Skip to main content

গরম পানি চুল ও ত্বকের জন্য আসলেই কি ক্ষতিকর?

ঋতু পরিবর্তনের সময় চুল ও ত্বকের যত্নে রাখতে হয় বাড়তি সাবধানতা। অনেকেই গরম পানি গোসলের সময় ব্যবহারে বেশ উপভোগ করেন, দেখা যায় এই ওয়েদার চেঞ্জের সময় অনেকেই কিন্তু গরম পানি দিয়ে শাওয়ার নিচ্ছেন। গরম পানি উষ্ণতা দিলেও তার তাপমাত্রা হতে হবে সঠিক। তা না হলে দেখা দিবে চুল ও ত্বকে বিপত্তি। এই বিষয়টি কিন্তু অনেকেই জানেন না! গরম পানি চুল ও ত্বকের কি আসলেই ক্ষতিসাধন করে? এই প্রশ্নেরই উত্তর থাকছে আজকের ফিচারে!

গরম পানি চুল ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর কি?

গোসলের সময় বা ত্বকে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করা হতে পারে ত্বক ও চুলের জন্য ক্ষতিকর। অনেকেই হয়তো জেনে বেশ অবাক হচ্ছেন, ভাবছেন এটাই বা কীভাবে সম্ভব। সম্ভব, যদি কেউ বেশ গরম বা অতিরিক্ত গরম পানি ত্বক ও চুলে ব্যবহার করেন তবে তা ধীরে ধীরে ত্বক ও চুলকে ড্যামেজ করে ফেলে। হট ওয়াটার শাওয়ারে যে আরাম পাওয়া যায়, তা আসলে লুকানোর কিছু নেই। হালকা কুসুম গরম পানি মুহূর্তেই শরীরের ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা এ কথাও বলেন যে গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের কিন্তু কোনো উপকার নেই। অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের তেল ও আর্দ্রতা দূর করে ত্বককে আরও শুষ্ক করে তুলতে পারে।

স্কিন ব্যারিয়ারকে কীভাবে ড্যামেজ করে গরম পানি?

বেশ গরম পানি সরাসরি ব্যবহার করা হলে তা স্কিন ব্যারিয়ারকে ড্যামেজ করে, অনেক রিসার্চে এই তথ্য উঠে এসেছে। স্কিন ব্যারিয়ার মূলত ত্বকের মৃত কোষ দ্বারা তৈরি। এ কোষগুলো সেরামাইড, ফ্যাটি অ্যাসিড ও কোলেস্টেরলের মতো চর্বিযুক্ত পদার্থের একটি ঘন ম্যাট্রিক্স দিয়ে গঠিত যাকে লিপিড বলা হয়। লিপিড ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং বাইরের অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর উপাদান থেকেও ত্বককে রক্ষা করে। স্কিন ব্যারিয়ারের ওপরে থাকা পাতলা স্তর অ্যাসিড ম্যান্টল নামে পরিচিত কারণ এতে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড। ত্বকের ঘামে থাকা অ্যাসিড ও ত্বকের তৈলাক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় সেবাম। আর এই সেবাম আর্দ্রতাকে ধরে রাখে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের সেবাম সরে যায় এবং যার ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। এছাড়া স্কিন ব্যারিয়ারের লিপিডগুলোর গঠনও নষ্ট হতে পারে, যার ফলে সহজেই তা ড্যামেজ হয়। এছাড়াও গরম পানি ত্বকের পিএইচ লেভেলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, এবং আদর্শ মাত্রা ৫.৫ এর থেকে বেশি হয়ে যায়। এর ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে।

চুলের উপর গরম পানির প্রভাব

ত্বকের মতো গরম পানি চুলকেও শুষ্ক, রুক্ষ ও ড্যামেজ করে তুলতে পারে। আমাদের ত্বক থেকে যেমন সেবাম নির্গত হয়ে ত্বককে আবৃত করে রাখে, তেমনি চুলকেও মাথার ত্বকের সেবাম আবৃত করে রাখে, তাই চুল সুন্দর ঝলমলে দেখায়। কিন্তু গরম পানির ব্যবহার চুলের উপর থেকে এই সেবামের লেয়ারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে চুল ধীরে ধীরে শুষ্ক হয়ে যায়। এর ফলে চুল প্রাণহীন দেখায়।

তাহলে ত্বক ও চুলের জন্য তাহলে কেমন তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করা উচিত?

একদম কুসুম গরম পানি (ত্বকে সহনীয়) বা রুম টেম্পারেচারের পানি ব্যবহার করতে হবে। কুসুম গরম পানির চেয়ে বেশি তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করা চুল ও ত্বক উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর, এটা আগেই জেনেছি। প্রতিদিন শাওয়ারের ক্ষেত্রে গোসলের সময় সংক্ষিপ্ত করতেও পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। শীতকালে গোসলের সময় গরম পানির ব্যবহার করা যেতে পারে তবে তা অবশ্যই কুসুম গরম হতে হবে।

শাওয়ারের সময় ও পর কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে। তা হলো-

  • শুষ্ক ত্বকের জন্য গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা বডি অয়েল বা আরগান অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
  • কোনোভাবেই গোসলের সময় চুলে হেয়ার কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করা বাদ দেওয়া যাবে না।
  • চুল যাতে খুব দ্রুত শুকিয়ে যায় এজন্য মাইক্রোফাইবার টাওয়েল ব্যবহার করা শ্রেয়।
  • ত্বক ভেজা থাকা অবস্থাতেই ত্বকে লোশন, ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বকের কোমলতা বজায় থাকবে।

গরম পানি চুল ও ত্বকের জন্য আসলেই কতটা ক্ষতিকর, তা আমরা জেনে নিয়েছি। এখন থেকে এই ভুল আর নিশ্চয়ই হবে না! শুভ কামনা সকলের জন্য!

ছবি- সাটারস্টক

The post গরম পানি চুল ও ত্বকের জন্য আসলেই কি ক্ষতিকর? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/0AwBoRg
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...