Skip to main content

ফুড ক্রেভিং হচ্ছে বারবার! কীভাবে কন্ট্রোল করবেন এই অভ্যাস?

আমরা সারাদিন নানা ধরনের কাজের সাথে যুক্ত থাকি, সেই কাজের জন্য আমাদের দেহের প্রয়োজন শক্তি। সেই শক্তি আমাদের দেহ খাবার থেকে পায়। তাই যখনই দেহের খাবারের প্রয়োজন হয় আমরা ক্ষুধা অনুভব করি এবং খাবার খাই। এটি দেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু ফুড ক্রেভিং ক্ষুধা থেকে ভিন্ন। এই খাবারের ক্রেভিং আসলে কী, এর কারণ এবং কীভাবে কন্ট্রোল করবেন তাই জানবো আজকের লেখায়।

ফুড ক্রেভিং কী?

মাঝে মাঝে কোনো একটা নিদিষ্ট খাবার খাওয়ার জন্য তীব্র যে ইচ্ছে হয় এবং সেই খাবার টা না খাওয়া পর্যন্ত মন কিছুতেই শান্ত হতে চায় না। এটাইকেই বলা হয় ফুড ক্রেভিং। অনেকেরই ঘন ঘন নানা ধরনের খাবারের ক্রেভিং হয়, ফলস্বরূপ দেহের ওজন বাড়তে থাকে। কারণ ক্রেভিং এর জন্য গ্রহণ করা খাবার দেহের জন্য প্রয়োজনীয় না তাই সেই খাবার চর্বি আকারে শরীরে জমতে থাকে। তাই এই ক্রেভিং কন্ট্রোলে নিয়ে আসা অনেক বেশি জরুরি।

প্রেগনেন্সি এর সময় ফুড ক্রেভিং হতে পারে

বারবার এই ক্রেভিং কেন হয়?

১) দেহ পর্যাপ্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য না পেলে ঘনঘন ক্রেভিং হতে পারে৷ অনেকেই ওজন কমানোর জন্য না খেয়ে থাকেন, তখন খাবারের ক্রেভিং বেড়ে যায়।

২) হরমোনাল কারণে যেমন পিরিয়ড ও প্রেগনেন্সির সময় ঘন ঘন খাবারের ক্রেভিং হয়। লেপটিন ও সেরোটোনিন হরমোনের জন্য খাবারের ক্রেভিং হয়ে থাকে।

৩) স্ট্রেসে থাকলে খাবারের ক্রেভিং বেড়ে যায় কারণ তখন কর্টিসল হরমোন রিলিজ হয় যা বার বার ক্ষুধা অনুভব করায়৷ এছাড়া অনেকের খাবার খেলে স্ট্রেস কমে তাই বার বার খাওয়ার ইচ্ছে হয়।

৪) ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হলে বারবার খাবারের ইচ্ছের প্রবণতা বেড়ে যায়। কারণ তখন শরীরের ইনসুলিন সঠিক ভাবে কাজ করে না, ইনসুলিন আমাদের শরীরের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

এই অভ্যাস কমানোর উপায় কী হতে পারে

প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার খান

দেহের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। লাইফস্টাইলের উপর ভিত্তি করে সবার খাবারের চাহিদা ভিন্ন। প্রতিদিন দেহের প্রয়োজন যতটুকু খাবার ততটুকু গ্রহণ করলে ফুড ক্রেভিং অনেক টা কমে যায়। অনেকে ডায়েটের ফলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকে ফলে একপর্যায়ে গিয়ে খাবারের ক্রেভিং হয় যা কন্ট্রোল করা কঠিন হয়ে যায়। তাই ডায়েট করলেও ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং খাদ্যতালিকায় যাতে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ফুড ক্রেভিং বেশি হওয়ার মানে হরমোনাল ইস্যু

হরমোনাল ইস্যু আছে কিনা দেখে নিন

ফুড ক্রেভিং এর জন্য হরমোন দায়ী। তাই অতিরিক্ত ক্রেভিং হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে অবশ্যই জেনে নিতে হবে কোন হরমোনাল ইস্যু আছে কিনা। পিসিওএস( PCOS) কিংবা ডায়াবেটিস থাকলে তা কন্ট্রোলের জন্য হেলথি লাইফস্টাইল অনুসরণ করতে হবে ও হরমোনের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

