Skip to main content

শুধু কপালেই ব্রণ উঠছে কেন আর এর সল্যুশনই বা কী?

জীবনে কোনোদিন ব্রণ বা একনে সমস্যার মুখোমুখি হননি এমন মানুষ পাওয়া ভার। তার মাঝে ফোরহেড একনে বা কপালে ব্রণ হওয়া বেশ কমন একটি সমস্যা। আর স্পেশাল প্রোগ্রামের আগে যদি ফোরহেড একনে হয় তাহলে তো কথাই নেই। মেকআপ করে বা পিম্পল প্যাচ ব্যবহার করে, যাই হোক না কেন এই জেদি একনে থেকে মুক্তি পেতে চাই। আচ্ছা কখনো মনে হয়েছে কি শুধু কপালেই কেন ব্রণ উঠছে? এর কারণ ঠিক কী?

চলুন জেনে নেই কী কারণে হয় ফোরহেড একনে এবং এর প্রতিকারের উপায়।

শুধু কপালেই কেন ব্রণ দেখা দিচ্ছে?

পোরস ক্লগ হওয়া

অন্য একনের মতো স্কিনের পোরস ক্লগ হয়েই ফোরহেড একনে তৈরি হয়। স্কিনের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড যখন অতিরিক্ত সিবাম বা অয়েল প্রোডিউস করে স্কিনের পোর ক্লগ করে দেয় তখনই ব্রণের সূত্রপাত হয়। এটি প্রধান কারণ হলেও আরও কিছু কারণ রয়েছে যা এই সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।

হরমোনাল চেঞ্জ

সাধারণত পিউবার্টি টাইম বা বয়ঃসন্ধিকালে একনে সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে হঠাৎ করে শরীরে নানারকম হরমোনাল পরিবর্তন হওয়ায় স্কিনে সিবাম প্রোডাকশন বেড়ে যায়। এতে বিভিন্ন ধরনের একনের পাশাপাশি ফোরহেড একনেও বেড়ে যায়।

স্ক্যাল্পের সমস্যা ও হেয়ার প্রোডাক্টস

যাদের স্ক্যাল্প ও স্কিন অয়েলি তারা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। ভালো করে হেয়ার ওয়াশ না করলে চুলে থাকা অতিরিক্ত তেল বা হেয়ার প্রোডাক্টের অবশিষ্টাংশ কপালে একনে তৈরি করে। তাছাড়া জেল, হেয়ার ক্রিম, স্প্রে ইত্যাদি ব্যবহারেও অনেক সময় এই সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে যাদের হেয়ারলাইনে খুশকি থাকে, তাদের কিন্তু কপালের অংশে ব্রণ বেশি দেখা দেয়। অনেক সময় ফাঙ্গাল একনেও একসাথে দেখা দিতে পারে। পুরো ফেইসে ব্রণ নেই, কিন্তু শুধু কপালেই কেন ব্রণ উঠছে, এটা জানতে হলে আগে দেখুন আপনার ড্যানড্রাফের প্রবলেম আছে কিনা।

মেকআপ ক্লিন না করা

মেকআপ, সানস্ক্রিন সঠিকভাবে রিমুভ করা না হলে একনে সমস্যা দেখা দেয়। শুধু গালের অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার করলেন, কিন্তু কপালের এরিয়া স্কিপ করলেন, এতে কিন্তু ফোরহেড একনে বেড়ে যেতে পারে। তাই মেকআপ বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে অবশ্যই রাতে একবার ডাবল ক্লেনজিং করুন। তাহলে দেখবেন একনের সমস্যা অনেকটাই কমে গেছে।

টাইট হেডগিয়ার

বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের এমন হেডগিয়ার (যেমনঃ হেলমেট, হিজাব, ক্যাপ) পরতে হয় যাতে লং টাইম ফোরহেড এরিয়া ঢেকে থাকে। এতে করে স্কিনে ঠিকভাবে বাতাস লাগে না। দীর্ঘসময় এভাবে থেকে কপালের ত্বক ঘেমে যায়। এ কারণেও ফোরহেড একনে হয়।

