Skip to main content

হেয়ার কনসার্ন অনুযায়ী সঠিক কন্ডিশনার ব্যবহার করছেন তো?

ছোট হোক বা বড়, একরাশ ঝলমলে চুল সিল্কি চুল সবাই চায়। চুলের প্রতিদিনের পরিচর্যায় হেয়ার কন্ডিশনার একটি মাস্ট হ্যাভ প্রোডাক্ট। মার্কেটে অ্যাভেইলেবল কন্ডিশনারগুলো একেকটি হেয়ার কনসার্নকে টার্গেট করে তৈরি হয়। প্রত্যেকের যেমন চুলের ধরন আলাদা, তেমনি হেয়ার কনসার্নও আলাদা। তাই অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না কোন কন্ডিশনারটি তাদের জন্য পারফেক্ট হবে। বিভিন্ন ধরনের হেয়ার কন্ডিশনার সম্পর্কে আমাদের আজকের এই ফিচারটি আপনাদের এই কনফিউশন দূর করবে বলে আশা করছি।

হেয়ার কন্ডিশনার ঠিক কী কাজ করে?

চলুন শুরুতেই জেনে নেই কন্ডিশনারের বেসিক কাজ সম্পর্কে। আমাদের ত্বকে যেমন ময়েশ্চারাইজারের প্রয়োজন হয়, তেমনি চুলেরও হয়। চুলের ময়েশ্চারাইজার বলা হয় কন্ডিশনারকে। কন্ডিশনারে থাকা হাইড্রেটিং ও ময়েশ্চারাইজিং প্রোপার্টিজ শ্যাম্পু অথবা পানি দিয়ে চুল ওয়াশের পর চুল থেকে হারিয়ে যাওয়া ন্যাচারাল অয়েল ও নারিশমেন্টকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

এর ফলে চুলে ওয়াটার ড্যামেজ বা পানি থেকে হওয়া ড্যামেজ রিপেয়ার করতে, শ্যাম্পু করার পর চুলের ওপেন কিউটিকল ক্লোজ করতে এবং একইসাথে চুলের বাইরের অংশে একটি প্রোটেক্টিভ লেয়ার তৈরি করতে সাহায্য করে। যার ফলে চুল শাইনি ও সিল্কি থাকে এবং স্মুথনেস বজায় থাকে। তাই ঝরঝরে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে কন্ডিশনার অবশ্যই মাস্ট হ্যাভ। তবে, মনে রাখতে হবে কন্ডিশনার শুধুমাত্র হেয়ার লেন্থের জন্য কাজ করে, স্ক্যাল্পের জন্য নয়। তাই চুলের মাঝ থেকে একদম নিচ পর্যন্ত কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করতে হয়।

হেয়ার টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কন্ডিশনার

বিভিন্ন ধরনের কন্ডিশনার রয়েছে, নিচে কমন কয়েকটি তুলে ধরা হলো:

১. রিনস আউট কন্ডিশনার

রেগুলার রিনস আউট কন্ডিশনার সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই কম বেশি জানি। শ্যাম্পু করার পর অথবা পানি দিয়ে  চুল ভেজানোর পর রেগুলার কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করে মোটামুটি ৩-৫ মিনিট রাখতে হয়। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। রেগুলার বেসিসে এই কন্ডিশনার ব্যবহার করা হয়।

২. হেয়ার মাস্ক বা ডিপ কন্ডিশনার

প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করা হয় ড্রাই ও রাফ হেয়ারে৷ নরমাল ও অয়েলি হেয়ারে মাসে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যেতে পারে । হেয়ার মাস্ক অথবা ডিপ কন্ডিশনার,  দুই নামেই এটি বেশ পরিচিত। চুলের এক্সট্রা কেয়ারের জন্য এই ডিপ ট্রিটমেন্ট নেওয়া হয়। এটি রেগুলার কন্ডিশনারের তুলনায় বেশ থিক ও ক্রিমি হয়ে থাকে। এতে লার্জার মলিকিউলস এর পাশাপাশি স্মল মলিকিউলস থাকায় খুব সহজে এটি চুলের ডিপ লেয়ারে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে চুলে ময়েশ্চার রিটেইন হয় এবং চুল প্রোপার নারিশমেন্ট পায়। এটি চুলের ইলাস্টিসিটি ইমপ্রুভ করতেও সাহায্য করে। যাদের চুল বেশ ড্রাই ও ফ্রিজি তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ডিপ কন্ডিশনার অত্যন্ত কার্যকরী। ডিপ কন্ডিশনারের প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০-১৫ মিনিট, আবার কোনোটা ২০-৩০ মিনিট পর্যন্ত ভেজা চুলে অ্যাপ্লাই করে রেখে ধুয়ে ফেলতে হয়।