পিপাসা ও ক্ষুধার মধ্যে পার্থক্য করুন

অনেক সময় আমরা পিপাসা ও ক্ষুধার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারিনা। তাই পিপাসা পেলেও অনেকে মনে করে ক্ষুধা পাচ্ছে৷ তাই কোনো খাবারের ক্রেভিং হলে সাথে সাথে এক গ্লাস পানি খেয়ে ফলতে হবে সেক্ষেত্রে অনেক সময় ক্রেভিং কমে যায়।

মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন

মানসিক চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। মানসিক চাপ কমাতে ইয়োগা কিংবা মেডিটেশন করা যেতে পারে। মন অস্থির ও অশান্ত থাকার ফলে ওভার ইটিং এর প্রবনতা বেড়ে যায়। এছাড়া প্রতিদিন ৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করতে হবে, হাঁটার ফলে শরীর থেকে ডোপামিন রিলিজ হয় এতে মুড ভালো থাকে।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেছে নিন

বার বার ক্রেভিং হলে অস্বাস্থ্যকর খাবারের জায়গায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেছে নিতে হবে। জাঙ্ক ফুড ও প্রসেসড ফুড এমনিতেই বার বার ক্রেভিং এর প্রবনতা বাড়ায় তাই এইসব খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। ক্রেভিং হলে খেজুর, বাদাম, ডিম, দুধ, ওটস এ জাতীয় খাবার খেতে হবে।

অবেলায় খাবারের ক্রেভিং হলে অপেক্ষা করুন

অনেক কোনো কারণ ছাড়াই সারাক্ষণ কিছু না কিছু খেতে ইচ্ছে করে সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে এটি পুরোপুরি মানসিক। যেকোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা সাধারণত ৩০ থেকে ২০ মিনিট স্থায়ী হয়। তাই অবেলা খাবারের ক্রেভিং হলেই খাবার খোঁজা শুরু না করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে ক্রেভিং এর মাত্রা কমে আসে। খাবার থেকে মনোযোগ দূর করার জন্য গান শোনা যেতে পারে।

ক্রেভিং কমাতে রাত জাগার অভ্যাস পরিহার করুন

রাত জাগার অভ্যাস পরিহার করুন

রাত জাগার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেকোনো খাবারের ক্রেভিং লেইট নাইটে হয়ে থাকে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

অতিরিক্ত রেস্ট্রিকশন পরিহার করুন

নিজেকে অতিরিক্ত রেস্ট্রিকশন এর মধ্যে নিয়ে আসা যাবে না, এতে আরো বেশি সমস্যা হতে পারে। তাই নিজের প্রিয় খাবার পরিমান বুঝে মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে। এতে করে যখন তখন তীব্র ক্রেভিং হবে না। হেলদি থাকতে হলে অবশ্যই রুটিন মাফিক খাওয়া দাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

মনে রাখতে হবে, ফুড ক্রেভিং কোনো খারাপ ব্যাপার না, মাঝের মধ্যে যে কোনো ধরনের খাবারের ইচ্ছে হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। তবে সমস্যা তখনই হয় যখন ঘন ঘন ও কন্ট্রোলের বাইরে ক্রেভিং হয়। অতিরিক্ত ফুড ক্রেভিং কখনোই হেলথের জন্য ভালো না। তাই লাইফস্টাইলে কিছু চেঞ্জ এনে এবং ইচ্ছা শক্তির দ্বারা ফুড ক্রেভিং কন্ট্রোলে নিয়ে আসা সম্ভব।

ছবিঃ সাটারস্টক।

The post ফুড ক্রেভিং হচ্ছে বারবার! কীভাবে কন্ট্রোল করবেন এই অভ্যাস? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/kDTfZ8Y
Apsara Hossain

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

Uttara Lake View Specialized Hospital

Uttara Lake View Specialized Hospital Address: Address: House#34, Road# 5A/10B, Sector#11, Uttara, Dhaka, 1230 Phone:  01813-904080 Available Services: 24 hours emergency service Self-contained ICU NICU HDU Cabin General Ward Corona Unit Chamber of Specialist Doctors. Also, all units are open including any complex operation. from Specialist Doctor List https://ift.tt/GFQ56KdRb via IFTTT