Skip to main content

স্কিনকেয়ারে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহার কেন এতটা জনপ্রিয়?

স্কিনকেয়ারে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহার নতুন কিছু না। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর হিসেবে তো বটেই, তার পাশাপাশি অ্যান্টি এজিংয়েও এটির জুড়ি মেলা ভার। যদি স্কিনকেয়ার রুটিনে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড অ্যাড করেন, তাহলে খুব দ্রুতই স্কিনে পজেটিভ চেঞ্জ লক্ষ্য করবেন৷ স্কিনকেয়ারে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহার কেন এতটা জনপ্রিয়, জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এর বেনিফিটস এবং কীভাবে এটি ইউজ করবেন সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড আসলে কী?

চলুন লেখার শুরুতেই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড হলো এক ধরনের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, যা পানিতে দ্রবণীয়। প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে আখ থেকে এই অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। আপনারা মার্কেটে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ক্লেনজার, টোনার, মাস্ক ও ময়েশ্চারাইজার খুঁজে পাবেন যেগুলোর মূল ইনগ্রেডিয়েন্ট এই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড। সাধারণত এই প্রোডাক্টগুলোতে ৮-১০% পর্যন্ত গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ইউজ করা হয়। এর কম কনসেনট্রেশনও দেখা যায়।

স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের মধ্যে আমরা যত ধরনের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ব্যবহার করি, তার মধ্যে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বেশ জনপ্রিয়। অন্যান্য আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের সাথে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মূল পার্থক্য হলো এই অ্যাসিডের মলিকিউলগুলো সবচেয়ে ছোট আকারের হয়। একারণে এটি খুব ভালোভাবে অ্যাবজর্ব হয়ে আমাদের স্কিনকে প্রোপারলি এক্সফোলিয়েট করতে পারে। তবে হ্যাঁ, যদি না বুঝে এটি ইউজ করা শুরু করেন, তাহলে কিন্তু স্কিন ব্যারিয়ার ড্যামেজের চান্স থাকে।

স্কিনকেয়ারে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড

গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের বেনিফিটস

অনেকেই এখনো জানেন না, এই অ্যাসিডের বিউটি বেনিফিটগুলো আসলে কী! বিশেষ করে অ্যাডভান্স স্কিনকেয়ার যারা শুরু করতে চাচ্ছেন, তাদের মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের বেনিফিটগুলো সম্পর্কে –

১) স্কিনের ডেড সেলস দূর করা

গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের অন্যতম বেনিফিট হলো এটি স্কিন সেলের টার্নওভার বাড়াতে সহায়তা করে। এই বিষয়টি আরেকটু বুঝিয়ে বলি। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড অ্যাপ্লাই করার পর এটি দ্রুত স্কিনে অ্যাবজর্ব হয়ে যে বন্ডের মাধ্যমে স্কিনের ডেডসেলগুলো একত্রে থাকে সে বন্ডটি ভেঙে দেয়। তখন বেশ জেন্টলি আমাদের স্কিনের ডেডসেলস রিমুভ হয়ে যায়। এর ফলে স্কিন আগের চেয়ে বেশ স্মুথ মনে হয় এবং একইসাথে স্কিনে ভিজিবল ব্রাইটনেসও চোখে পড়ে।

২) এনলার্জড পোরস ও একনে প্রবলেম কমিয়ে আনা

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড একটি ইফেক্টিভ কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর হওয়ায় এটি ডেড সেলস রিমুভ করার মাধ্যমে আমাদের পোরগুলো ডিপলি ক্লিন করে। এর ফলে একনে, ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডসও কমে যেতে শুরু করে। এনলার্জড পোরসের সল্যুশনেও এই AHA দারুণ কার্যকরী।

এনলার্জড পোরসের সল্যুশনে AHA

৩) কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়ানো

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড আমাদের স্কিনের কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়াতে সহায়তা করে। কোলাজেন এমন একটি প্রোটিন যা আমাদের ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে খুবই প্রয়োজন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে কোলাজেনের ন্যাচারাল প্রোডাকশন (যেটিকে কোলাজেন সিনথেসিস বলা হয়ে থাকে) কমে যেতে শুরু করে। আবার লং টাইম সান এক্সপোজারে থাকলেও কোলাজেন কমে যেতে দেখা যায়। তখন আর্লি এজেই স্কিনে বয়সের ছাপ যেমন ফাইন লাইনস কিংবা রিংকেলস পড়ে যেতে শুরু করে।

