Skip to main content

অবচেতন মন বা সাবকন্সিয়াস মাইন্ডকে নিজের বশে আনবেন কীভাবে?

মানব মস্তিষ্কের একটি বিস্ময়কর দিক হল অবচেতন মন, যাকে বলে ‘subconscious mind’। এটি এমনই শক্তিশালী, যা আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান, অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। অবচেতন মনের জ্ঞান ব্যবহার করা গেলে, তা আমাদের জীবনে দারুণ পরিবর্তন আনতে পারে। অবচেতন মনকে বশে আনা গেলে জীবন হবে সহজ! চলুন এই বিষয়টি নিয়ে একটু জেনে নেই…

অবচেতন মন এর সাথে যোগাযোগ কীভাবে সম্ভব?

স্বপ্ন: আমাদের অবচেতন মন প্রায়ই স্বপ্নের মাধ্যমে কথা বলে। এটি একধরনের ভাষা, যা ব্যাখ্যা করতে শিখলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাওয়া যায়।

হিপনোসিস বা মন্ত্রমুগ্ধ অবস্থা: এই প্রক্রিয়ায় সচেতন মনকে শান্ত করে অবচেতন মনের সাথে সরাসরি প্রশ্নোত্তর এর মাধ্যমে কথা বলা যায়।

অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতার প্রতি মনোযোগ: কিছু সময়ে অবচেতন মন আমাদের এমন কিছু অভিজ্ঞতা দেয়, যা সাধারণত অদ্ভুত বা ব্যতিক্রমী মনে হয়। এ ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো মনোযোগ দিয়ে বিশ্লেষণ করলে লুকিয়ে থাকা বার্তা উপলব্ধি করা যায়।

অবচেতন মনের সঙ্গে কাজ এবং একটি অভিজ্ঞতা

ডা. আনবারের এক ১১ বছর বয়সী রোগীর উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, কীভাবে অবচেতন মন তার জীবনে প্রভাব ফেলেছিল। এই শিশুটি প্রায়ই অদ্ভুত দর্শনীয় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতো। তার দেখা একটি লম্বা, হলুদ রঙের অবয়বের বার্তাগুলি তাকে জীবন সম্পর্কে কিছু গভীরতর দৃষ্টিভঙ্গি শিখিয়েছিল। ডা. আনবার তাকে প্রস্তাব দেন, তার অবচেতন মনকে জিজ্ঞাসা করতে কেন এই অবয়বটি তার সামনে আসে। তার মনের দেওয়া উত্তরগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা গেল, সেগুলি জীবনের গভীর দৃষ্টিভঙ্গি ও শিক্ষার এক অভূতপূর্ব উৎস।

ডা. আনবারের রোগীর অবচেতন থেকে পাওয়া বার্তাগুলি শুধু তাৎপর্যপূর্ণ নয়, এগুলো জীবন ও সম্পর্কের অনেক গভীর সত্যকে প্রকাশ করে।

কীভাবে অবচেতন মন জীবনে প্রভাব ফেলে

১. “জিততে হলে হারতে হবে”

এই বার্তা বলে দেয়, জয়ের আসল অর্থ হলো নিজের ভুল থেকে শেখা। ব্যর্থতা ছাড়া প্রকৃত শিক্ষা বা সফলতার মূল্যায়ন সম্ভব নয়। এটি বোঝায়, সময় বা সুযোগ হারিয়েও আমরা জয়ের পথে এগিয়ে যেতে পারি।

২. “হারতে হলে জিততে হবে”

যারা জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে, তারা জানে যে জিততে গেলে কখনো কখনো অন্যকে জেতানোর জন্য নিজেকে সরে যেতে হয়। এই পরাজয়ের মধ্যেও এক অন্য রকম বিজয় লুকিয়ে থাকে।

৩. “ব্যর্থ হতে হলে দ্রুত চলতে হবে”

এই বার্তা বলে দেয় যে, দ্রুততা আমাদের ভুল করার সম্ভাবনা বাড়ায়। জীবনে ধীরে ও স্থির থেকে কাজ করা আমাদের শেখার সুযোগ বাড়ায়।

৪. “সফল হতে হলে চর্চা করতে হবে”

কেউই পরিশ্রম ছাড়া সাফল্য অর্জন করতে পারে না। ধৈর্য, অনুশীলন, অধ্যবসায়ই প্রকৃত সাফল্যের চাবিকাঠি।

৫. “শিখতে হলে মনোযোগ দিতে হবে”

অবচেতন মন মনে করিয়ে দেয়, শেখার জন্য গভীর মনোযোগ প্রয়োজন। মনোযোগ ছাড়া শেখা অস্পষ্ট এবং অসংগঠিত হতে পারে।

৬. “বিশ্বাস অর্জন করতে হলে সম্মান দেখাতে হবে”

যে কোনো সম্পর্কের ভিত্তি বিশ্বাস। অবচেতন মন বলে দেয়, অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তারা আমাদের প্রতি বিশ্বাস এবং আনুগত্য দেখাবে।

৭. “শ্রদ্ধা করতে হলে শুনতে হবে”

অন্যকে শ্রদ্ধা দেখানোর অন্যতম উপায় হলো তাদের কথা শোনা। এটি আমাদের মধ্যে সহানুভূতি তৈরি করে, যা সম্পর্ককে আরও গভীর করে।

কীভাবে বশে রাখবেন সাবকন্সিয়াস মাইন্ডকে?

অনেক ধর্মীয় গুরু, দার্শনিক ও বিজ্ঞানীর মতে, অবচেতন মনের শক্তি ব্যবহার করেই তারা নতুন নতুন চিন্তা বা দর্শনের উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। অবচেতন মন কখনো কখনো আমাদের জীবনের গভীর প্রশ্নের উত্তর দেয়, যা সচেতন মনের বাইরে! অবচেতন মনের জ্ঞান কাজে লাগানোর জন্য ও নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে:

  • নিয়মিত মেডিটেশন করা
  • স্বপ্নের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং এগুলো লিখে রাখা
  • মনে আসা অদ্ভুত চিন্তাগুলোকে উপেক্ষা না করে বিশ্লেষণ করা
  • বিশ্বাস স্থাপন করা যে আপনার মনের গভীরে মূল্যবান উত্তর লুকিয়ে আছে

অবচেতন মনের শক্তি ও জ্ঞান অনন্য। এটি আমাদের জীবনে এমন সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে, যা আমরা সচেতন মনে কল্পনাও করতে পারি না। সচেতন মনকে শান্ত করে এবং নিজের অন্তর্দৃষ্টি শোনা শুরু করলে, অবচেতন মনের এই শক্তি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি আনতে পারে।

লেখা- মাহমুদা আক্তার রোজী
ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট এন্ড জেরোন্টোলজিস্ট

ছবি- সাটারস্টক

The post অবচেতন মন বা সাবকন্সিয়াস মাইন্ডকে নিজের বশে আনবেন কীভাবে? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/7w8WRCV
Munia

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...