Skip to main content

৪ ধরনের মানসিক অসুস্থতার এই লক্ষণগুলো আপনার মধ্যে আছে কি?

শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমরা যত বেশি সচেতন, মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কিন্তু ততোটা নই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে বিশ্বে প্রতি ৮ জনের ১ জন কোনও না কোনও মানসিক অসুস্থতা বয়ে বেড়ান। বাস্তবে, মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যকে যেমন প্রভাবিত করে, তেমনি এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি দিককে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে আমরা শুধু নিজের নয়, বরং আমাদের আশেপাশের মানুষের জীবনের মানোন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারি। ৪ ধরনের মানসিক অসুস্থতা নিয়ে আজ আমরা কিছু তথ্য জানবো।

মানসিক অসুস্থতা নিয়ে যে কথাবার্তা আগে প্রকাশ্যে আলোচিত হতো না, এখন সেটা অনেকটাই উন্মুক্ত হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে মানুষ একে অপরকে সাহায্য করতে পারছে, একে অপরের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো শেয়ার করতে পারছে এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও মানসিক সমস্যা নিয়ে ভীতি ও লজ্জা পুরোপুরি দূর হয়নি। তাই এই বিষয়ে আরও সচেতনতা এবং সঠিক তথ্য প্রচার করা জরুরি।

মানসিক অসুস্থতার মধ্যে কিছু সাধারণ রোগ রয়েছে, যেগুলো আজকাল অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। এই রোগগুলো দীর্ঘমেয়াদী হলে ব্যক্তির জীবনে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। চলুন, আজ আমরা প্রধান কিছু মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ নিয়ে জানি৷

৪ ধরনের মানসিক অসুস্থতা ও এগুলোর লক্ষণ

১. মুড ডিজঅর্ডার (Mood Disorders):

মুড ডিজঅর্ডার এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে বিষণ্ন অনুভব করে বা অত্যধিক উত্তেজিত থাকে। এটি সাধারণত ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিজঅর্ডার বা দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগের মতো সমস্যায় পরিণত হতে পারে। বিশেষত, শিশু বা কিশোরদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো শনাক্ত করা অনেক কঠিন, কারণ তারা সঠিকভাবে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না। তাই যদি কাউকে দীর্ঘ সময় ধরে বিষণ্ন বা উত্তেজিত দেখেন, তবে দ্রুত পেশাদার সাহায্য নেওয়া উচিত।

২. অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার (Anxiety Disorders):

অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ একটি সাধারণ অনুভূতি হলেও যখন এটি অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক হয়ে ওঠে, তখন এটি একটি রোগ হিসেবে বিবেচিত হয়। উদ্বেগের মধ্যে চিন্তা, অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, অস্থিরতা বা শারীরিক লক্ষণ যেমন ঘাম, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি ইত্যাদি দেখা দেয়। অনেক সময় অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যাংজাইটি এক ধরনের মানসিক চাপের ফলস্বরূপ হতে পারে, যা যদি অবহেলা করা হয়, তাহলে জীবনের অন্য দিকগুলোকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

৩. পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার (Personality Disorders):

পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে এমনভাবে চিন্তা, অনুভব ও আচরণ করেন যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে। এসব ব্যক্তি সাধারণত সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন, কারণ তাদের আচরণ সাধারণ সমাজের নিয়মের সাথে মেলে না। দেখা যায় তারা কেউ কেউ সমালোচনা গ্রহণ করতে পারেন না, কেউ অতিরিক্ত আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকেন অথবা কেউ অতি মাত্রায় অন্যের ওপর মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। কিছু সাধারণ পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসোশ্যাল, নার্সিসিস্টিক ও হিস্ট্রিওনিক ডিজঅর্ডার। প্রতিটি ডিজঅর্ডারের লক্ষণে ভিন্নতা থাকে।

৪. সাইকোটিক ডিজঅর্ডার (Psychotic Disorders):

সাইকোটিক ডিজঅর্ডার মানে এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি বাস্তবতার সাথে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে। বড় কোনও মানসিক আঘাত, জেনেটিক কারণ, মাদকাশক্তির কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের রোগে মানুষের মধ্যে বিভ্রম (হ্যালুসিনেশন) বা বিভ্রান্তি (ডিলিউশন) দেখা দিতে পারে। সিজোফ্রেনিয়া এর একটি সাধারণ উদাহরণ, যা এক ধরনের সাইকোটিক ডিজঅর্ডার। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সঠিকভাবে তার চারপাশের পরিস্থিতি বুঝতে পারে না এবং তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সাইকোথেরাপি, কাউন্সেলিং ইত্যাদি চিকিৎসার দরকার হয়। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞই এর সঠিক সমাধান দিতে পারেন।

যে ৪ ধরনের মানসিক অসুস্থতা নিয়ে আমরা আলোচনা করলাম সেগুলোর প্রায় প্রতিটিই কাউন্সেলিং থেরাপি নেওয়ার মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব। মেডিটেশন বা রিল্যাক্সিং থেরাপিও ভালো কাজ করে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা খেলাধুলা করা, সুষম খাবার খাওয়া, ঘুমের নিয়ম মেনে চলা , মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

অতিরিক্ত কাজ বা পড়ালেখার চাপ থাকলে তা থেকে মাঝে মাঝে বিরতি নিন, ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করুন। তবুও মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ হলে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। কেননা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো সঠিক সময়ে চিহ্নিত করা এবং তাদের চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ধরনের মানসিক রোগ একা একা চলে যায় না, এটি যথাযথ চিকিৎসা ও সহায়তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তাই, যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কারো মধ্যে মানসিক সমস্যার লক্ষণগুলো থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

ছবি- সাটারস্টক

The post ৪ ধরনের মানসিক অসুস্থতার এই লক্ষণগুলো আপনার মধ্যে আছে কি? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/1U2ZjYs
Munia

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...