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড রয়েছে এমন স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস ইউজ করলে ধীরে ধীরে স্কিনের কোলাজেন প্রোডাকশন বৃদ্ধি পাবে। এ কারণেই স্কিন এক্সপার্টরা ২৫ বছরের পর থেকে স্কিনকেয়ার রুটিনে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ইনক্লুড করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৪) স্কিন হাইড্রেটেড রাখা

ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড স্কিনের জন্য গ্লাইকোলিক অ্যাসিড খুব ভালো কাজ করে। এটি স্কিনে প্রয়োজনীয় হাইড্রেশনের যোগান দেয় এবং সেই সাথে স্কিন সবসময় রাখে সফট ও গ্লোয়ি।

হাইড্রেটেড স্কিন

৫) সানট্যান ও হাইপারপিগমেন্টেশন কমানো

গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের আরেকটি বেনিফিট সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। সেটি হলো এই অ্যাসিড সানট্যান বা রোদে পোড়াভাব কমাতে বেশ সাহায্য করে। অনেক সময় দেখা যায় রোদে থাকতে থাকতে আমাদের স্কিনে কালো কালো ছোপ পড়ে যায় যা কিছুতেই দূর হতে চায় না। আবার অনেকেরই স্কিনের বিভিন্ন এরিয়া যেমন- গলা, হাঁটু কিংবা কনুইতে হাইপারপিগমেন্টেশন থাকে। নিয়মিত গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ইউজ করলে এই কালো দাগগুলো ধীরে ধীরে ফেইড হয়ে যায়।

কীভাবে ইউজ করবেন?

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড রয়েছে এমন কোনো প্রোডাক্ট আপনারা যখন স্কিনকেয়ার রুটিনে ইনক্লুড করবেন, তখন কখনোই সপ্তাহের সাত দিন সেই প্রোডাক্টটি ইউজ করতে যাবেন না। কারণ গ্লাইকোলিক অ্যাসিড প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্যবহার করার ফলে আপনার স্কিন অতিরিক্ত ড্রাই ও ইরিটেটেড হয়ে যেতে পারে। তাই প্রথমদিকে সপ্তাহে তিন দিন প্রোডাক্টটি ইউজ করে দেখুন, যদি স্কিনে কোনোরকম ইরিটেশন বা রেডনেস দেখা না দেয়, তাহলে চার দিন ইউজ করতে পারেন। এছাড়াও কনসার্ন ও প্রোডাক্ট ফর্মুলেশন অনুযায়ী গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের কনসেনট্রেশন ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাই যারা বিগেইনার আছেন তাদের উচিৎ হবে কম কনসেনট্রেশনের গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ইউজ করা এবং প্রোডাক্টটি স্কিনে স্যুট হওয়ার জন্য সময় দেওয়া।

স্কিনকেয়ার রুটিন

যখনই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ কোনো সিরাম ইউজ করবেন, তারপর স্কিনে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করুন। বিশেষ করে যদি আপনার ড্রাই ও সেনসিটিভ স্কিন হয়ে থাকে, তাহলে এই স্টেপটি মোটেও মিস করা যাবে না।

খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড রয়েছে এমন স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট রাতে ইউজ করতে পারলে ভালো হয়। কারণ এটি ইউজ করলে স্কিন সান সেনসিটিভ হয়ে যায়। দিনের বেলা সানস্ক্রিন ইউজ করতে ও ২/৩ ঘন্টা পর পর রিঅ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না। তা না হলে বেনিফিট পাওয়ার বদলে উল্টো স্কিনে রিঅ্যাকশন দেখা দিতে পারে। টিনেজে কিন্তু অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না, বেসিক স্কিনকেয়ারই এনাফ। আর যেকোনো নতুন প্রোডাক্ট স্কিনে অ্যাপ্লাই করার আগে প্যাচ টেস্ট করা কিন্তু মাস্ট।

এটুকুই ছিলো আজকের আলোচনা। আশা করি গ্লাইকোলিক অ্যাসিড নিয়ে আপনাদের মনে যে প্রশ্নগুলো ছিলো সেগুলোর উত্তর দিতে পেরেছি। সবার জন্য পরামর্শ থাকবে, স্কিন হেলদি রাখতে সবসময় অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে ইনভেস্ট করুন।

অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার কিংবা হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট পারচেজ করার জন্য সাজগোজ হতে পারে ভরসার জায়গা। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।

 

ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক

The post স্কিনকেয়ারে গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহার কেন এতটা জনপ্রিয়? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/cZ7ydG5
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...