Skip to main content

চুল পড়া কমিয়ে দ্রুত লম্বা করতে রোজমেরি অয়েলের জাদুকরী গুনাগুণ!

রোজমেরি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে পিজ্জা, পাস্তা অথবা মুখরোচক কোনো খাবারের কথা। খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেওয়া রোজমেরির যে আরো ব্যবহার আছে, তা কি জানেন? রোজমেরির আরেকটি গুণ হলো আমাদের চুলের যত্নে ম্যাজিকের মতো কাজ করে এটি। সরাসরি, পানিতে সেদ্ধ করে বা তেলের সাথে মিশিয়ে, যেকোনোভাবে ব্যবহারেই পাওয়া যায় রোজমেরির গুণাগুণ। আর এখন রোজমেরি অয়েল কিংবা অ্যাসেনশিয়াল অয়েলও পাওয়া যায়, বিভিন্ন হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টেও দেখা যায় উপাদানটি। চুল পড়া কমিয়ে দ্রুত লম্বা করতে রোজমেরি অয়েলের জাদুকরী গুণাগুণ আজ জানা যাক তাহলে।

চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়

স্টাডিতে দেখা গেছে, রোজমেরি অয়েল স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বাড়ায়। এর ফলে চুলের ফলিকলগুলোতে অক্সিজেন ও পুষ্টি শোষণের হার বেড়ে যায়, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য জরুরী। এছাড়াও এটি চুল ঝরে পড়া এবং অ্যালোপেশিয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

চুলের গোড়া শক্ত করে

রোজমেরিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেল, যা চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। নিয়মিত রোজমেরি অয়েল চুলে ব্যবহার করলে চুলের ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া এবং আগা ফাটার প্রবণতা কমে।

চুল পড়া কমিয়ে আনে 

রোজমেরিতে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপারটিজ, যা মাথার তালু ঠান্ডা রাখে এবং ইচিনেস কমায়। পরোক্ষভাবে এটি চুল পড়া কমাতে হেল্প করে। এছাড়াও এতে আছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রোপারটিজ, যা স্ক্যাল্পে কোনো ইনফেকশন থাকলে সেটি কমাতে সাহায্য করে।

খুশকি দূর করে

রোজমেরি নির্যাস স্ক্যাল্পের ন্যাচারাল অয়েলের ব্যালেন্স ঠিক রাখে, যে কারণে চুলের ও স্ক্যাল্পের রুক্ষ-শুষ্ক ভাব থাকে না এবং খুশকি দূর হয়। এতে যে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রোপারটিজ আছে, তা আমরা একটু আগেই জেনেছি, তাই না? যাদের সারাবছরই খুশকির সমস্যা থাকে, তারা যেকোনো ক্যারিয়ার অয়েল যেমন- কোকোনাট অয়েল, অলিভ অয়েলের সাথে রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল কয়েক ফোঁটা মিক্স করে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আর এখন এমন কিছু রোজমেরি অয়েলও পাওয়া যায় যাতে ক্যারিয়ার অয়েল মিক্স করা, সেগুলো সরাসরি চুলে ব্যবহার করা যায়।

শাইনি করে তোলে

চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার এর মতো কাজ করে রোজমেরি এবং চুলে ময়েশ্চার ধরে রাখার মাধ্যমে শুষ্কতা দূর করে। এরপরে চুল হয় আরো সুন্দর আর শাইনি।

যেভাবে চুলের যত্নে রোজমেরি ব্যবহার করা যায়

অয়েল হিসেবে 

রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল চুলের যত্নে বেশ সমাদৃত। কয়েক ফোঁটা রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল আপনার প্রতিদিনের ব্যবহার করা তেলের সাথে মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন। এছাড়াও শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এর সাথেও রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করে এর গুণাগুণ পাওয়া যায়। অ্যাসেনশিয়াল অয়েল কিন্তু অনেক স্ট্রং, তাই ৩/৪ ফোঁটা ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

বয়েলড ওয়াটারে রোজমেরি

তেলের মতো একই উপকার পাবেন রোজমেরি বয়েলড ওয়াটার ব্যবহার করেও। কয়েকটি কাঁচা রোজমেরির পাতা গরম পানিতে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ফুটিয়ে সেই ফোটানো পানি ঠান্ডা করে শ্যাম্পুর পরে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুল সিল্কি ও শাইনি হয়ে উঠবে। রোজমেরি পাতা বড় সুপারশপগুলো এখন পাওয়া যায়।

রোজমেরি হেয়ার প্যাক

চুলের যত্নে যেসব মাস্ক আমরা আগে থেকেই ব্যবহার করি, সেগুলোর সাথেই মিক্স করে নেওয়া যায় রোজমেরি। কয়েক ফোঁটা রোজমেরি অয়েল আপনার পছন্দের হেয়ার প্যাক অথবা মাস্কের সাথে মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন।

সতর্কতা 

যেকোনো প্রাকৃতিক উপাদানই অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই আপনার অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থাকলে প্যাচ টেস্ট না করে, নতুন কোনো উপাদান ব্যবহার করা ঠিক হবে না। সংবেদনশীল ত্বকে সরাসরি নতুন কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত নয়। প্যাচ টেস্টের জন্য খুব অল্প পরিমাণে উপাদান ত্বকের খুব ছোট্ট একটি অংশে অন্তত ২৪ ঘন্টা লাগিয়ে দেখতে হবে।

  • আপনার স্ক্যাল্প যদি অয়েলি হয়, তাহলে রোজমেরি ওয়াটার স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন
  • ড্রাই হেয়ার ও স্ক্যাল্পে রোজমেরি অয়েল ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন
  • নিয়মমতো ব্যবহার করুন, ২/৩ মাসের মধ্যে সুফল দেখতে পাবেন
  • হেয়ার কেয়ারের পাশাপাশি হেলদি ডায়েট চার্ট মেনে চলুন

চুল পড়া কমিয়ে দ্রুত লম্বা করতে রোজমেরি অয়েল আপনার হেয়ার কেয়ার রুটিনে যোগ করে নিতে পারেন। একেকজনের হেয়ার টাইপ আর কনসার্ন একেক ধরনের, তাই বেনিফিট পেতে কম বেশি সময় লাগতে পারে।

লিখেছেনঃ মৌ মণি পুষ্প

ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক

The post চুল পড়া কমিয়ে দ্রুত লম্বা করতে রোজমেরি অয়েলের জাদুকরী গুনাগুণ! appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/unbUjeG
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...