Skip to main content

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে যে খাবারগুলো জাদুর মতো কাজ করে

সুন্দর ও লাবণ্যময় ত্বক তো সবাই চান। কিন্তু বয়সের সাথে সাথে ত্বক তারুণ্য হারাতে থাকে এবং ত্বকে দেখা দিতে থাকে বলিরেখা, ফাইন লাইনস ও রিংকেলের মতো বিভিন্ন রকম সমস্যা। ত্বকের বার্ধক্য একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া হলেও অনেক সময় আগেই চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে যায়। কম বেশি সবাই জানতে চান কীভাবে এই বয়সের ছাপ পড়াকে থামানো যেতে পারে। তাদের জন্য বলছি, এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে ত্বকে বয়সের ছাপ পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আসুন আজকের ফিচারে সেই খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নেই যেগুলো ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে৷

নজর দিন নিজের খাদ্যাভ্যাসে

ত্বক ভালো রাখতে আমরা বাইরে থেকে যত প্রোডাক্ট ব্যবহার করি না কেন, যদি আমাদের শরীরে নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেলের ঘাটতি দেখা দেয়, তখন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলোও ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা। তাই শুধু প্রোডাক্ট ব্যবহারেই গুরুত্ব দিলে হবে না, বরং সেই সাথে প্রয়োজন ভেতর থেকে ত্বকে পুষ্টি যোগানো। আর ত্বক ভিতর থেকে পুষ্টি যোগাতে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবারের কোনো বিকল্প নেই।

ব্যালেন্সড ডায়েট মেনটেইন করুন

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে ভূমিকা রাখে যে খাবারগুলো

চলুন জেনে নেওয়া যাক যে খাবারগুলো খেলে আপনারা ত্বক হয়ে উঠবে তারুণ্যদীপ্ত।

১. কাঠবাদাম

কাঠবাদাম অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর একটি খাবার। এতে রয়েছে ভিটামিন ই যা আমাদের ত্বককে ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে থাকে। তাছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে হেলদি ফ্যাট ও প্রোটিন। তাই চেষ্টা করবেন ডায়েটে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও কাঠবাদাম রাখতে।

২.আখরোট ও বাদাম

আখরোট ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম, যেমন চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাজুবাদাম এগুলোও হেলদি ফ্যাট ও প্রোটিনের উৎস। এ ধরনের খাবারগুলোও ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। চিনাবাদাম যেহেতু তুলনামূলক সাশ্রয়ী, তাই কাঠবাদাম বা অন্যান্য বাদাম গুলো প্রতিদিনের ডায়েটে না রাখতে পারলেও অন্তত একমুঠ করে চিনাবাদাম রাখার চেস্টা করুন।

৩. টমেটো

টমেটোতে আছে লাইকোপিন সমৃদ্ধ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বককে পরিবেশজনিত দূষণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। টমেটো ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও রক্ষা করে। এটি ভিটামিন সি এরও একটি ভালো উৎস। ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়াতে সাহায্য করে যার, ফলে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় থাকে এবং ত্বক হয়ে উঠে সুন্দর, টানটান ও মসৃণ।

৪. লেবু

লেবু ভিটামিন সি এর অন্যতম একটি উৎস। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ত্বকের কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়াতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় লেবু রাখার কোনো বিকল্প নেই। এটি যেমন দামেও সস্তা, তেমনি সহজলভ্য বলে পাওয়া যায় হাতের নাগালেই।

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে শাকসবজি

৫.শাকসবজি

লাল শাক, পালং শাক ও বিভিন্ন ধরনের রঙিন শাকসবজি ফাইবার ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের অন্যতম উৎস। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার দীর্ঘদিন পর্যন্ত ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখে এবং এজিং প্রসেসকে স্লো ডাউন করে। সেই সাথে এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও মিনারেল ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। তাই যাদের খাবারে শাকসবজির পরিমাণ বেশি থাকে, তাদের ত্বক অন্যদের তুলনায় বেশি টানটান ও মসৃণ হয়ে থাকে। সুতরাং প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি রাখার চেষ্টা করুন।

৬. মাছ

মাছ আমিষের একটি অন্যতম উৎস। মিঠাপানির মাছগুলোর পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছেও রয়েছে ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিড, মিনারেল, প্রোটিন, যা আমাদের মাসলকে শক্তিশালী করে এবং ত্বক থেকে বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলোকে কমাতে সাহায্য করে। তাই শরীরে আমিষের চাহিদা পূরণে প্রতিদিন মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৭. ভিটামিন সি যুক্ত ফল

কমলালেবু, মাল্টা, আমলকি, জাম্বুরা ইত্যাদি ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল বেশি বেশি খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজন। ভিটামিন সি যেমন অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস, তেমনি কোলাজেন প্রোডাকশনেও এটি ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি ফ্রি রেডিক্যালের কারণে ত্বকে হওয়া ড্যামেজের সাথে লড়াই করে এবং ত্বক থেকে প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনসগুলোকে কমিয়ে আনে। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতেও সহায়তা করে।

নিয়মিত গ্রিন টি খেতে ভুলবেন না

৮. গ্রিন টি

অ্যান্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ আরেকটি খাবার হলো গ্রিন টি এটি ত্বকের হাইড্রেশন লেভেল ও ইলাস্টিসিটি ন্যাচারালি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে পরিবেশ দূষণ ও ফ্রি রেডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। যার ফলে ত্বকের বলিরেখা, ফাইন লাইনস ইত্যাদি বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলোও ধীরে ধীরে কমে আসে। তাই প্রতিদিন অন্তত এক কাপ গ্রিন টি পান করতে পারেন।

৯. গাজর

গাজরে রয়েছে থেকে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও ত্বকে বয়সের ছাপ নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন এ যা ত্বক সুন্দর রাখার পাশাপাশি চোখ ভালো রাখতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন পরিমাণমতো গাজর খাওয়া উচিত।

১০.চিয়া সিডস

চিয়া সিডস প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি একদিকে যেমন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে, অন্যদিকে এজিং প্রসেসকেও স্লো ডাউন করে। দানাদার এই খাবারে আছে উদ্ভিজ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে ডিম ও দুধ

১১. ডিম ও দুধ

ডিম ও দুধ আদর্শ আমিষ জাতীয় খাদ্যের উদাহরণ। এ দু’টি খাবারই ত্বকে অ্যান্টি এজিং প্রোপার্টিজ হিসেবে কাজ করে। এগুলো ত্বকের পাশাপাশি পেশি ও হাড় মজবুত রাখতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম ও দুধ রাখতেই হবে।

১২.রসুন

রসুনে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ আছে। এতে থাকা এলিসিন দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

আশা করছি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখা নিয়ে আজকের আলোচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। পরিশেষে বলতে চাই, ত্বক সুন্দর ও তারুণ্যদীপ্ত রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। যখন আপনার ত্বক ভিতর থেকে পুষ্টি পাবে, তখনই দেখবেন সুন্দর ত্বক পাওয়া আর কঠিন কাজ বলে মনে হবে না।

ছবিঃ সাটারস্টক

The post ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে যে খাবারগুলো জাদুর মতো কাজ করে appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/CagYrNL
Sumaiya Rahman

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...