Skip to main content

ডার্ক চকোলেট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কি?

ডার্ক চকোলেট খাওয়া অনেকের জন্যই হতে পারে একটি নিত্যদিনের অভ্যাস। তবে, এটি শুধুমাত্র সুস্বাদু নয়, নতুন কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারীও হতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ডার্ক চকোলেট সাহায্য করতে পারে। অনেকেই জানেন না যে ডার্ক চকোলেট আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী, তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো এই বিষয় নিয়েই। এই মজাদার ফুড আইটেমটি কীভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে, চলুন জেনে নেই….

গবেষণার ফলাফল

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা সপ্তাহে অন্তত ৫ বার ডার্ক চকোলেট খান, তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২১% কম থাকে। এই গবেষণাটি The BMJ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নতুন তথ্য দিয়েছে। এই বিশেষ ধরনের চকোলেটের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

ডার্ক চকোলেট এর উপকারিতা

এটি কেন এত উপকারী, সেটা বোঝার জন্য আমাদের একটু বিশদভাবে জানতে হবে। ডার্ক চকোলেটের মধ্যে যে উপাদান রয়েছে, সেগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো। বিশেষ করে কোকো নামক উপাদানটি, যেটি ডার্ক চকোলেটের প্রধান উপাদান। কোকোতে রয়েছে অনেক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্টস, যার মধ্যে অন্যতম পলিফেনলস ও ফ্ল্যাভোনয়েডস। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়ক।

ডার্ক চকোলেটের মধ্যে উপস্থিত এই ফ্ল্যাভোনয়েডস, যেমন ক্যাটেচিন, অ্যানথোসায়ানিন, এবং প্রো-অ্যানথোসায়ানিডিনস, আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলো আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, গ্লাইসেমিক রেসপন্স, প্লেটলেট ফাংশনিং ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কোকো পলিফেনলস আমাদের অন্ত্রের প্রদাহও কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরের অন্যান্য প্রদাহজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

মস্তিষ্কের উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে?

এই চকোলেট খাওয়ার আরেকটি বড় উপকারিতা হলো এর প্রভাব মস্তিষ্কের ওপর। ডার্ক চকোলেটের ফ্ল্যাভোনয়েডস মস্তিষ্কের সেলগুলোকে সুরক্ষা দেয় এবং তাদের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী হয় এবং স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি কমে। এর বিশেষ প্রভাব Alzheimer’s এবং Parkinson’s রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই এটি খাওয়া শুধু শরীরের জন্যই নয়, মস্তিষ্কের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।

ডার্ক চকোলেট ও ডায়াবেটিস

এখন আসি ডার্ক চকোলেট আর ডায়াবেটিসের সম্পর্ক নিয়ে। ডার্ক চকোলেটের মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েডস আমাদের শরীরের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে আমাদের শরীর গ্লুকোজের সাথে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ডার্ক চকোলেটের সঠিক পরিমাণে খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

এছাড়া, বিশেষজ্ঞের মতে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রতিদিন ৩০-৬০ গ্রাম ডার্ক চকোলেট খাওয়া নিরাপদ। তবে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে সঠিক প্রকারের চকোলেট খাওয়া উচিত, যাতে অতিরিক্ত চিনি বা কৃত্রিম উপাদান না থাকে। সাধারণ চকোলেটের মধ্যে অনেক চিনি থাকে, যা ডায়াবেটিসে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং, চকোলেট নির্বাচন করার সময় তার কোকো কনটেন্ট দেখতে হবে, যাতে তা সর্বোচ্চ উপকারিতা দিতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে

আমাদের দেশে অনেকেই এটি খেতে পছন্দ করেন না কারণ এটি তুলনামূলকভাবে তিক্ত হতে পারে। তবে, অনেকেই জানেন না যে ডার্ক চকোলেটের মধ্যে থাকা পলিফেনলস ও ফ্ল্যাভোনয়েডস তাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী! উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তি যিনি প্রতিদিন এটি খান, তার গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞ, ডাঃ পদ্মিনী BV বলেছেন, “ডার্ক চকোলেটের মধ্যে থাকা কোকো পলিফেনলস আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী, বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের জন্য।

সর্বশেষে বলতে চাই, ডার্ক চকোলেট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে, তবে সঠিক পরিমাণে ও সঠিক ধরনের চকোলেট খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে কয়েকবার পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকোলেট উপভোগ করা যেতে পারে, তবে এটি কোনো চিকিৎসার বিকল্প নয়। সুস্থ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কিন্ত কোনো বিকল্প নেই।

ছবি- সাটারস্টক

The post ডার্ক চকোলেট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কি? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/vwbVpG4
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...