Skip to main content

মখর টউমর থক নজক সরকষত রখবন কভব?

টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকেই সাধারণত টিউমার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। আর সেটা যদি হয় মুখে বা মুখগহ্বরের যেকোনো জায়গায়, তখন তাকে মুখের টিউমার বলা হয়। মুখের কোন কোন জায়গায় টিউমার হতে পারে, প্রকারভেদ, কেন হয়, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে আজ বিস্তারিত জানাবো।

কোন কোন জায়গায় মুখের টিউমার হতে পারে?

৯০ শতাংশ মুখের টিউমারই স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা। ওরাল স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা হলো স্কোয়ামাস সেল নামক এপিথেলিয়াল কোষের ক্যান্সার। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঠোঁট ও মুখগহ্বরে স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সার হয়ে থাকে। ক্যান্সার বিস্তৃতি লাভ করলে ক্যান্সার সেল বা কোষ আরও গভীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোষের ডিএনএ’র মধ্যে যখন ঠোঁটের অথবা মুখের কোষের পরিবর্তন বা মিউটেশন হয়ে থাকে, তখন মুখের ক্যান্সার হয়। স্বাস্থ্যবান কোষগুলো মারা গেলে এ মিউটেশন ক্যান্সার বিভাজিত হতে সাহায্য করে। ক্যান্সারের সেলগুলো জমা হয়ে একটি টিউমার গঠন করতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সার সেল মুখের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যার কারণে ওরাল টিউমার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। মৌখিক গহ্বরে টিউমারের জন্য সবচেয়ে সাধারণ জায়গাগুলো হলো-

  • জিহ্বা
  • টনসিল
  • অরোফ্যারিনক্স (গলার মধ্যভাগ ও মুখের পিছনের অংশ)
  • মাড়ি
  • মুখের লালাগ্রন্থি
  • মুখের রক্তনালী
  • গালের চর্বি

সহজভাবে বললে, মুখের বিভিন্ন জায়গায় টিউমার হতে পারে। তাই টিউমারের কোনো লক্ষণ দেখলে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে।

মুখের টিউমার

যে লক্ষণগুলো টিউমারকে নির্দেশ করে

মুখের টিউমার হলে সাধারণত কিছু লক্ষণ দেখা দিবে। যেমন-

  • প্রথমেই একটা পিন্ড বা লাম্পের মাধ্যমে টিউমার প্রকাশিত হয়
  • মাড়ির থেকে দাঁত আলগা হয়ে যেতে পারে
  • ঠোঁট ফোলা থাকবে বা ঘা থাকবে, যা সারবে না
  • খাবার গিলতে অনেক কষ্ট হবে
  • কন্ঠস্বর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে
  • মুখে অসাড়তা কাজ করবে
  • মুখ, জিহ্বা বা মাড়িতে সাদা বা লাল দাগ হয়ে যেতে পারে
  • ওজন হ্রাস পেতে পারে

কত ধরনের হয়?

ওরাল টিউমার সাধারণত দুই ধরনের হতে পারে। সেগুলো হচ্ছে-

১) বিনাইন টিউমার – বিনাইন টিউমার বলতে সাধারণত একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বোঝায়, যা পার্শ্ববর্তী টিস্যুকে আক্রমণ করে না। এটি মুখের জন্য কম ক্ষতিকর। এই টিউমারের ইতিহাস বেশ পুরনো থাকে। রোগীর চোয়াল হয়তো এক্ষেত্রে ৫-১০ বছর পর্যন্ত ফুলে থাকতে পারে। ধীরে ধীরে এই ফোলাভাব বাড়তে থাকে। যখন এটি মুখের গুরুত্বপূর্ণ কোনো গঠনের উপর চাপ দেয়, তখন ব্যথা শুরু হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে টিউমার এত বড় হয়ে যায় যে, চোখ ছোট হয়ে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়। তখন এটি ঝুঁকির হয়ে দাঁড়ায়।

২) ম্যালিগন্যান্ট টিউমার – এই টিউমার রোগীর জন্য ভয়ের। কারণ এটির ইতিহাস বেশিদিনের থাকে না। কখনো কখনো রোগী বোঝার আগেই অবস্থা খারাপের দিকে চলে যেতে পারে। এই টিউমারগুলো মুখে বা মুখের আশেপাশের গঠনে হতে পারে। এটা মুখের জন্য ক্ষতিকর। এটিকে ম্যালিগনেন্সিও বলে। এই টিউমার হলে বুঝতে হবে রোগী মুখের ক্যান্সারে ভুগছেন।

মুখের টিউমার এর ধরন

টিউমার হওয়ার কারণ

বিভিন্ন কারণে সাধারণত ওরাল টিউমার হয়ে থাকে। এই টিউমারের ক্ষেত্রে কিছু ভাইরাস মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যদিও বেশিরভাগ টিউমারের কারণ মূলত অজানাই থাকে। যে কারণগুলো চিহ্নিত করা গেছে সেগুলোর মধ্যে আছে-

১) হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)

২) এপস্টাইন-বার ভাইরাস (EBV)

৩) পরিবারে আগেও কারো মুখগহ্বরের টিউমার থাকলে সেক্ষেত্রে সেই পরিবারের সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্যান্যদের চাইতে বেশি থাকে।

৪) মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো মেনে না চলা এবং মাড়ির বিভিন্ন রোগ।

৫) অধিক পরিমাণে পান, সুপারি বা সিগারেট খেলেও মুখের টিউমারের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।

চিকিৎসা

লক্ষ্মণ প্রকাশের সাথে সাথেই মুখের টিউমারের চিকিৎসা নেয়া জরুরি। এক্ষেত্রে আক্রান্ত যেকোনো ব্যক্তিই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান। যেভাবে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়-

১) এই টিউমার যদি মুখের বাইরে বা মুখের পিছনে বা গলার অংশে (অরোফ্যারিনক্স) ছড়িয়ে না পড়ে, তবে শুধুমাত্র অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব হতে পারে।

২) যদি মুখগহ্বরের টিউমারটি বড় হয় বা ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।

মুখের টিউমার এর চিকিৎসা

প্রতিরোধ করার উপায় কী? 

মুখগহব্বরের যত্নের মাধ্যমেই এই টিউমারকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেভাবে এই রোগের প্রতিরোধ করা যায়-

১) তামাক পরিহার করতে হবে। কারণ একজন মানুষ যত বেশি সময় ধরে এবং যতবার তামাক ব্যবহার করবেন, মুখগহব্বরের টিউমারের ঝুঁকি ততই বেশি হবে।

২) পরিমিত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় অ্যালকোহল পরিহার করলে।

৩) নিয়মিত ৬ মাস পর পর ডেন্টিস্ট এর কাছে গিয়ে মুখের অবস্থা পরীক্ষা করা উচিত।

৪) Human papillomavirus (HPV) এর জন্য টিকা নিতে হবে।

৫) ঠোঁটকে সূর্যের ক্ষতিকর আলোকরশ্মি থেকে রক্ষা করতে হবে।

মুখের টিউমার হলে প্রথমদিকে অনেকেই হয়তো বুঝতে পারেন না। ততদিনে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। তাই মুখে কোনো ধরনের অস্বস্তি হলে বা নিজের কাছে দ্বিধা লাগলে অবশ্যই ডেন্টিস্টের কাছে যান। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

ছবিঃ সাটারস্টক, Technology Networks

The post মুখের টিউমার থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/cBXinKP
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...