Skip to main content

মেকআপ আইটেম আসলে কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়?

আমাদের প্রায় প্রত্যেকের কাছেই কিছু না কিছু বেসিক মেকআপ আইটেম থাকে। তবে মেকআপ আইটেম কিনে প্রথমবার ব্যবহারের পর সেগুলোকে ঠিক আর কতদিন ব্যবহার করা যাবে তা অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না। অনেক সময় প্রথমবার প্যাকেজিং খুলে ফেলার পর দীর্ঘদিন ধরে সেই একই মেকআপ আইটেম ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই প্রথমবার ব্যবহারের পর প্রসাধন সামগ্রীর কতদিন মেয়াদ থাকে এটা জানা খুবই জরুরী।

আবার অনেক সময় দেখা যায় কেনার পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও হয়তো মেকআপ আইটেমটি ব্যবহার করাই হল না। সেক্ষেত্রে ঠিক কতদিন সেটি ব্যবহার উপযোগী থাকে সেটিও জানার বিষয়। আজকের ফিচারটি মূলত এ বিষয় নিয়েই।

মেকআপ আইটেম কতদিন ব্যবহার উপযোগী থাকে

বেইজ মেকআপ আইটেম

লিকুইড ফাউন্ডেশন:

লিকুইড ফাউন্ডেশন তরল জাতীয় পদার্থ তাই এর উপাদান তালিকায় অ্যাকুয়া বা পানি থাকে। তাই এতে খুব সহজেই মাইক্রোবিয়াল ইনফেকশন অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস অথবা ফাংগাস আক্রমণের শিকার হতে পারে। এর ফলে লিকুইড ফাউন্ডেশনের শেল্ফ লাইফকমে যায়। তাই লিকুইড ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে সাধারণত মাত্র এক বছর বা তার কিছু বেশি সময় ব্যবহার করা যায়।

পাউডার ফাউন্ডেশন:

পাউডার ফাউন্ডেশন যেহেতু শুষ্ক উপাদানের হয়ে থাকে তাই এটি লিকুইড ফাউন্ডেশনের চেয়ে কিছু সময় বেশি স্টোর করে রাখা যায়। সাধারণত পাউডার ফাউন্ডেশন প্রায় ১৮ মাস বা ১বছর ৬/৭ মাসের মধ্যে সংরক্ষণ করে রেখে ব্যবহার করা উচিত।

 

ফেইস পাউডার ও লুজ পাউডার:

এগুলোও যেহেতু শুষ্ক উপাদানের সংমিশ্রণেই তৈরি হয়, তাই এগুলোকেও খোলার পর সর্বোচ্চ ২ বছরের মধ্যে ব্যবহার করে ফেলা উচিত। ২ বছর পর্যন্ত যেকোনো ব্র্যান্ডের ও ফর্মুলেশনের পাউডারই বেশ চমৎকার থাকে। তবে এর উর্ধ্বে আর স্টোর করে রাখা ঠিক নয়।

কনসিলার :

কনসিলার হলো স্কিন-টোন-স্পেসিফিক ধরনের মেকআপ সামগ্রী। ত্বকের যে কোন প্রকার সমস্যা ও অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব এড়াতে চাইলে ১ থেকে ১.৫ বছর পর্যন্ত একটি কনসিলার ব্যবহার করা উচিৎ। তার বেশি সময় ধরে একই কনসিলার ব্যবহার করলে সেটা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।

লিপস্টিক

লিকুইড লিপস্টিক:

ম্যাট ফর্মুলেশন ও সহজ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য লিকুইড লিপস্টিকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যেহেতু উপাদানগুলো লিকুইড ফর্মুলেশনে থাকে এবং অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রীর তুলনায় লিপস্টিক বারবার ব্যবহার হয়ে থাকে তাই বাইরের আবহাওয়াতে খুব সহজেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে ওঠে। তাই দুঃখজনক হলেও সত্যি যে লিকুইড লিপস্টিক মাত্র ৬-৭ মাসের মতো সংরক্ষণ করে রাখা যায়।

বুলেট লিপস্টিক:

যেহেতু বুলেট লিপস্টিক গুলো লিকুইড লিপস্টিকের মতো একদম তরল নয় তাই এগুলোতে বাইরের পরিবেশের বিভিন্ন মাইক্রোঅর্গানিজম খুব সহজে সংক্রমণ করতে পারে না। এজন্য বুলেট লিপস্টিকগুলো সাধারণত ১৮ মাস থেকে প্রায় দুই বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব।

চোখের মেকআপ আইটেম

মাসকারা:

প্রসাধনী সামগ্রীর মধ্যে সম্ভবত সব থেকে কম শেল্ফ লাইফ হয়ে থাকে মাসকারার। যেহেতু মাসকারাকে চোখের পাপড়ির মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল অংশে ব্যবহার করা হয় তাই একবার খোলার পর থেকে মাত্র ৩ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

আইলাইনার, কাজল :

মাসকারার মতো আইলাইনার ও কাজল, এই দুটিকেও চোখের মত সংবেদনশীল অঙ্গে ব্যবহার করা হয়। তাই একই আইলাইনার ও কাজল ৩ মাসের বেশি আর ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে পেন্সিল আইলাইনার৷ যেহেতু আইলাইনার চোখের পাতার উপরে ব্যবহার করা হয় তাই এটি সরাসরি চোখের ফ্লুইডের সংস্পর্শে আসেনা। সেজন্য আইলাইনারটি পেন্সিল ফর্মে হলে চিন্তার কিছু নেই। একই পেন্সিল আইলাইনার টানা ২ বছর পর্যন্ত নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু লিকুইড আইলাইনার ৩ থেকে ৬ মাসের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।

আইশ্যাডো:

পাউডার আইশ্যাডোর ক্ষেত্রে মেয়াদকাল হবে ২ বছর পর্যন্ত এর শুষ্ক ফর্মুলেশনের জন্য। তবে অনেকেই দেখা যায় মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও এটি ব্যবহার করছেন। কারণ মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও এর টেক্সচার, রঙ ইত্যাদির তেমন কোনও পরিবর্তন হয় না। কিন্তু এটি অনুচিত।

যে কোন মেকআপ আইটেম কেনার সময় মেয়াদ উত্তীর্ণের সময় দেখে তারপর কিনতে হবে। প্রথমবার প্যাকেজিং খুলে ফেলার পর থেকে সেই প্রোডাক্টের আর কতোদিন শেল্ফ লাইফ থাকবে নোট ডাউন করে বা প্যাকেজিং এর গায়ে লিখে রাখতে পারেন। কখনোই শেল্ফ লাইফের চেয়ে বেশিদিন একই মেকআপ আইটেম ব্যবহার করা উচিত নয়। তাহলেই আপনার ত্বক থাকবে সুন্দর ও সুস্থ।

সোর্স- ফেমিনা ইন্ডিয়া
ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ

The post মেকআপ আইটেম আসলে কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/wOX1GTm
Jannatul Kawser

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...