Skip to main content

সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে বিষয়গুলো

“কোনো মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেই আমার স্কিনে ইরিটেশন, একনে দেখা দেয়”- এরকম সমস্যা কিন্তু আমরা অনেকের কাছ থেকেই শুনে থাকি। যদি আপনার স্কিন কন্ডিশন সেনসিটিভ হয়ে থাকে, তাহলে আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। অনেকেই মনে করেন সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ করাই যাবে না! আসলে ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। আমরা কিছু ইজি ও সিম্পল টিপস ফলো করার মাধ্যমে সেনসিটিভ স্কিনকে ইরিটেট না করেই পারফেক্ট মেকআপ লুক পেতে পারি। আজকের ফিচারে থাকছে এ সম্পর্কে বিস্তারিত।

কীভাবে বুঝবেন আপনার স্কিন সেনসিটিভ?

প্রথমেই সেনসিটিভ স্কিন কী, সেটা নিয়ে আমাদের জানতে হবে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন ধরনের মেকআপ বা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস ব্যবহার করে থাকি। সেনসিটিভ স্কিন হলো একটি স্কিন কনসার্ন যার কারণে বিভিন্ন বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে স্কিনে বিভিন্ন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যেমন: লালচে ভাব, ব্রণ, র‍্যাশ, অ্যালার্জি অথবা ইচিনেস দেখা দেয়। এছাড়াও ধুলাবালি, কড়া রোদ ইত্যাদির সংস্পর্শে আসলেও সেনসিটিভ স্কিনে একই প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার স্কিন সেনসিটিভ

এখন প্রশ্ন হলো স্কিন কেন সেনসিটিভ হয়ে যায়? ড্যামেজড স্কিন ব্যারিয়ার, ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করা, অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েশন, পল্যুশন, ওয়েদার, হরমোনাল ইমব্যালেন্স ইত্যাদির কারণে আমাদের স্কিন সেনসিটিভ হয়ে যেতে পারে। যার ফলে মেকআপ বা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারে স্কিন রিয়্যাক্ট করে।

সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ ও কিছু ইফেক্টিভ টিপস

সেনসিটিভ হলে অল্পতেই স্কিনে ইরিটেশন তৈরি হয়। আমরা যদি কিছু ছোট ছোট টিপস ফলো করে মেকআপ করি, তাহলেই কিন্তু খুব ইজিলি আমাদের পছন্দের মেকআপ লুক পেতে পারি। তাহলে চলুন জেনে নেই কিছু মেকআপ টিপস যা আমাদের সেনসিটিভ স্কিনের জন্য কার্যকরী ফলাফল দিতে পারে।

সঠিক মেকআপ প্রোডাক্ট সিলেকশন

সঠিক ফর্মুলার মেকআপ প্রোডাক্ট সিলেকশন সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ভুল প্রোডাক্ট সিলেকশন সেনসিটিভ স্কিনে নানারকম কমপ্লিকেশন সৃষ্টির পাশাপাশি ড্যামেজের কারণ হতে পারে। সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে অবশ্যই অ্যালকোহল ও ফ্রেগ্রেন্স ফ্রি মেকআপ প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে। কেননা এই উপাদানগুলো সাধারণত স্কিনের সেনসিটিভিটিকে ট্রিগার করে। খেয়াল রাখতে হবে এই প্রোডাক্টগুলো যেন অবশ্যই নন কমেডোজেনিক হয়।

সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ

নতুন প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট

সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে নতুন প্রোডাক্ট ব্যবহারে রিঅ্যাকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই যেকোনো নতুন প্রোডাক্ট ফেইসে ব্যবহারের পূর্বে আমাদেরকে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে। এর জন্য কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে আমাদের কানের পেছনের অংশে অ্যাপ্লাই করে রাখতে হবে কিছুটা সময়। যদি ব্যবহারের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কোনোরকম রিঅ্যাকশন দেখা না দেয়, তাহলে বুঝে নিতে হবে প্রোডাক্টটি স্কিনের জন্য নিরাপদ।

