Skip to main content

গরমে আরাম ও স্বস্তি পেতে কোন ফেব্রিকগুলো বেছে নিবেন?

বাংলাদেশ নাতিশীতোষ্ণ – ছোটবেলায় পড়া এই কথা বোধহয় ভুলে যাওয়ার সময় এসে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিন দিন গরমের দাপট বাড়ছে, কমছে বৃষ্টির পরিমাণ। দিনকালের হিসেবেও দেখা দিচ্ছে গোলমাল। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমাদের ব্যস্ততা। প্রতিদিন ছুটে চলা, জ্যাম-ভিড় ঠেলে চাকরি-ব্যবসা কিংবা পড়াশোনার জন্য দিনের বড় একটা সময় বাইরে কাটাতে হয় এ দেশের বর্তমান প্রজন্মের নারীদেরও। তাই পোশাকের আরামে গুরুত্ব দিচ্ছেন সবাই। একইসাথে ফাংশনাল বা কাজে আরাম এবং দেখতে ফ্যাশনেবল এমন ফেব্রিকে তৈরি পোশাকই সবার পছন্দের শীর্ষে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ঠিকঠাক ম্যাটারিয়াল বা ফেব্রিক সংক্রান্ত বিষয়গুলো বুঝে উঠতে পারেন না। তাদের কথা মাথায় রেখেই আজকে গরমে আরাম পেতে প্রতিদিনের পোশাকের জন্য উপযোগী কিছু ফেব্রিকের কথা জানাবো আজ।

গরমে আরাম ও স্বস্তি দিবে যে ফেব্রিকগুলো

যে কোনো সিজনেই আরামের জন্য ফেব্রিক চুজ করা খুব ইম্পরট্যান্ট। বিশেষ করে গরমে আরাম দিবে এমন ফেব্রিক চুজ না করতে পারলে বাইরে বের হলেই অস্বস্তি লাগা শুরু হয়। এই সিজনে কোন ফেব্রিক দিয়ে তৈরি পোশাকগুলো পরলে মেয়েরা কমফোর্ট পাবেন চলুন জেনে নেয়া যাক।

কটন বা সুতি

আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সবচেয়ে প্রচলিত এবং আরামদায়ক হচ্ছে কটন বা সুতি কাপড়। তুলা থেকে তৈরি এই তন্তু বিভিন্ন উপায়ে বাহারি বুননে বেশ কয়েক ধরনের তৈরি হয়ে থাকে। সুতি বা কটন ন্যাচারাল ফেব্রিক যার মধ্যে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে, আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে। ফলে আমাদের মতো উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এটি খুব কমফোর্টেবল। ১০০ ভাগ সুতির কাপড় সাধারণত কম চকচকে হয়। আগুনে পোড়ালে গলে যায় না। তাছাড়াও হাতে নিলে নরম ও আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। বাজারে প্রচলিত ভয়েল কাপড় সাধারণত ১০০% কটন হয়ে থাকে।

গরম আরাম পেতে বেছে নিন সুতি পোশাক

তীব্র গরমে ঘরের পোশাক, বাইরে পরার সালোয়ার কামিজ, কুর্তি কিংবা টিউনিকের জন্য ভয়েল কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। তবে হালকা রঙ (যেমন: সাদা, হালকা সবুজ, আকাশি কিংবা গোলাপি) রঙগুলো সি থ্রু বা বাইরে থেকে স্কিন দেখা যায় এমন হয়। তাই যারা এই ব্যাপারে আনকমফোর্টেবল তারা একই রঙের ইনার ব্যবহার করতে পারেন।

তাছাড়াও বাড়ির ছোট্ট সদস্যদের জন্য সুতি জামা সবচেয়ে আরামদায়ক। বাচ্চারা যেহেতু সহজেই গরমে ঘেমে যায়, তাই এই কাপড়ে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে বলে গরমে তাদের অস্বস্তি কম হয়। ধোয়া ও শুকানো সহজ বলে অভিভাবকদের জন্যেও কাজ সহজ হয়ে যায়। তবে সুতির জামা প্রতিবার ধোয়ার পর আয়রন করে পরতে হয় বলে অনেকের কাছেই বেশ ঝক্কির মনে হয়। লন্ড্রি ছাড়াই বাসায় কিন্তু চাইলে সহজেই সুতি বা কটন ফেব্রিকের পোশাক আয়রন করা যায়। খুব বেশি সতর্কতার প্রয়োজন নেই এতে।

লিনেন

ফ্ল্যাক্স নামক প্রাকৃতিক ফাইবার থেকে লিনেন কাপড় তৈরি হয়ে থাকে। পৃথিবীর প্রাচীন সব ফেব্রিকের একটি লিনেন। লিনেন কাপড় টেকসই, সহজে আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং তাপ কুপরিবাহী হিসেবে কাজ করে। সে কারণেই প্রাচীনকাল থেকেই প্রাত্যহিক জীবনের পোশাক যাকে আমরা রেগুলার ওয়্যার বলি, সেসবের তৈরি হতো লিনেন থেকে। এমনকি মেসোপটেমীয়, মিশরীয় সভ্যতার মতো সুপ্রাচীন ইতিহাসেও এই কাপড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়।

