Skip to main content

রমজানে ব্যায়াম | কখন, কেন এবং কীভাবে?

রমজানে ব্যায়াম করা নিয়ে অনেকেরই দ্বিধা থাকে। সারাদিন রোজা রাখার পর দেহের ক্লান্তি, পানি ও খাবারের অভাবের কথা চিন্তা করে অনেকেই এই সময়ে ব্যায়াম করা বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা এবং উপযুক্ত সময় বেছে নিলে রোজার মধ্যেও সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা সম্ভব। আজ আমরা জানবো, কীভাবে রমজান মাসেও ব্যায়াম করা যায় এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ।

সাবা একজন কর্মজীবী নারী। প্রতিদিন সকালে যোগব্যায়াম করা তার অভ্যাস। তবে রমজান শুরু হতেই সে সিদ্ধান্ত নেয় ব্যায়াম বন্ধ রাখবে। তার মনে হয়, সারাদিন রোজা রেখে শরীরচর্চা করলে ক্লান্তি বেড়ে যাবে, দুর্বল হয়ে পড়বে। কিন্তু প্রথম এক সপ্তাহের মধ্যেই সে বুঝতে পারে, শরীর দুর্বল লাগছে, মনও চঞ্চল হয়ে উঠেছে। সারাদিন অফিসের চেয়ারে বসে থাকার কারণে পেশিতে ব্যথা অনুভব করছে। এভাবে চলতে থাকলে রমজানের শেষে সে আরও অলস হয়ে পড়বে। তখনই সে ভাবতে শুরু করে, রমজান মাসে কোন সময়টি ব্যায়াম করার জন্য উপযুক্ত?

রমজানে ব্যায়াম করা দরকার কেন ?

সাবা তার ফিটনেস মেন্টরের সঙ্গে পরামর্শ করলে তিনি জানান, রোজার সময় ব্যায়াম বন্ধ রাখা উচিত নয়, বরং শরীরের জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ।চলুন জেনে নিই, রমজানে ব্যায়াম কী ধরনের উপকার করে।

১) শরীরের শক্তি ধরে রাখা – দীর্ঘ সময় উপবাসের কারণে পেশির ক্ষয় হতে পারে। হালকা ব্যায়াম করলে পেশি সংরক্ষিত থাকে।

২) শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি – ব্যায়াম করলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, ফলে ক্লান্তি কম অনুভূত হয়।

৩) ওজন নিয়ন্ত্রণ – রোজার সময় অনেকেরই বেশি খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যায়। ব্যায়াম করলে অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন হয় এবং শরীর সজীব থাকে।

৪) মানসিক প্রশান্তি – ব্যায়াম মানসিক চাপ কমায় এবং ভালো ঘুমে সহায়তা করে।

রোজায় কখন ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো?

রোজার সময় ব্যায়ামের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সময় সবচেয়ে উপযুক্ত।

১)ইফতারের ৩০-৪৫ মিনিট আগে

এ সময় শরীরে ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়া সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করে। তবে হালকা ব্যায়াম করা উচিত, যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং।

২) ইফতারের ১-২ ঘণ্টা পর

এটি সবচেয়ে ভালো সময়, কারণ শরীরে এনার্জি ফিরে আসে এবং ব্যায়ামের জন্য যথেষ্ট শক্তি পাওয়া যায়। এ সময় কার্ডিও বা ওয়েট ট্রেনিং করা যেতে পারে।

৩) সেহ্‌রির আগে (ভোর রাত)

যারা খুব সকালের দিকে ব্যায়াম করতে অভ্যস্ত, তারা সেহ্‌রির আগে হালকা স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করতে পারেন। তবে ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো।

রমজানে ব্যায়াম কী ধরনের হওয়া উচিত ?

রোজার সময় ভারী ব্যায়াম না করে হালকা ও পরিমিত ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো। যেমনঃ

স্ট্রেচিং ও যোগব্যায়াম – পেশির নমনীয়তা বাড়ায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।

হালকা কার্ডিও – ধীর গতিতে হাঁটা বা জগিং করা।

বডি ওয়েট এক্সারসাইজ – পুশ-আপ, স্কোয়াট, লাংজ ইত্যাদি হালকা মাত্রায় করা যেতে পারে।

রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং – অল্প ওজন ব্যবহার করে ব্যায়াম করা যেতে পারে, তবে ভারী ওজন এড়িয়ে চলা উচিত।

সাবা সিদ্ধান্ত নেয়, সে ইফতারের এক ঘণ্টা পর ৩০ মিনিট করে হালকা ব্যায়াম করবে। প্রথম দিনই সে অনুভব করলো, ব্যায়াম করার পর তার মন ও শরীর অনেক ভালো লাগছে। ধীরে ধীরে এটি তার অভ্যাসে পরিণত হয়। রমজান শেষ হলে সে অনুভব করে, তার শরীর আগের চেয়ে বেশি ফিট ও শক্তিশালী। এখন সে জানে, রোজা কোনো বাধা নয়, বরং সঠিক পরিকল্পনায় এই সময়টাকেও স্বাস্থ্যকরভাবে কাজে লাগানো সম্ভব।

রোজায় ব্যায়াম বন্ধ না রেখে বরং সময় ও ধরন ঠিকমতো বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। হালকা ব্যায়াম করলে শরীর ও মন দুই-ই সুস্থ থাকবে। তাই সাবার মতো আপনি রোজায় ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ছবি-সাটারস্টক

The post রমজানে ব্যায়াম | কখন, কেন এবং কীভাবে? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/onltL7V
Jannatul Kawser

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...