যদি চুলকে সুরক্ষিত রেখে স্টাইলিং করা যায়, তাহলে কে আর এই সুযোগ হাতছাড়া করে! চলুন দেখে নিই কেনো এই হিটলেস কার্লিং এখন এতো বেশি আলোচনায় :

১) চুলের ক্ষতি রোধ: হেয়ার স্টাইলিংয়ে তাপের ব্যবহার চুলের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, যেমন – চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ভেঙে যাওয়া, আগা ফেটে যাওয়া বা চুল পড়া। হিটলেস কার্লিংয়ে তাপের ব্যবহার না হওয়ায় চুল সুরক্ষিত থাকে।

২) সহজ ও সুবিধাজনক: রাতে ঘুমানোর আগে হিটলেস পদ্ধতিতে চুল সেট করলে সকালে আলাদা করে স্টাইলিংয়ের সময় লাগে না। ব্যস্ত সকালে এটি অনেক সুবিধাজনক।

৩) কম খরচ: যেহেতু অতিরিক্ত কোনো হিটিং টুল বা বিদ্যুৎ দরকার হয় না, তাই এটি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। কিন্তু স্টাইলিং একশো-তে একশো!

৪) বিভিন্ন স্টাইল: হিটলেস কার্লিং পদ্ধতিতে চুলে বিভিন্ন ধরনের কার্ল বা ওয়েভ তৈরি করা যায়, যেমন – টাইট কার্ল, লুজ ওয়েভ, বাউন্সি কার্ল ইত্যাদি।

হিটলেস কার্লিং কীভাবে করা হয়?

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। চলুন জেনে নিই সহজ ও জনপ্রিয় কিছু পদ্ধতি যা আপনি নিজেই বাড়িতে চেষ্টা করতে পারেন।

১. হিটলেস কার্লিং রড বা রিবন:
  • একটি বিশেষ ধরনের ফোমের তৈরি রড বা রিবন ব্যবহার করা হয়।
  • শ্যাম্পু করা হালকা ভেজা বা শুকনো চুলে এই রডটি মাথার উপর স্থাপন করা হয়।
  • এবার চুলের ছোট ছোট অংশ রডের চারপাশে পেঁচিয়ে ক্লিপ বা রাবার ব্যান্ড দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়।

সারারাত এভাবে রেখে সকালে রড খুলে ফেললেই সুন্দর কার্ল তৈরি হয়ে যায়। এটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়।

২. ব্রেইড বা বেণিঃ

  • চুলকে হালকা ভিজিয়ে নিয়ে কয়েকটি অংশে ভাগ করে টাইট করে বেণি করে নিন।
  • যতগুলো বেণি করবেন, কার্ল তত টাইট হবে।
  • সারারাত এভাবে রেখে সকালে বেণি খুলে ফেললেই সুন্দর ঢেউ খেলানো চুল পাওয়া যাবে।
৩. রোলার :
  • চুলের ছোট ছোট অংশ রোলারের চারপাশে পেঁচিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকানো হয়।
  • কিছুক্ষণ বা সারারাত রেখে দিলে চুল কার্ল হয়ে যায়।
  • রোলারের আকার অনুযায়ী কার্লের ধরন ভিন্ন হয়।
৪. বান (খোঁপা):

  • ভেজা চুলকে উঁচু করে খোঁপা করে নিন।
  • একটি বা দুটি খোঁপা করতে পারেন।
  • যত ছোট খোঁপা হবে, কার্ল তত টাইট হবে।
  • কয়েক ঘণ্টা বা সারারাত এভাবে রেখে সকালে খোঁপা খুলে দিলেই হালকা ওয়েভ তৈরি হবে।
৫. ববি পিন বা হেয়ার ক্লিপ:
  • চুলের ছোট ছোট অংশ আঙুলে পেঁচিয়ে একটি রিং তৈরি করুন।
  • এই রিংটি ববি পিন বা ক্লিপ দিয়ে মাথার সাথে আটকে দিন।
  • সব চুল এভাবে আটকে কিছুক্ষণ রেখে দিলেই কার্ল তৈরি হবে।

হিটলেস কার্লিং এর সুবিধা:

• চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: তাপের ব্যবহার না হওয়ায় চুলের ড্যামেজ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।

• সময় সাশ্রয়ী: রাতে চুল বেঁধে ঘুমালে সকালে উঠে দ্রুত স্টাইল করা যায়; সময় বাঁচে।

• বহনযোগ্য: যেকোনও জায়গায় সহজে স্টাইলিং করা যায়, এমনকি কোথাও ঘুরতে গেলেও!

• দামে সস্তা: মাস শেষে প্রচুর বিদ্যুৎ বিল বা প্রত্যেকবার প্রচুর প্রোডাক্ট কিনতে হচ্ছে না!

হিটলেস কার্লিং এর অসুবিধা:

ফলাফল সময়সাপেক্ষ:

হিট স্টাইলিংয়ের মতো তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া যায় না।

ঘুমের অসুবিধা:

কিছু পদ্ধতি যেমন – রড বা রোলার লাগিয়ে ঘুমানো অস্বস্তিকর হতে পারে।

চুলের ধরন:

সব ধরনের চুলে একই রকম ফলাফল নাও আসতে পারে।

এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে খুব টাইট করে চুল পেঁচিয়ে রাখার ফলে চুলে ব্রেকেজ বা চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তারপরও সব মিলিয়ে, হিটলেস কার্লিং হল চুলের যত্ন নিয়ে স্টাইল করার একটি দারুণ উপায়। এটি চুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রেখে সুন্দর কার্ল পেতে সাহায্য করে। আপনিও যদি চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর রেখে স্টাইলিং করতে চান হিটলেস কার্লিং একবার ট্রাই করে দেখতেই পারেন।

ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ

The post চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন এর সুবিধা ও কৌশল appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/xl7d4Pa
Jannatul Kawser

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...