Skip to main content

যে ১০টি উপকারিতার জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখবেন

কিশমিশ মিষ্টি জাতীয় খাবার বলে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন না তো? শুকনো আঙুর থেকে তৈরি হওয়া কিশমিশ শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। কিশমিশ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এবং নানা রকম স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। এতে শর্করা, ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। খাদ্যতালিকায় কিশমিশ কেন রাখতে হবে, সেই তথ্য কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না।

বিভিন্ন খাবার যেমন পায়েশ, পোলাও, ফিরনি ইত্যাদি খাবার সাজাতে কিশমিশ ব্যবহার করি কিন্তু এটি পরিমিত পরিমাণে খেলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। আজ আমরা জানবো কেন আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখা উচিত এবং এর বিভিন্ন উপকারিতা কী।

কিশমিশের যত পুষ্টিগুণ

কিশমিশে রয়েছে নানা উপাদান, যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি-৬, খনিজ উপাদান পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের শরীরের নানারকম শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম কিশমিশে শর্করা থাকে প্রায় ৭৯ গ্রাম, ফাইবার ৩.৭ গ্রাম এবং ফ্যাট মাত্র ০.৫ গ্রাম। এগুলো ছাড়াও কিশমিশে রয়েছে পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস, ট্যানিন ও ক্যাটেচিনস নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

খাদ্যতালিকায় কিশমিশ কেন রাখা উচিত

১। শক্তি প্রদান করেঃ

কিশমিশে থাকা শর্করা শরীরে দ্রুত শক্তি প্রদান করে। এটি আপনার শরীরের কোষকে সজীব রাখে এবং দীর্ঘ সময় ধরে সক্রিয় থাকতে সহায়তা করে। বিশেষ করে ব্যায়ামের পর ক্লান্তি দূর করতে কিশমিশ বেশ সহায়ক।

২। পুষ্টির ভাণ্ডারঃ

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি শক্তি বাড়ায় এবং সারাদিন আমাদের প্রোডাক্টিভ রাখতে সহায়ক।

৩। হার্ট সুস্থ রাখেঃ

পটাসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত কিশমিশ খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।

৪। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ

কিশমিশে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ করে। এটি পেটের গ্যাস, অম্বল ও হজম সমস্যা কমায়।

৫। মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ

কিশমিশের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ওলেনোলিক অ্যাসিড মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে। এটি দাঁতের প্লাক জমা প্রতিরোধ করে, মাড়ির ইনফেকশন প্রতিরোধ করে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। কিশমিশ খেলে মুখের বাজে গন্ধ দূর হয় এবং মুখের ভেতর সজীবতা বজায় থাকে।

৬। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ

এতে পটাসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে কিশমিশ খাওয়ার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। পটাসিয়াম রক্তনালীর সংকোচন কমাতে সাহায্য করে, ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

৭। ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ

কিশমিশে থাকা ফাইবার ও শর্করা ক্ষুধা কমায় এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখে। এটি অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে সাহায্য করে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। তাই স্ন্যাকস হিসেবে কিশমিশ খেতে পারেন।

৮। ত্বক ও চুলের যত্নে কার্যকরীঃ

এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে সহজে বার্ধক্যের ছাপ আসতে দেয় না। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং চুলকে মজবুত রাখে।

৯। রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করেঃ

কিশমিশে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শরীরের প্রদাহ কমায় এবং বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং শরীরকে শিথিল ও সজীব রাখে।

১০। হাড় মজবুত করে ও রক্ত স্বল্পতা প্রতিরোধ করেঃ

এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে। নিয়মিত কিশমিশ খেলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমে। এছাড়া, কিশমিশে থাকা আয়রন শরীরের হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়ায়, যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক।

এবার নিশ্চয় বুঝতে পারলেন কেন আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখা উচিত। বিভিন্ন খাবারের সাথে যেমন, সকালের সিরিয়াল বা মিল্কশেক ইত্যাদিতে কিশমিশ যুক্ত করে খেতে পারেন। আবার খাওয়ার পর একটু মিষ্টিমুখ করার জন্যও খেতে পারেন ভেজানো কিশমিশ। সকালে খালি পেটে কয়েকটি ভেজানো কিশমিশ খেলে এর পুষ্টি উপাদান সহজে শরীরে শোষিত হয়।

তবে, অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হলে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। কিশমিশ খাওয়ার সময় পরিমাণের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে, কারণ এতে শর্করার পরিমাণ বেশি। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি মাত্রার হওয়ায় যারা ডায়াবেটিক রোগী তারা স্বল্প পরিমাণে খেতে পারেন। সুতরাং প্রতিদিনের খাবারে কিছু পরিমাণ কিশমিশ রাখুন এবং সুস্থ ও সক্রিয় জীবনযাপন করুন।

ছবি- সাটারস্টক

The post যে ১০টি উপকারিতার জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখবেন appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/JMvSdkR
Munia

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...