জেন্টল ক্লেনজার ব্যবহার

মেকআপ করার আগে স্কিন সঠিকভাবে ক্লিন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে স্কিন প্রোপারলি ক্লিন না করে মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে দেখা দিতে পারে ইরিটেশন। পি এইচ ব্যালেন্সড সোপ ফ্রি ক্লেনজার বেছে নিতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই

স্কিন প্রোপারলি ক্লিন করে নেওয়ার পরেই কিন্ত আপনার স্কিন মেকআপ অ্যাপ্লাই করার জন্য রেডি হয়নি! মেকআপ এর আগে স্কিনকে প্রোপারলি ময়েশ্চারাইজড করে নিতে হবে। সেরামাইড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিতে পারেন। আপনার স্কিন যদি ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজড থাকে তাহলে একটি স্মুথ মেকআপ বেইজ তো পাবেনই, পাশাপাশি স্কিনে সম্ভাব্য ইরিটেশনের রিস্কও কিন্তু কমে যায়!

ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই

সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই

সেনসিটিভ স্কিনের ব্যারিয়ার সাধারণত কিছুটা দুর্বল হয়ে থাকে। তাই সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের আরো ক্ষতি করতে পারে। ডে টাইমে মেকআপের আগে সানস্ক্রিন কিন্তু স্কিপ করা যাবে না। সেনসিটিভ স্কিনের জন্য মিনারেল সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

মেকআপ টুলস রেগুলার ক্লিন করা

যদি আমরা মেকআপ টুলগুলোর ক্ষেত্রে প্রোপার হাইজিন এনশিওর না করতে পারি, তাহলে কিন্তু আমরা স্কিনকে প্রোটেক্ট করতে পারবো না। সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে মেকআপ টুলস প্রোপারলি ক্লিন আছে কিনা তা দেখে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে নোংরা মেকআপ ব্রাশ বা বিউটি ব্লেন্ডার থেকে হতে পারে ব্যাকটেরিয়াল কন্টামিনেশন, যা স্কিনকে ইরিটেট করতে পারে। তাই অবশ্যই ডেইলি বেসিসে আমাদের মেকআপ টুলস ক্লিন করতে হবে এবং সেগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রোপারলি মেকআপ রিমুভ করা

মেকআপ যেভাবে আমাদের ন্যাচারাল ফেইস ফিচারস এনহ্যান্স করে, ঠিক সেভাবেই মেকআপ থেকে কিন্তু আমাদের স্কিন ড্যামেজও হতে পারে, যদি আমরা প্রোপারলি মেকআপ রিমুভ না করি। স্কিনকে হেলদি রাখতে অবশ্যই স্কিন থেকে মেকআপ সঠিকভাবে রিমুভ করা জরুরি। বিশেষ করে সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় মেকআপ নিয়ে থাকার পর যদি ঠিকমতো মেকআপ রিমুভ করা না হয়, তাহলে স্কিনে ব্রেকআউট দেখা দিতে পারে সহজেই। তাই সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ অ্যাপ্লাই করলে তা অবশ্যই সঠিকভাবে রিমুভ করতে হবে। এক্ষেত্রে ডাবল ক্লেনজিং কিন্তু মাস্ট! প্রথম ধাপে নিজের পছন্দের অয়েল ক্লেনজার বা মাইসেলার ওয়াটার বা ক্লেনজিং বাম বেছে নিতে পারেন। তারপর রেগুলার ওয়াটার বেইজড ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ভালোভাবে ক্লিন করে নিন। সেনসিটিভ স্কিনের জন্য স্পেশালি ফর্মুলেটেড প্রোডাক্ট রেঞ্জ এখন অ্যাভেলেইবল, সেগুলো চুজ করতে পারেন।

আশা করি, সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ করবেন কিনা তা নিয়ে আর ভাবতে হবে না। আসলে আপনি কীভাবে মেকআপ করবেন বা করবেন কিনা, তা পুরোটাই আপনার পারসোনাল প্রিফারেন্স। তবে যদি সেনসিটিভ স্কিন হয়ে থাকে, তাহলে এই টিপসগুলো ফলো করে মেকআপ করলে স্কিন ইরিটেটেড হবে না। অথেনটিক প্রোডাক্টস পারচেজ করার জন্য সাজগোজ হতে পারে আপনার জন্য বেস্ট অপশন। তাই ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...