Skip to main content

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির ডায়েট কেমন হবে?

ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ জ্বরে শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি খাবারের রুচি একদম কমে যায়। তাই জ্বরের তীব্রতা কমানোর পাশাপাশি রোগীর দেহের সঠিক পুষ্টি চাহিদা বজায় রাখার জন্য এ সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় রোগীর খাবার এমন হওয়া উচিত যা পুষ্টিকর, দ্রুত হজম হয় এবং সেই সাথে খেতেও ভালো লাগে। চলুন তাহলে জেনে নিই, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর খাবার কেমন হওয়া উচিত।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির খাদ্যতালিকা

প্রথমত ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে দেহকে কীভাবে হাইড্রেটেড রাখা যায়। সারাদিনে কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। জ্বর হলে অনেক সময় পানি পান করতে অনীহা দেখা যায়, তাই পানির চাহিদা পূরণ করতে পানির পাশাপাশি তাজা ফলের রস, ডাবের পানি পান করতে হবে।

ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল

ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং খাবারের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সাথে দ্রুত আরোগ্য লাভেও সহায়তা করে। মাল্টা, কমলা, লেবু, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, পেঁপে, পাকা বেল, নাশপাতি, আনারস, ডালিম সহ পানি জাতীয় ফল ও ফলের রস খাওয়া এ সময় অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে ডাবের পানি বা লেবুর শরবত দেওয়া যেতে পারে। এগুলো শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করে।

তরল জাতীয় খাবারের প্রয়োজনীয়তা

ডেঙ্গু জ্বরের সময় রোগীকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে তরল জাতীয় খাবার। তরল খাবার হজমে সহজ এবং এগুলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতেও সহায়তা করে। তরল খাবার হিসেবে যে খাবারগুলো দেওয়া যেতে পারে সেগুলো হলো মিক্সড ভেজিটেবল স্যুপ, টমেটো স্যুপ, চিকেন বা কর্ণ স্যুপ দেওয়া যেতে পারে। এতে পানির চাহিদা পূরণ হবে, পাশাপাশি প্রোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের চাহিদা পূরণ হবে।

সহজপাচ্য খাবার 

তরল খাবারের পাশাপাশি অর্ধতরল খাবার যেমন- নরম সেদ্ধ করা খাবার, জাউ ভাত, ভাতের মাড়, চিড়া ভেজানো পানি, সুজি, সাগু ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। এসব খাবার সহজপাচ্য এবং এ সময় দ্রুত শরীরে শক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত

এই সময়ে কিছু খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। যেমনঃ ভাজা পোড়া, বাসি খাবার, বেশি মশলা যুক্ত খাবার, পনির, বাদাম, ঘি, তৈলাক্ত খাবার, গরু বা খাসির মাংস, মাংসের চর্বি ইত্যাদি। এগুলো খেতে মুখে অনেক সময় সুস্বাদু লাগলেও আসলে ডেঙ্গু রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব খাবার রোগীর হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং অসুস্থতা বৃদ্ধি করতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলতে হবে। এ সময় খাবারে রুচি না থাকলেও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে আর ভালোভাবে বিশ্রাম নিতে হবে। যে কোনও ধরনের জটিলতা যেমনঃ জ্বর খুব বেশি বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত পেটে ব্যথা বা কোনও ধরনের রক্তপাত দেখা দিলে সাথে সাথে হাসপাতালে যেতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, যেন সহজে এ জ্বরে আক্রান্ত না হয়। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা এবং মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। মনে রাখবেন, সচেতনতাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। সবাই ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

লিখেছেন- সাদিয়া ইসরাত স্মৃতি, পুষ্টিবিদ, সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হসপিটাল
ছবি- .healthifyme.com, india.com

The post ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির ডায়েট কেমন হবে? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/jclS38I
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...