মানসিক চাপ

মানসিক চাপ একনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। আমরা যখন মানসিক চাপে থাকি তখন আমাদের শরীরে কর্টিসল নামের হরমোন উৎপন্ন হয় যা অনেক সময় একনে সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলে।

ডায়েট

অতিরিক্ত সুগার, ভাজাপোড়া, রিচ ফুড স্কিনে ব্রেকআউট বাড়িয়ে দেয়। আর তখন ফোরহেড একনেও বেড়ে যায়।

বেডিং, পিলোকেস ও টাওয়াল

আমাদের বেডশিট, পিলোকেস, টাওয়াল অনেক সময় ঠিকভাবে ক্লিন করা হয় না। দেখা যায় সপ্তাহ পেরিয়ে মাস হয়ে যাচ্ছে অথচ একই পিলোকেস! কিন্তু আমাদের চুল, স্কিন এবং আশেপাশে থেকে এসব ব্যবহার্য জিনিসে ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া জমা হয়ে এটাই আবার আমাদের ত্বকের স্পর্শে এসে একনে ব্রেকআউট ঘটায়।

কীভাবে দূর করবেন ফোরহেড একনে?

ন্যাচারাল সল্যুশন

প্রতিদিন প্রোপার স্কিনকেয়ারের পাশাপাশি ফোরহেড একনে দূর করতে কিছু ন্যাচারাল রেমেডি অ্যাপ্লাই করতে পারেন। তবে অবশ্যই স্কিন কন্ডিশন বুঝে এবং প্যাচ টেস্ট করে ন্যাচারাল রেমেডি অ্যাপ্লাই করবেন।

  • ইচিনেস বা রেডনেস দেখা দিলে অ্যালোভেরা জেল এফেক্টেড এরিয়াতে অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
  • টি ট্রি অয়েল পানির সাথে কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে কটন প্যাডের সাহায্যে একনের উপর অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
  • অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ওয়ান কোয়ার্টার নিয়ে তাতে থ্রি কোয়ার্টার পানি মিশিয়ে কটন প্যাডে লাগিয়ে ব্যবহার করুন, ফোরহেড একনে কমে আসবে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে জিংক সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন কারণ জিংক স্কিন কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করে।

কেমিক্যাল বেইজড স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস

একনে সমস্যা দূর করতে যে কেমিক্যালগুলো খুব ভালো কাজ করে সেগুলো হল স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, বেনজোয়েল পারঅক্সাইড ও রেটিনল। একনের সমস্যাটি কী ধরনের তার উপর নির্ভর করে এই উপাদানগুলোর মধ্য থেকে কোনোটি বেছে নিতে হবে। সাধারণত স্যালিসাইলিক অ্যাসিড একনে দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। আবার ব্যাকটেরিয়াল একনে কমাতে বেনজোয়েল পারঅক্সাইড বেশি ভালো কাজ করে। রেটিনল একদম লো কনসেন্ট্রেশনে রাতের স্কিনকেয়ার রুটিনে ইনক্লুড করা যায়, যদি আপনার বয়স ২৫+ হয়। এ ধরনের প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রেও প্যাচ টেস্ট এবং সঠিক ব্যবহারবিধি অনুসরণ করতে হবে। দিনের বেলা সানস্ক্রিন কিন্তু মাস্ট!

ফোরহেড একনে সাধারণ একটি ত্বকের সমস্যা, তাই এতে অতিরিক্ত চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সঠিক জীবনযাপন এবং নিয়মিত ত্বকের যত্নই হতে পারে এই সমস্যার সমাধান। কিছু নিয়ম মেনে চললেই আশা করা যায়, অল্প কিছুদিনের মধ্যে কপালের ব্রণ অনেকটাই কমে যাবে, আর ত্বক ফিরে পাবে তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা। যদি ফাঙ্গাল একনে হয়, তাহলে ট্রিটমেন্ট আলাদা।  সংক্রমণ খুব বেশি হলে বা কোনওভাবেই একনে নিয়ন্ত্রণে না এলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ছবি- সাটারস্টক
লেখা- রুজাইয়াত তানজিল

The post শুধু কপালেই ব্রণ উঠছে কেন আর এর সল্যুশনই বা কী? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/IaDo1QJ
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...