Skip to main content

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেনটেইন করার সহজ পাঁচটি টিপস

স্বনামধন্য একটা কর্পোরেট কোম্পানিতে স্ট্র‍্যাটেজিক লিড হিসেবে কাজ করছে মাইশা। দিনের বড় একটা সময়ে তাকে বিভিন্ন প্রজেক্টের গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। কাজের মাঝে ডুবে থাকতে থাকতে ইদানিং মাইশা তার কাজের বাইরের রঙিন জীবন থেকে অনেকখানি দূরে সরে গেছে। নিজের শখের কাজগুলো তার আর আগের মতো করা হয়ে উঠছে না, এমনকি পরিবার ও কাছের বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। সবসময় মাইশার কেমন যেন স্ট্রেসড ফিল হয়, কোনো কিছুতেই আর আগ্রহ কাজ করে না! প্রফেশনাল লাইফে ফোকাস করতে যেয়ে মাইশার মতো আরো অনেকের সাথে এমনটা হয়ে থাকে। এই সিচুয়েশনটাকে বলা হয় “ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স” না থাকা।

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স না থাকলে পারসোনাল ও প্রফেশনাল লাইফ দু’টো ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই আজকের লেখায় জানাবো ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেনটেইন করার ৫টা সহজ ও কার্যকরী টিপস।

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? 

বেশিরভাগ মানুষ ভালো থাকা বলতে শুধুমাত্র ক্যারিয়ারে সাকসেসফুল হওয়াকেই বুঝিয়ে থাকেন। কিন্তু সত্যি বলতে জীবনে ভালো থাকতে হলে প্রফেশনাল লাইফে সাকসেসফুল হওয়া যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, সেই সাথে নিজের পারসোনাল লাইফে হ্যাপি থাকাও সমান গুরুত্ব বহন করে।

আপনি যদি শুধু কাজই করতে থাকেন, তাহলে একটা সময় দেখতে পাবেন কাজের প্রতি আপনার যে ডেডিকেশন ছিলো, সেটা অনেকটা কমে গেছে এবং আপনি আর আগের মতো মোটিভেটেড ফিল করছেন না। আবার কাজে সময় দিতে গিয়ে পারসোনাল লাইফ হ্যাম্পার হলে তার প্রভাব মেন্টাল হেলথের উপরে পড়বে। তখন সব মিলিয়ে চাইলেও আপনি ভালো থাকতে পারবেন না।

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সকে ঠিক এই কারণেই এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়। আপনি যদি নিজের পারসোনাল লাইফ ও প্রফেশনাল লাইফের মাঝে একটা ব্যালেন্স মেনটেইন করেন, অর্থাৎ দুদিকেই সমান ফোকাস রাখেন, তাহলে দ্রুত ক্যারিয়ারে গ্রো করতে পারবেন এবং মেন্টাল হেলথও ভালো থাকবে।

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেইনটেইন করার টিপস

১) ক্লিয়ার বাউন্ডারি সেট করুন

নিজের পারসোনাল ও প্রফেশনাল লাইফকে সম্পূর্ণ সেপারেট করে ফেলা ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেনটেইন করার প্রথম ধাপ। দিনের কতটুকু সময় আপনি কাজের জন্য ব্যয় করবেন এবং কতটুকু সময় পারসোনাল লাইফের জন্য রাখবেন সেটা ক্লিয়ার রাখুন।

বিশেষ করে যখন আপনি অফিসে থাকবেন না, তখন কাজ সম্পর্কিত কোনো কিছু চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন। অফিসের ইমেইল বারবার চেক করা বা কাজ করার জন্য ল্যাপটপ অন করা ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব কম করুন। তাহলে আপনার পারসোনাল লাইফে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না এবং মেন্টালি হ্যাপি থাকতে পারবেন।

২) অফিস আওয়ারের পরের সময়টুকু নিজের জন্য রাখুন

আপনি নিজে আপনার এগিয়ে চলার সবচেয়ে বড় শক্তি। তাই নিজের জন্য সময় ব্যয় করা কখনোই কোনো স্বার্থপরতা নয়। সবারই কাজের ফাঁকে নিজেকে সময় দেওয়া উচিত। অফিসের পরে যতটুকু সময় পাবেন, সেটা নিজের পেছনে ব্যয় করুন। চাইলে সেলফ কেয়ারে সময় দিতে পারেন, নিজের কোনো একটা শখের কাজ করতে পারেন কিংবা পছন্দের কোনো জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এতে করে টায়ার্ডনেস কেটে যাবে এবং নতুন উদ্যমে কাজে সময় দিতে পারবেন।

৩) কাজের মাঝখানে ব্রেক নিন

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের মস্তিষ্ক কখনোই দীর্ঘ সময় কর্মক্ষম থাকতে পারে না। কাজের মাঝখানে ব্রেক নিলে মাইন্ড রিফ্রেশ করার সুযোগ পাওয়া যায় এবং এতে করে কাজে আরো ভালোভাবে ফোকাস করা সম্ভব হয়। অফিসে একটানা অনেকক্ষণ বসে কাজ না করে প্রতি ২ ঘন্টা পর পর ১৫ মিনিটের ব্রেক নিন। এই সময়ে হালকা স্ন্যাকিং করতে পারেন, সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করতে পারেন কিংবা অফিসে জায়গা থাকলে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন।

৪) টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল বাড়ান

টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল ভালো হলে ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেনটেইন করা অনেক সহজ হয়ে যায়। প্রতিদিন একটা টু-ডু লিস্ট করুন, যেখানে প্রায়োরিটি অনুযায়ী সবগুলো কাজের লিস্ট থাকবে। চেষ্টা করুন ঘড়ি ধরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিটা কাজ শেষ করার। এভাবে লিস্ট তৈরি করে কাজ করলে সময়ের অপচয় হয় না, ডেডলাইন মেনটেইন করে প্রতিটি টাস্ক কমপ্লিট করা যায় এবং পারসোনাল লাইফও হ্যাম্পার হয় না।

৫) পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময় কাটান

জীবনে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নিজের কাছের মানুষদের প্রায়োরিটি দিন। অবসর সময়ে তাদের সাথে আড্ডা দিন কিংবা একসাথে কোথাও ঘুরতে যান। এতে করে কাজ করতে করতে আপনার মনে যে স্ট্রেসফুল কন্ডিশন তৈরি হয়, তা থেকে মুক্তি পাবেন এবং মেন্টাল হেলথও ভালো থাকবে।

এই পাঁচটা টিপস ফলো করলেই ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেনটেইন করা আপনাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। লেখার শেষে সবাইকে এটুকুই বলতে চাই, আপনার প্রফেশন যেটাই হোক না কেন, পারসোনাল ও প্রফেশনাল লাইফের সঠিক ব্যালেন্সই পারে আপনাকে সাকসেসফুল করে তুলতে!

ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ

লেখা- সুমাইয়া দোলা

The post ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স মেনটেইন করার সহজ পাঁচটি টিপস appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/9vu2Q7t
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...