৩.  লিভ ইন কন্ডিশনার

নাম শুনেই বোঝা যায় যে এ ধরনের কন্ডিশনার চুলে ব্যবহারের পর ধুয়ে ফেলার কোনো প্রয়োজন হয় না।  লিভ ইন কন্ডিশনারগুলোতে মেইনলি ময়েশ্চারাইজিং, হাইড্রেটিং ও প্রোটেকটিভ উপাদানের একটি ব্যালেন্সড কম্বিনেশন থাকে। হেয়ার ওয়াশ ছাড়াই এটি ড্রাই হেয়ারে ডিরেক্ট ব্যবহার করা যায় যা ইন্সট্যান্ট শাইনি, সিল্কি ও হেলদি লুক পেতে। সেই সাথে এই কন্ডিশনার ড্যাম্প হেয়ারেও ব্যবহার করা যায় চুলে ময়েশ্চারাইজার সিল করার জন্য। এ ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুলে ড্রাইনেস ও রাফনেস কমে যায় এবং চুল ম্যানেজেবল রাখতে সাহায্য করে।

তবে এ ধরনের কন্ডিশনারকে কখনোই রিনস আউট কন্ডিশনারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, বরং চুলের এক্সট্রা কেয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। লিভ ইন হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলেই এ কন্ডিশনারের টেক্সচার লাইটওয়েট হয়ে থাকে। চাইলে যেকোনো হিট স্টাইল ও হেয়ার স্টাইলিংয়ের আগে এ কন্ডিশনারকে প্রি স্টাইলার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। হিট স্টাইলের ক্ষেত্রে এটি প্রোটেকটিভ লেয়ার হিসেবেও কাজ করে।

ভলিউমাইজিং কন্ডিশনার

৪. ভলিউমাইজিং কন্ডিশনার

এ ধরনের কন্ডিশনার চুলকে ময়েশ্চারাইজড রাখার পাশাপাশি চুলে ভলিউম আনতেও সাহায্য করে। ফ্ল্যাট ও থিন হেয়ারে ইনস্ট্যান্ট ভলিউম ইফেক্ট দিতে এ ধরনের কন্ডিশনারে কিছু ভলিউমাইজিং উপাদান ও প্ল্যান্ট এক্সট্রাক্ট ( ক্যামোমিল, জিনসেং) থাকে, যা চুলের ভলিউম লিফটিং করে। এ ধরনের কন্ডিশনার চুলে ইনস্ট্যান্ট ভলিউম পেতে হেল্প করে বলে থিন ও ফ্ল্যাট হেয়ারে ব্যবহারের জন্য এটি বেশ উপযোগী। হেয়ার ওয়াশের পর এ ধরনের কন্ডিশনার কিছুক্ষণ চুলে রেখে ধুয়ে ফেলতে হয়, অর্থাৎ এটিও একটি রিনস আউট কন্ডিশনার। এ ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুলে টেম্পোরারি ভলিউমাইজিং ইফেক্ট আসলেও তা লং টাইম কোনো সমাধান নয়। সেই সাথে এতে থাকা কিছু উপাদানের জন্য রেগুলার বা ফ্রিকোয়েন্টলি ব্যবহারে এটি চুলের আগাকে শুষ্ক করে ফেলতে পারে।

৫. ময়েশ্চারাইজিং কন্ডিশনার

ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড চুলকে ময়েশ্চারাইজিং, সফট ও ম্যানেজেবল রাখতে ব্যবহার হয় ময়েশ্চারাইজিং কন্ডিশনার। এ ধরনের কন্ডিশনারে ইমোলিয়েন্ট জাতীয় উপাদান বেশি থাকে, সেই সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান্ট অয়েল ও ফ্যাটি অয়েল। এছাড়াও হিউমেকট্যান্ট উপাদানও এতে বিদ্যমান থাকে। এটিও একটি রিনস আউট কন্ডিশনার যা হেয়ার ওয়াশের পর অ্যাপ্লাই করে মোটামুটি ২-৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হয়৷ ড্রাই ও রাফ হেয়ারে উইকলি এই কন্ডিশনার ব্যবহার করলে কার্যকর ইফেক্ট পাওয়া যায়।

হেয়ার সিরাম

৬. হেয়ার সিরাম

যদিও এটি কোনো কন্ডিশনার নয় তবে চুলকে ইনস্ট্যান্ট ময়েশ্চারাইজিং ইফেক্ট দিতে এটিও লিভ ইন কন্ডিশনারের মতোই হেল্প করে থাকে, এই কন্ডিশনার ব্যবহার করার পর ধুয়ে ফেলতে হয় না । বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান্ট বেইজড অয়েল, ফ্যাটি অয়েল ও কিছু সিলিকনের সমন্বয়ে এ ধরনের অয়েল টাইপ হেয়ার সিরাম তৈরি হয়। চুলে বেশ সুন্দর শাইনি ইফেক্টের পাশাপাশি চুল জটমুক্ত রাখতে এবং চুল লং টাইম ম্যানেজেবল করতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। ড্যাম্প হেয়ারের পাশাপাশি ড্রাই হেয়ারে কয়েক ড্রপ নিয়ে চুলের লেন্থ এ অ্যাপ্লাই করতে হয়। এর ফলে চুলের উষ্কখুষ্ক ভাব অনেক কমে আসে এবং চুলের ড্রাইনেস দূর হয়ে চুল থাকে জটমুক্ত ৷

