Skip to main content

হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করে পজিটিভ থাকার উপায়

দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন ধরনের ফিলিংসের মধ্য দিয়ে যাই। জীবনে চলার পথে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় আমরা প্রকাশ করি রাগ,অভিমান, দুঃখ কিংবা আনন্দ। কিন্তু যেই অনুভূতিটা আমাদের মনের মধ্যে থাকলেও আমরা সচরাচর প্রকাশ করতে চাই না তা হলো হিংসা কিংবা জেলাসি। কষ্ট ও আনন্দের অনুভূতির মতো এই অনুভূতিটাও অত্যন্ত স্বাভাবিক। অফিসে হয়তো আপনি দেখছেন আপনি প্রচণ্ড হার্ড ওয়ার্ক করেও তার ফলাফল পাচ্ছেন না, কিন্তু আপনার কলিগ আপনার থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আবার রাত জেগে পড়ালেখা করেও মনের মতো রেজাল্ট করতে পারলেন না কিন্তু আপনার বন্ধু আপনার থেকে ভালো নাম্বার পেয়ে গেলো। এমন অসংখ্য কারণে আমাদের আরেকজনের প্রতি জেলাসি বা হিংসাত্মক অনুভূতি হতে পারে। কিন্তু এই জেলাসি অজান্তেই সবার সাথে সম্পর্কগুলো নষ্ট করে এবং আমাদের ভালো থাকার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক কীভাবে হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করে আমরা একটি হ্যাপি ও পজিটিভ লাইফ লিড করতে পারবো।

হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে?

আপনার অনুভূতিকে গ্রহণ করুন

জেলাসিকে মোকাবেলা করার জন্য প্রথমেই আপনি যে কারো উপর জেলাস ফিল করছেন তা মেনে নিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় আমরা কারো উপর জেলাস ফিল করলেও সেটা স্বীকার করতে চাইনা। প্রথমেই আপনাকে মেনে নিতে হবে এবং নিজের কাছে পরিষ্কার থাকতে হবে যে আপনার আরেকজনের সাফল্য দেখে কিছুটা খারাপ লাগছে। কিন্তু অপরাধবোধে ভুগবেন না। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক হিউম্যান ন্যাচার। আপনি একা নন, অনেকেই এই অনুভূতির মধ্য দিয়ে যায়।

হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করে পজিটিভ থাকার উপায়

অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা বন্ধ করুন

প্রত্যেক মানুষের জীবনের স্টোরি ও জার্নি আলাদা। আমাদের সবার জীবনের জার্নি আলাদা হবার পরেও নিজেদের জীবনের সাথে আমরা অন্যদের জীবন তুলনা করে ফেলি। এতে করে আমাদের মনে নেগেটিভ ফিলিংস সৃষ্টি হয়৷ সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে আমরা এখন খুব সহজে অন্যের জীবনের অ্যাচিভমেন্টগুলো জানতে পারি। কিন্তু এই অ্যাচিভমেন্টটা অর্জন করার আগে একজন কতবার ব্যর্থ হয়েছে এবং তাকে কতটা কষ্ট করতে হয়েছে তা বেশিরভাগ সময় অজানাই থেকে যায়। তাই সেই সফলতার পেছনের গল্পটাও আমাদের জানা হয় না। অথচ আমরা ঠিকই তাদের সাফল্যের সাথে নিজের ব্যর্থতাকে তুলনা করে কষ্ট পেতে থাকি। তাই প্রথমে অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা বন্ধ করতে হবে।

জীবনকে প্রতিযোগিতা হিসেবে নিবেন না

আমাদের অনেকের মধ্যে সবসময় একটি ধারণা থাকে যে “আমাকে সব সময় সবার আগে থাকতে হবে।“ সত্যি বলতে সব সময় অন্যদের চাইতে এগিয়ে থাকা সম্ভব না। কারো লাইফই পুরোপুরি পারফেক্ট না। জীবনে সাফল্য ও ব্যর্থতা একে অপরের পরিপূরক। তাই অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা না করে নিজের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে ভালো কিছু করবার এবং নিজের গোল অ্যাচিভ করবার।

