Skip to main content

হঠাৎ করে ত্বকে ইরিটেশন হচ্ছে? কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস নয় তো?

কখনো কি এমন হয়েছে যে নতুন কাপড় পরার পর, ডিটারজেন্ট ধরার পর কিংবা কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের পর ত্বকে ইরিটেশন, চুলকানি বা র‍্যাশ খেয়াল করেছেন? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়ে থাকে, তাহলে বলা যায় যে আপনি জীবনে কখনো না কখনো কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। এটি তেমন ক্ষতিকর কোনো ত্বকের রোগ নয়, তবে মাঝে মাঝে বেশ অস্বস্তিকর হয়ে উঠে। আজকের ফিচারে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস সম্পর্কে।

কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস কী?

যদি কোনো কিছুর সংস্পর্শে ত্বকে ইরিটেশন, ইচিং, লালচে র‍্যাশ ইত্যাদি দেখা দেয়, তবে এ ধরনের সমস্যাকে কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস বলা হয়। সাধারণত নতুন কোনো মেকআপ বা স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট স্যুট না করলে, উল বা সিনথেটিক কোনো ম্যাটেরিয়ালের আউটফিট পরলে এটি হতে পারে। তাছাড়াও প্লাস্টিক কিংবা অন্য যেকোনো অ্যালার্জি বা অস্বস্তি সৃষ্টিকারী পদার্থের সংস্পর্শে শরীরের কোনো অংশ সরাসরি আসলে সেখেত্রেও এটি হতে পারে। এটি কোনো মারাত্মক ত্বকের রোগ না হলেও চুলকানি ও জ্বালাপোড়ার জন্য বেশ অস্বস্তি অনুভূত হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে অবস্থা খারাপের দিকেও যেতে পারে।

কেন এটি হয়?

যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষের ত্বকেই কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস দেখা দিতে পারে। চলুন এটি হওয়ার কারণগুলো জেনে নেই।

১. মেয়াদ উত্তীর্ণ স্কিনকেয়ার বা মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে।

২. ত্বকের ধরনের সাথে মানানসই নয় এমন ধরনের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে।

৩. আসবাবপত্র ও ঘর-বাড়ি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অ্যাসিডিক বা অতিরিক্ত ক্ষারজাতীয় কিছু ত্বকের সংস্পর্শে আসলে।

৪ .কোনো ধাতু, সুগন্ধি বা কোনো রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে এলে ত্বকে এটি হতে পারে।

কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস মূলত দুই ধরনের হয়

কত ধরনের হয়?

কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস সাধারণত দু’ধরনের হয়, এগুলো হলো অ্যালার্জিক ও ইরিট্যান্ট কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস। অ্যালার্জিক কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস মূলত কোনো পদার্থ বা ম্যাটেরিয়ালের অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনের জন্য হয়ে থাকে। যখন ত্বক কোনো ধরনের নতুন প্রোডাক্টের সংস্পর্শে আসে, যেমন জুয়েলারি,কসমেটিকস, সিনথেটিক কাপড়,রঙ, পারফিউম এবং ত্বকে স্যুট করেনা, তখন স্কিনে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হয়।

উপসর্গ

১. একজিমা জাতীয় ফুসকুড়ি

২. ড্রাই ও ফ্লেকি স্কিন

৩. চুলকানি

৪. ব্যাথা ও ফোলাভাব

৫. ত্বক অতিমাত্রায় শুষ্ক হয়ে যাওয়া এবং শুষ্ক অংশ থেকে মরা চামড়া উঠা

৬. আক্রান্ত স্থান প্রথমে লালচে ও পরে কালচে বর্ণ ধারণ করে

৭. স্কিন সান সেনসিটিভ হয়ে পড়ে

অন্যদিকে ইরিট্যান্ট কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস খুবই কমন একটি ডার্মাটাইটিস। যখন ত্বক কোনো টক্সিক পদার্থের সংস্পর্শে আসে, যেমন: ব্যাটারি, ব্লিচ, ক্লোরিনেটেড পানি (যেমন:সুইমিং পুলের পানি), বিভিন্ন ধরনের ক্লিনার, কেরোসিন, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি, তখন এটি হয়ে থাকে। দৈনন্দিন জীবনে এ জিনিসগুলোর বেশিরভাগই আমাদের ব্যবহার করতে হয়, বিষয়টি এমন নয় যে যখনই ব্যবহার করা হবে তখনই ত্বকে এই ডার্মাটাইটিস দেখা দিবে৷ বরং অনেক সময় ত্বক ইরিটেটেড বা সেনসিটিভ হয়ে থাকে, তখনও এমন হতে পারে।

উপসর্গ

১. ত্বক লাল দগদগে হয়ে উঠতে পারে

২. অতিরিক্ত শুষ্কতায় ত্বক থেকে মরা চামড়া উঠে

৩. ত্বকে জ্বালা বা ইরিটেশন হয়

৪. ত্বকে ফোলাভাব সৃষ্টি হওয়া

সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নিতে ভুলবেন না

কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হলে কী করবেন?

সাধারণত বাড়িতে কিছু সহজ পন্থা অনুসরণ করলেই ত্বকের এ সমস্যাটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১. আক্রান্ত স্থান নখ বা কোনো কিছু দিয়ে চুলকানো যাবেনা। কারণ চুলকালে আক্রান্ত স্থানের অবস্থা আরো খারাপ হয় এবং ইনফেকশন হতে পারে, তাই এ কাজটি থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. ত্বকে মাইল্ড সোপ ও কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।

৩. যেসব মেকআপ বা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ত্বকে স্যুট করেনা, সেগুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও মেয়াদ ছাড়া ও নন ব্র‍্যান্ডেড প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবেনা।

৪. আক্রান্ত ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে হবে। সেই সাথে ত্বক যাতে শুষ্ক না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৫. ডাক্তারের পরামর্শে মার্কেটে যে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি ইচিং লোশন পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

আশা করি বুঝতে পারছেন, কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস তেমন ক্ষতিকর কোনো ডার্মাটাইটিস নয়, তবে যেহেতু চুলকানি ও জ্বালা থেকে ত্বকে অস্বস্তির সৃষ্টি হয়, তাই উপরের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গুলো মেনে চললে দ্রুত সেরে উঠা সম্ভব। কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে দুই থেকে চার সপ্তাহ সময় নেয়। যদি এরপরেও এটি ঠিক না হয় এবং ত্বকের সমস্যা বাড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

ছবিঃ সাটারস্টক

The post হঠাৎ করে ত্বকে ইরিটেশন হচ্ছে? কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস নয় তো? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/A1LEtqp
Sumaiya Rahman

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...