আশা করছি এখন থেকে আপনারা নিজেদের হেয়ার টাইপ ও কনসার্ন বুঝে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার।

অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।

ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক

 

The post হেয়ার কনসার্ন অনুযায়ী সঠিক কন্ডিশনার ব্যবহার করছেন তো? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/8Vnku30
Sumaiya Rahman

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina

হেভি ব্রেস্ট এর জন্য পিওর কটন ফেব্রিকের কমফোর্টেবল ব্রা খুঁজছেন?

বডি শেইপ ও বয়স অনুযায়ী ইনার ওয়্যারে যে ভ্যারিয়েশন আসে, সেটা আমরা অনেকেই জানি না! টিনেজে ডেভেলপিং ব্রেস্ট এর জন্য এক ধরনের ব্রা, বয়স্ক নারীদের জন্য এক ধরনের ব্রা, নতুন মায়েদের জন্য আরেক ধরনের ব্রা। শারীরিক গঠন বা ব্রেস্ট শেইপ অনুযায়ী ইনার ওয়্যার সিলেকশন খুবই জরুরি! মধ্যবয়সী বা বয়স্ক নারীদের জন্য স্যুইটেবল লঞ্জেরির রিভিউ জানাবো আজকের ফিচারে। হেভি ব্রেস্ট এর জন্য পিওর কটন ফেব্রিকের কমফোর্টেবল ব্রা যারা খুঁজছেন, তাদের জন্য রিভিউটি হেল্পফুল হবে আশা করি। হেভি ব্রেস্ট এর জন্য কেমন ব্রা বেছে নিতে হবে? ব্রেস্টকে প্রোপারলি সাপোর্ট দেয়, এনাফ কভারেজ পাওয়া যায় এবং প্রশস্ত ব্যান্ড থাকে, এমন ব্রা আপনাকে চুজ করতে হবে। বয়সের সাথে সাথে শারীরিক গঠনেও বেশ পরিবর্তন আসে। বাল্কি ফিগার বা কার্ভি বডির জন্য পারফেক্ট ব্রা সিলেক্ট করাটা একটু ডিফিকাল্ট মনে হয়। চিন্তা নেই, আজ এমনই একটি ব্রা সম্পর্কে জানাবো। মধ্যবয়সী ও বয়স্ক নারীদের জন্য স্যুইটেবল ব্রা আমাদের বাসায় মা, দাদি বা বয়স্ক নারী সদস্য যারা আছেন, তাদের কমফোর্টের বিষয় নিয়ে আমরা কখনো ভেবেছি কি? আরামের বিষয়টিকেই এই বয়সে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। এই বয়সে হে

রিবন্ডিং নাকি কেরাটিন ট্রিটমেন্ট, কোনটি আপনার জন্য পারফেক্ট?

কোনো অকেশন বা ইভেন্টে যাওয়ার জন্য নিজের পছন্দের আউটফিট পরে, সুন্দরভাবে সেজেগুজে যদি দেখতে পান, চুল একদম ফ্রিজি হয়ে আছে, চুলে কোনো শাইন নেই, সিল্কি ভাবও নেই তখন মনটাই খারাপ হয়ে যায়, তাইনা? সত্যি বলতে চুল রাফ ও আনম্যানেজেবল হয়ে থাকলে স্টাইলিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ স্ট্রাগল করতে হয়। দেখা যায়, চুল ছেড়েও রাখা যায় না, আবার শখ করে কোনো হেয়ারস্টাইল করলেও দেখতে ভালো লাগেনা। রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই সিল্কি, স্ট্রেইট এবং হেলদি লুকিং চুল পাওয়া পসিবল। তবে অনেকেই এই দু’টো ট্রিটমেন্টের পার্থক্য বুঝতে পারেন না, যার ফলে ডিসিশন নিতে পারেন না যে কোনটি তাদের চুলের জন্য বেশি স্যুইটেবল হবে। আপনাদের সব কনফিউশন ক্লিয়ার করতে আজকের ফিচারে থাকছে রিবন্ডিং নাকি কেরাটিন কোন ট্রিটমেন্টটি আপনার জন্য ভালো হবে তা নিয়ে বিস্তারিত। রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কি সেইম অনেকেই মনে করেন, রিবন্ডিং ও কেরাটিন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে যেহেতু স্ট্রেইট, স্মুথ ও ম্যানেজেবল হেয়ার পাওয়া যায়, তাই এগুলোর মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। এটি একটি বড় মিসকনসেপশন। এই দু’টো ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে একই রকম আউটপুট আসে ঠিকই, কিন্তু