সবসময় পজিটিভ থাকুন

অন্যের সফলতা দেখলে অনেকেই নিজেকে ব্যর্থ মনে করে এবং নিজের লাইফের কোনো পজিটিভিটি তাদের চোখেই পড়ে না। হিংসাত্মক মনোভাব দূর করে যেকোনো পরিস্থিতিতে পজিটিভ থাকার জন্য আমরা লাইফের যেসব জায়গায় সফল হয়েছি সেগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সেই সাথে আপনার যে দক্ষতাগুলো রয়েছে সেগুলোও বিবেচনা করতে হবে। নিশ্চয়ই এমন অনেক কাজ আছে যে আপনি খুব ভালো করতে পারেন। এভাবে পজিটিভ থিংকিং এর মাধ্যমে আপনার মনের নেগেটিভ ফিলিংসগুলো আপনি সরিয়ে ফেলতে পারেন।

নিজের লাইফের গোল সেট করুন

নিজের লাইফের গোল সেট করুন

হিংসাত্মক মনোভাব কমাতে অন্যের কাজের উপর ফোকাস না করে আগে নিজের একটি নির্দিষ্ট গোল সেট করুন। আজ থেকে কয়েক বছর পর আপনি নিজেকে যেখানে দেখতে চান সেখানে যাবার জন্য আপনার কেমন ধরনের স্কিল প্রয়োজন তা নিয়ে আগে কাজ করতে হবে। নিজের লক্ষ্য পূরণ করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা নোটপ্যাডে লিখে ফেলুন এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং নিজেকে নিয়ে ইনসিকিউরিটি কমে আসবে।

অন্যের সাকসেস সেলিব্রেট করুন

একটা বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন। আপনার বন্ধুর সাফল্য কিংবা আপনার আশেপাশের কারো জীবনে ঘটে যাওয়া ভালো ঘটনা আপনার জীবনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তাই আপনার আশেপাশের কেউ যদি ভালো কাজ করে এবং ভালোভাবে এগিয়ে যায়, তাহলে তাকে শুভেচ্ছা জানান। অন্যের সফলতা থেকে আপনি অনুপ্রেরণা নিতে পারেন, তবে কখনোই জেলাস ফিল করবেন না।

নিজের জীবনের লক্ষ্য সেট করুন

নিজের অগ্রগতি এড়িয়ে যাবেন না

নিজের সাথে নিজের তুলনা করুন। কারণ এর মাধ্যমে আপনি নিজের অগ্রগতি বুঝতে পারবেন। একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, বছর দুয়েক আগেও আপনি যে কাজ পারতেন না এখন হয়তো সে কাজ খুব দক্ষতার সাথে পারছেন। আবার গত কয়েক বছরেও আপনার জীবনে অবশ্যই কিছু পজিটিভ চেঞ্জ এসেছে। এভাবে নিজের সাথে নিজের তুলনা করলে দেখবেন আপনি অনেক ধরনের কঠিন কাজ করেই এবং অনেক বাধা বিপত্তি পার করেই আজকে এই জায়গায় এসে দাঁড়াতে পেরেছেন। এভাবে চিন্তা করলে দেখবেন জেলাসি অনেকটাই কমে এসেছে।

পরিশেষে মনে রাখবেন, কারো প্রতি হিংসাত্মক মনোভাব কিংবা যেকোনো ধরনের নেগেটিভ ফিলিংস দিনশেষে আপনারই ক্ষতি করবে। এর ফলে আপনার নিজের প্রতি হীনমন্যতা তৈরি হয়ে আত্মবিশ্বাস কমে আসবে এবং আপনি চাইলেও হয়তো তখন আর সফল হতে পারবেন না। আপনি যদি মনে করেন আপনার এই অনুভূতিগুলো আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তাহলে অবশ্যই এক্সপার্ট এর সাহায্য নিতে হবে৷

ছবিঃ সাটারস্টক

The post হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করে পজিটিভ থাকার উপায় appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/r29hUfE
Sumaiya Rahman

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...