Skip to main content

গ্ল্যামার কুইন রেখা কীভাবে চিরতরুণ সে রহস্য জানেন?

বলিউডের গ্ল্যামার দুনিয়ায় তাঁকে নিয়ে মুগ্ধতা কখনই কমেনি। সময়ের সাথে অনেক কিছু বদলে গেলেও যা বদলায়নি তা হলো কিংবদন্তী এই বলিউড তারকার অপরূপ সৌন্দর্য ও তারুণ্যের আভা। বলছিলাম চিরতরুণ বলিউড নায়িকা রেখার কথা। ৭০ বছর বয়সী এই বলিউড অভিনেত্রী তাঁর অতুলনীয় সৌন্দর্য ও তারুণ্য ধরে রেখেছেন বছরের পর বছর। প্রমাণ করে দিয়েছেন বয়স তাঁর কাছে কেবলই একটি সংখ্যা। কিন্তু সত্তর বছর বয়সে এসেও কীভাবে সম্ভব এতটা তরুণ থাকা? চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক গ্ল্যামার কুইন রেখা কীভাবে ধরে রেখেছেন তাঁর চির সবুজ সৌন্দর্য, সেই রহস্য।

যে ৬ নিয়ম মেনে গ্ল্যামার কুইন রেখা এখনও তরুণ

১. প্রাকৃতিক উপাদানে ভরসা

রেখা সবসময়ই রূপ চর্চার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদানে ভরসা করেন। ত্বকের পরিচর্যায় তিনি খুবই স্ট্রিক্টলি CTM (Cleansing, Toning, Moisturizing) রুটিন ফলো করেন। সবসময় তিনি মাইল্ড ধরনের ক্লেঞ্জার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করেন ও টোনার ব্যবহার করেন। টোনার আমাদের ত্বকের pH ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের ময়েচারাইজেশনের দিকে রেখা সবসময় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখেন। এতে তাঁর ত্বক থাকে কোমল ও সতেজ।

২. অ্যারোমাথেরাপি ও এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার

ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করতে রেখা অ্যারোমাথেরাপি পছন্দ করেন। এতে ত্বকে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা হয়, যা ত্বককে রাখে সজীব ও প্রাণবন্ত। তাঁর মতে, এই পদ্ধতি ত্বকের গভীরভাবে যত্ন নেয় এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। অ্যারোমাথেরাপির মাধ্যমে ত্বক শুধু বাহ্যিকভাবে নয়, অভ্যন্তরিনভাবেও সতেজ ও সুস্থ থাকে।

৩. ঘরোয়া ফেইসপ্যাকেই সব সমাধান

কোনও কেমিক্যাল পণ্য নয় বরং রেখা বিভিন্ন ঘরোয়া উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে পছন্দ করেন। মধু, টকদই, হলুদ, গোলাপজল ইত্যাদি মিশিয়ে তিনি নিজেই ফেইসপ্যাক তৈরি করেন। এর ফলে তাঁর ত্বক সবসময় উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে। বিশেষ করে মুলতানি মাটি তাঁর খুবই প্রিয়, কারণ এটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে ত্বক রাখে ফ্রেশ ও ক্লিয়ার।

৪. অ্যালোভেরা জেল ও আমন্ড অয়েলের জাদুকরী প্রভাব

অ্যালোভেরা জেল আর আমন্ড অয়েল বিউটি কুইন রেখার সৌন্দর্য চর্চার অপরিহার্য অংশ। আমন্ড অয়েলের অ্যান্টি এজিং গুণ ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যালোভেরা জেল ত্বককে দেয় এক্সট্রা হাইড্রেশন। এই দুটি উপাদানের নিয়মিত ব্যবহারই রেখার ত্বককে রাখে মসৃণ ও কোমল, সেই সাথে তারুণ্যদীপ্ত।

৫. হাইড্রেশন ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

রেখার দীপ্তিময় ত্বকের মূল ভিত্তিই হলো হাইড্রেশন। ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে রেখা সবসময় পর্যাপ্ত পানি পান করেন। শরীর ও ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে তিনি এ অভ্যাসের প্রতি খুবই মনোযোগী। পাশাপাশি গ্ল্যামার কুইন রেখা চেষ্টা করেন সবসময় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে। নিয়মিত ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠেন রেখা। সন্ধ্যা ৭.৩০ এর মাঝেই রাতের খাবার খেয়ে নেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম এবং কম মসলাযুক্ত খাবার খান তিনি। রেখা মনে করেন, যখন মানুষ শারীরিক ভাবে সুস্থ এবং মানসিক ভাবে প্রশান্তিতে থাকে তখন এমনিতেই তার ত্বক স্বাস্থ্যজ্জ্বল দেখায়।

৬. মিনিমাল মেকআপের প্রতি ভালোবাসা

রেখার মেকআপের ধরন খুবই মিনিমাল, যা আভিজাত্যের ছাপ ফেলে। তিনি বিশ্বাস করেন, ত্বকের প্রকৃত সৌন্দর্যকে সামনে আনাই হলো আসল সৌন্দর্য। তাই অতিরিক্ত ভারী মেকআপ এড়িয়ে ত্বককে নিজের মতো শ্বাস নিতে দেন। তবে গাঢ় লিপস্টিকের প্রতি তাঁর যে বিশেষ আকর্ষণ আছে তা বোঝা যায় রেখার সিগনেচার লুক থেকেই।

এভাবেই বছরের পর বছর প্রাকৃতিক যত্ন আর নিয়মমাফিক জীবনযাপনের মাধ্যমে রেখা দেখিয়ে দিয়েছেন, সৌন্দর্য ধরে রাখতে কোনো ব্যয়বহুল সার্জারি বা কৃত্রিম পদ্ধতির প্রয়োজন নেই। তাঁর এই নিখুঁত রুটিনে তিনি শুধু ত্বকের যত্নেই নয়, বরং মানসিক শান্তি ও শারীরিক সুস্থতার প্রতিও গভীর মনোযোগ দেন। প্রাকৃতিক উপাদান ও ইতিবাচক জীবনধারার প্রতি আস্থা রেখেই বয়সকে যেন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন রেখা। রেখার এই জীবনদর্শন অনুপ্রেরণা হতে পারে যেকোনো বয়সের নারীর জন্য। তাই  মনের দিক তরুণ থাকুন, মানসিকভাবে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন। তাহলেও আপনিও রেখার মতোই পারবেন বয়সকে টেক্কা দিতে।

লেখা- জান্নাতুল কাওসার

সোর্স- টাইমস অফ ইন্ডিয়া

ছবি- দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, স্ট্যাটিক ইন্ডিয়া, সাটারস্টক

The post গ্ল্যামার কুইন রেখা কীভাবে চিরতরুণ সে রহস্য জানেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/rbMNXYU
Jannatul Kawser

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...