লিনেন কাপড় চেনার সহজ উপায় হলো, এতে অল্প পানি পড়লেই তা চোখের পলকেই শুষে নিবে। সহজে আর্দ্রতা শোষণের এই ক্ষমতার কারণেই সারাদিন বাইরে পরার পোশাক হিসেবে লিনেন ফেব্রিক বেছে নিলে ঘামে অস্বস্তি হয় না।

গরমে আরাম দিবে লিনেন কাপড়

রেডিমেড পোশাক ছাড়াও লিনেন কাপড় এক রঙা কিংবা নানা ধরনের প্যাটার্নে বাজারে পাওয়া যায়। সেসব কাপড় কিনে নিজেই বানিয়ে নিতে পারেন প্রতিদিন পরার মতো কামিজ, কুর্তি, শার্ট। ম্যাক্সি ড্রেস বা লং ড্রেস এর ফেব্রিক হিসেবেও এটি বেশ মানিয়ে যায়। সি থ্রু না বলে সমুদ্রে বেড়াতে গেলে বিচ ড্রেস হিসেবে আমাদের মতো রক্ষণশীল দেশে লিনেন হতে পারে ভালো অপশন। এমনকি লিনেনের প্যান্ট ফরমাল ওয়্যার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া এই ফেব্রিক দিয়ে তৈরি শাড়িও বেশ আরামদায়ক। লিনেন সহজেই হ্যান্ড ওয়াশ এবং মেশিন ওয়াশ করা যায়। বারবার ধোয়া হলেও তা নষ্ট হওয়ার ভয় কম।

খাদি

খাদি বা খদ্দর কাপড় আমাদের একান্ত দেশীয়। আগে খুবই সাদামাটাভাবে তৈরি হলেও বর্তমানে সুন্দর সব প্যাস্টেল রঙে পাওয়া যায়। এই ফেব্রিক তুলনামূলক ওজনেও হালকা। খাদি কাপড় ভালো তাপ কুপরিবাহী হওয়ায় তীব্র গরমেও শরীর ঠান্ডা রাখে। তাছাড়াও এই কাপড় টেকে যুগ যুগ। টেকসই এই কাপড় দিয়ে তৈরি শার্ট, কামিজ কিংবা ফতুয়া বেছে নিতে পারেন। খাদি কাপড়ের প্যান্টও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের। এই কাপড় সাধারণত কম চকচকে হয়, সেজন্য যারা উজ্জ্বল রঙ পরতে অস্বস্তি বোধ করেন তাদের জন্য ভালো অপশন হতে পারে খাদি।

খাদি কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক

ক্রেপ জর্জেট

ক্রেপ জর্জেট বা ট্র্যাডিশনাল জর্জেট কাপড় সাধারণত সিনথেটিক এবং ন্যাচারাল ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি হয়ে থাকে। হাতে নিলে হালকা দানাদার অনুভূতি হয় এবং ওজনে অনেক হালকা। ভালো কোয়ালিটির ক্রেপ জর্জেট তুলনামূলক নরম হয়ে থাকে। এই পোশাকের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ফুলে থাকে না, ফলে যারা বাড়তি মেদ নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি বেশ ভালো অপশন। জর্জেট সাধারণত টেকসই হয় এবং নানা রঙ ও প্যাটার্নে পাওয়া যায়। তাছাড়াও সহজেই ধুয়ে নেয়া যায় এবং দ্রুত শুকায়। শুকানোর পর ইস্ত্রির ঝামেলাও নেই।

এছাড়া জর্জেট এর কামিজ, শাড়ি আগে থেকেই প্রচলিত। হালফ্যাশনের সাথে তাল মিলিয়ে এই কাপড়ের লং ড্রেস, টপস কিংবা শার্ট বানাতে পারেন। খুব সহজেই ভার্সিটি কিংবা অফিসওয়্যার হিসেবে মানিয়ে যাবে।

এইতো জেনে নিলেন গরম আরাম দিবে এবং একইসাথে আর্দ্র আবহাওয়া উপযোগী ফেব্রিকের গুণাগুণ। এবার আপনার সুবিধা অনুযায়ী বেছে নেয়া ফেব্রিকে থাকুন একইসাথে কমফোর্টেবল ও স্টাইলিশ।

 

ছবিঃ সাজগোজ

The post গরমে আরাম ও স্বস্তি পেতে কোন ফেব্রিকগুলো বেছে নিবেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/KrR7Nl4
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

Uttara Lake View Specialized Hospital

Uttara Lake View Specialized Hospital Address: Address: House#34, Road# 5A/10B, Sector#11, Uttara, Dhaka, 1230 Phone:  01813-904080 Available Services: 24 hours emergency service Self-contained ICU NICU HDU Cabin General Ward Corona Unit Chamber of Specialist Doctors. Also, all units are open including any complex operation. from Specialist Doctor List https://ift.tt/GFQ56KdRb via IFTTT