Skip to main content

শিশুর ইন্টারনেট আসক্তি কীভাবে কমাবেন?

বর্তমান যুগ যে প্রযুক্তির যুগ তা তো সবাই জানেন। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ এখন সবার হাতের মুঠোয়। ইন্টারনেট কানেকশন এখন সবার বাড়িতেই আছে। আজকাল সব সমস্যার একটাই সমাধান আমাদের, সেটা হলো মোবাইল। যখনই বাচ্চা খেতে চায় না তখনই আমরা মায়েরা বাচ্চার সামনে ফোনটি নিয়ে এসে গান বা রাইমস চালিয়ে দেই। এতে করে প্লেটের সব খাবার মুহূর্তের মধ্যেই অদৃশ্য হয়ে যায়। অতি ব্যস্ত মায়েরা অবশ্য এতে খুশিই এই ভেবে যে, কৌশলটি কাজে লাগছে এবং অনেক সময়ও বেঁচে যাচ্ছে। কিন্তু বিপত্তিটা ঘটে পরে যখন দেখি যে,পাঁচ বছর বয়সী শিশু সন্তান কাহিনীচিত্র দেখা থেকে শুরু করে গেম ও মিউজিক প্রতি চরম আসক্ত হয়ে গেছে। শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কেন ক্ষতিকর এবং কীভাবে এই আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করবেন তা নিয়েই আজকের ফিচার।

স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি থেকে কী কী ক্ষতি হতে পারে?

সাম্প্রতিক একটি ঘটনা বলি। ভারতে সম্প্রতি নয় বছর বয়সি এক শিশু বাবা-মা স্মার্টফোন দিতে অস্বীকার করায় ছুরি দিয়ে নিজেই নিজের শরীরে আঘাত করে। আশা করি এই ঘটনা থেকেই বুঝতে পারছেন এই আসক্তি শিশুদের জন্য কতটা ক্ষতিকর।

স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি থেকে আরো যেসব সমস্যা হয়:

  • অমনোযোগীতা
  • শ্রবনশক্তি হ্রাস পাওয়া
  • চোখের দ্যুতি কমে যাওয়া
  • স্পিচ ডিসওর্ডার
  • অটিজম

শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কীভাবে কমানো যায়?

স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তির কারণ কী?

১) ইন্টারনেটে বর্তমানে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। যার ফলে শিশুরা সহজেই বিভিন্ন ডিভাইস পরিচালনায় পারদর্শী হয়ে উঠছে।

২) কোনো কোনো ক্ষেত্রে একাকীত্বই আমাদের সন্তানদের গ্যাজেটের ওপর নির্ভরশীল করে তুলছে।

৩) কিন্তু বড় বড় শহরগুলোতে খেলার মাঠ না থাকাটাও এর পেছনে অনেকাংশে দায়ী।

৪) সন্তানের এ ধরনের আসক্তির জন্য তাদের বাবা-মায়েরাও দায়ী। শিশুরা তাদের পিতা-মাতার কাছ থেকেই এই অভ্যাসগুলো পায়। যাদের পিতামাতা ক্রমাগত ফোনে ব্যস্ত থাকে অথবা অফিস থেকে ফিরে ক্লান্তির কারণে শিশুকে ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না। তখন তারা শিশুকে ব্যস্ত রাখতে নিজেরাই তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেন।

এই সমস্যার প্রতিকার কী?

স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি যেহেতু একদিনে হয়না, তাই রাতারাতি এটি দূর করা যাবে না। এই আসক্তি দূর করে অভিভাবকেরা যা করতে পারেন-

১.পারিবারিক ভাবে গুণগত সময় কাটান। যেমনঃ একসাথে খাবার খাওয়া, গল্প করা, ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি।

২.বাচ্চাকে সময়ানুবর্তী হতে শেখান। সময়ের মূল্য ছোট থেকে বুঝতে শিখলে স্মার্টফোন চালিয়ে তারা আর সময়ের অপচয় করবে না।

৩.শিশুর জন্য সময় বের করুন। জীবনে ব্যস্ততা থাকবেই, কিন্তু তাই বলে নিজের সন্তানকে সময় দিতে ভুলে যাবেন না।

৪.বেশি বেশি বই পড়া উৎসাহিত করুন। আপনার সন্তানের বয়স অনুযায়ী তাকে বই কিনে দিন। আশেপাশে কোনো লাইব্রেরি থাকলে সেখানেও নিয়ে যেতে পারেন।

শিশুকে সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করুন

৫. ছবি আঁকা, নাচ, গান, ক্রাফটিং ইত্যাদি সৃজনশীল কাজে শিশুকে উৎসাহ দিন।

৬. আপনার সন্তানদের কিছু জীবন-দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচিতে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন।

৭. নিবিড়ভাবে সন্তানের সমস্যাগুলো জানুন এবং তার জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ নিশ্চিত করুন।

৮. শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে দিন।

সর্বোপরি, বাবা-মা হিসেবে যে ভূমিকা আপনাদের পালন করার কথা তা সঠিকভাবে পালন করুন। যেহেতু প্রযুক্তি মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং তা থেকে পিছিয়ে থাকারও উপায় নেই তাই এক্ষেত্রে সচেতনভাবে এবং ইতিবাচক দিকগুলো ব্যবহার করতে হবে।

লিখেছেনঃ তাজরিনা রহমান জেনি

ছবিঃ সাটারস্টক

The post শিশুর ইন্টারনেট আসক্তি কীভাবে কমাবেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/uW9eOXE
Sumaiya Rahman

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...