Skip to main content

গরমে মাথার ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে কী করবেন?

বসন্ত শেষে প্রকৃতিতে এসেছে গ্রীষ্মকাল, সেই সাথে নিয়ে এসেছে প্রচন্ড গরম, তাপ, ঘাম ও অত্যধিক আর্দ্র আবহাওয়া। এই গরমে মাথার ত্বকের সংক্রমণ বা স্ক্যাল্প ইনফেকশন একটি সাধারণ সমস্যা। প্রচন্ড গরমে মাথার ত্বক ঘেমে থাকে, যার ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস খুব সহজেই আক্রমণ করে বসে।

স্ক্যাল্প ইনফেকশনের ফলে স্ক্যাল্প চুলকানো, লালচে ভাব, খসখসে ভাব দেখা দেয় এমনকি চুল পড়া বেড়ে যায়। এছাড়াও চুল রুক্ষ, শুষ্ক, ফ্রিজি হয়ে যাওয়ার সমস্যা তো আছেই। আজকের ফিচারে মাথার ত্বকের সংক্রমণ, এর কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ নিয়ে জানবো।

গরমে মাথার ত্বকের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ

১. স্ক্যাল্প ঘেমে থাকা

প্রচন্ড আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে আমাদের শরীর খুব সহজেই ঘেমে যায়। স্ক্যাল্পও দ্রুত ঘেমে যায় এবং চুলের কারণে এই ঘাম সহজে শুকানো অনেক সময় সম্ভব হয়না। এতে মাথার ত্বক চিটচিটে হয়ে পড়ে এবং সেখানে খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম আক্রমণ করে৷ এজন্য গরমে মাথার ত্বকের সংক্রমণ বেড়ে যায়।

২.ব্যাকটেরিয়াল স্ক্যাল্প ইনফেকশন

গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের জন্য বেশ উপযোগী। বিশেষত স্ট্যাফাইলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই মাথার ত্বককে আক্রমণ করে যার ফলে মাথার ত্বকে প্রদাহ, ছোট ছোট বাম্পস, চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয়।

৩. ফাংগাল ইনফেকশন

অতিরিক্ত গরমে আর্দ্রতা ও ঘামের জন্য মাথার ত্বকে ফাংগাল আক্রমণ দেখা দেয়। যার ফলে মাথার ত্বকে দেখা দেয় খুশকি, সেবোরিক ডার্মাটাইটিস ইত্যাদি।

৪. সঠিকভাবে মাথার ত্বক পরিষ্কার না করা

গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য স্ক্যাল্প খুব সহজেই ঘেমে যায় ও আগের তুলনায় বেশি পরিমাণে তেল উৎপাদন করে, যা হেয়ার ফলিকল কে আটকে দেয়। এছাড়াও ঘাম ও তেল খুব সহজেই ময়লা ও জীবাণুকে আকর্ষণ করে, তাই স্ক্যাল্প গরমের দিনে খুবই দ্রুত নোংরা হয়ে বিভিন্ন ইনফেকশন দেখা দেয়। এজন্য নিয়মিত ভালো ক্লেনজার বা শ্যাম্পু দিয়ে স্ক্যাল্প পরিষ্কার করা উচিত, তা না হলে ইনফেকশনের সমস্যা বেড়ে যায়।

৫. দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকা

রোদের প্রখর তাপের নীচে সরাসরি দীর্ঘক্ষণ থাকলে তা শরীরের ত্বকের পাশাপাশি মাথার ত্বকেরও ক্ষতি করে। এর ফলেও স্ক্যাল্পে ইনফেকশন দেখা দেয়।

এছাড়াও ত্বকে বিভিন্ন এলার্জির সমস্যার জন্যেও স্ক্যাল্প ইনফেকশন হতে পারে।

মাথার ত্বকের সংক্রমণ থেকে পরিত্রাণের উপায়

১. মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে ফাংগাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।

২. গরমকালে যেহেতু খুব দ্রুতই মাথার ত্বক ঘেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই এ সময় একদিন পরপর বা প্রতিদিনই শ্যাম্পু করার প্রয়োজন হতে পারে। এটি নির্ভর করে কতো দ্রুত আপনার স্ক্যাল্প নোংরা হয়ে পড়ছে তার উপর।

৩. যেহেতু গরমে শ্যাম্পু করার পরিমাণ বাড়াতে হয় তাই এসময় একটি মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। এতে মাথার ত্বক ও চুলের ন্যাচারাল অয়েল দূর হয়ে চুল ড্রাই হয়ে যাবে না।

৪. নিজের চিরুনি, হেয়ার বনেট, তোয়ালে, বালিশ ইত্যাদি জিনিসগুলো কারো সাথে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়তে পারে।

৫. যেহেতু ভেজা ও আর্দ্র ত্বক খুব সহজেই সংক্রমিত হয় তাই গোসলের পর ভেজা চুল এবং ঘামে ভেজা চুল খুব দ্রুত শুকিয়ে নিতে হবে।

৬. সরাসরি রোদের আলো থেকে মাথার ত্বককে দূরে রাখতে হবে। মাথার ত্বক সরাসরি যেনো সানবার্নের শিকার না হয় সেজন্য মাথার ত্বক স্কার্ফ, পাতলা কাপড়, হিজাব, হ্যাট অথবা ছাতা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে৷

৮.প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এধরনের খাবার দেহের ইমিউনিটি বাড়ায় ও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।

আশা করি উপরের টিপস গুলো মেনে চলে এই গরমেও আপনার স্ক্যাল্প থাকবে একদম ফ্রেশ আর চুল থাকবে সুন্দর ও ঝলমলে। তবে যদি সংক্রমণ অতিমাত্রায় বেড়ে যায় তাহলে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

ছবি- সাটারস্টক

The post গরমে মাথার ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে কী করবেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/e1JK6jl
Jannatul Kawser

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...