Skip to main content

ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায় কোন ৯টি ভুলের কারণে?

আজকাল আমরা সবাই নিজেকে নিয়ে অনেক বেশি সচেতন, সকলেই চায় সুন্দর স্মুথ স্কিন। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথেই অনেকেরই মুখের লোমকূপগুলো বা পোরস দৃশ্যমান হয় বা বড় হয়ে যায়। যার ফলে স্কিনের টেক্সচার তার সৌন্দর্য হারায়। তবে শুধু যে বয়স বাড়লেই ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায় এমন নয়, বরং কিছু কিছু ভুলের জন্যও এমনটি হতে পারে। আর এই দৃশ্যমান লোমকূপগুলোই তখন চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। আজ আমরা এমনই ৯টি ভুল সম্পর্কে জানবো।

পোরস কী?

পোরস হলো আমাদের শরীরের উপরিভাগে থাকা লোমকূপ, যার মাধ্যমে শরীরের ভিতরের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে ক্ষরিত সেবাম বা তেল, ঘাম ইত্যাদি বের হতে পারে। পোরস বা লোমকূপ আমাদের শরীরে সবসময়ই থাকে এবং তার মাধ্যমে আমাদের শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম অব্যাহত থাকে। তার মানে বোঝা যাচ্ছে যে, পোরস হুট করেই শরীরে চলে আসে না বরং সবসময়ই থাকে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং কিছু ভুলের কারণে ফেইসের পোরস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায় কেন? 

১) অতিরিক্ত ক্লেনজিং 

অনেকেই মনে করেন মুখ বেশি ধুলে ত্বক ভালো থাকে। এছাড়াও যাদের ত্বক অয়েলি তারা মুখ একটু তেলতেলে হলেই বার বার ক্লেনজার দিয়ে ওয়াশ করতে থাকে। ওভার ওয়াশিং ত্বকের জন্য ক্ষতিকর এবং এর ফলে ত্বক সাময়িকভাবে একটু ফ্রেশ লাগলেও মূলত মুখের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মুখের পোরস থেকে সেবাম বা তেল আরো বেশি পরিমাণে ক্ষরিত হয়। আর সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে যত বেশি সেবাম/তেল ক্ষরিত হয়, ততবেশি পোরস এনলার্জড হতে থাকে এবং দৃশ্যমান হয়। তাই দিন রাত মিলিয়ে এক থেকে দুইবারের বেশি মুখ ক্লেনজার দিয়ে ধোয়া ঠিক নয় এবং ধোয়ার পর পর উচিত মুখে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা।

ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায় অতিরিক্ত ক্লেনজিং করলে

২) এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার না করা

এখানে এক্সফোলিয়েটর বলতে মূলত কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহারকে বোঝানো হচ্ছে। অনেকেই এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে অনাগ্রহী হয়, এর ফলে আমাদের মুখের ত্বকের মরা চামড়া, তেল, সেবাম, ঘাম এগুলো একত্রিত হয়ে মুখের উপর জমা হয় এবং জমতে থাকে লোমকূপগুলোতে। যার ফলে লোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায় এবং সেখানে ক্লোজড কমেডোন, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস এর সৃষ্টি হয়। যা পরে একনের সমস্যা বাড়ায়। তাছাড়াও মুখের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেগুলো সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড এর নিঃসরণের জন্য পোরসগুলো বড় হয়ে উঠে। তাই ত্বকের যত্নে সঠিক এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা উচিত, এটি বেসিক স্কিন কেয়ারের একটি অংশ।

৩) ব্লটিং পেপার ব্যবহার করা

অনেকেই মুখের ঘাম ও তেল শুষে ফেলতে ব্লটিং পেপার ব্যবহার করে, বিশেষত তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা। কিন্তু এই ব্লটিং পেপার ব্যবহার মুখের পোরস বা লোমকূপকে এনলার্জড করে ফেলতে পারে। কারণ ব্লটিং পেপারগুলো এমনিতেও মুখের জন্য বেশ রাফ বা হার্শ হয়। এছাড়াও যতবার ব্লটিং পেপার দিয়ে এই মুখের তেল বা ঘাম একদম লোমকূপের ভেতর থেকে শুষে নেওয়া হয় ততবেশি সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড সেবাম ক্ষরণ করে। যার ফলে মুখে আরো বেশি পরিমাণে তেল উৎপন্ন হতে থাকে এবং পোরস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। তাই আপনি যদি ব্লটিং পেপার ব্যবহার করে থাকেন তবে তা আজ থেকেই বন্ধ করে দিন।

ব্লটিং পেপার ব্যবহারে ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায়

৪) হার্শ ক্লেনজার বা স্ক্রাব ব্যবহার করা 

মুখের ত্বকের জন্য বেশি ক্ষারযুক্ত বা হার্শ ক্লেনজার অথবা স্ক্রাবের ব্যবহার মুখের ত্বকের উপরিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং স্কিনকে ওভারড্রাই করে ফেলে। এছাড়াও এসব ক্লেনজার বা সোপের পিএইচ মুখের ত্বকের সাথে মানানসই থাকে না। যার ফলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এই ক্ষত সারাতে আমাদের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড বেশি তেল উৎপন্ন করে, এতে পোরস বড় হয় এবং দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। তাই অবশ্যই মুখের জন্য মানানসই ক্লেনজার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও রাফ স্ক্রাব বা বড় দানার স্ক্রাব ব্যবহার করলে তা মুখের ত্বকের উপর স্ক্র্যাচ সৃষ্টি করে এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত করে। সেই ত্বকে ঘর্ষণের ফলে পোরস বড় হয়ে ওঠে।

৫) অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানির ব্যবহার করা 

অনেকেই মুখ ধুতে গরম পানি বা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি ব্যবহার করেন। অনেকে চিন্তা করে যে বড় হয়ে যাওয়া লোমকূপগুলো হয়ত ঠান্ডা পানি পেয়ে ছোট হয়ে আসবে, কিন্তু এটা অত্যন্ত ভুল একটি ধারণা। এর ফলে ত্বকের লোমকূপগুলো আরও দৃশ্যমান হয়ে যায়। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানির ব্যবহার ত্বকের ক্ষতি করে এবং লোমকূপকে বড় করে ফেলে।

৬) পপ আপ করা

আমাদের অনেকেরই ফেইসে একনে, ক্লোজড কমেডোন, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস থাকে। অভ্যাসবশত অনেকেই এগুলোকে খোঁটাখুঁটি করেন এবং চাপ দেন। কিন্তু এর ফলে ত্বকের উপরিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লোমকূপগুলো বড় হয়ে যাওয়ার এটাও অন্যতম একটি কারণ।

ফেইসে পপ আপ করা

৭) তেল, চর্বিযুক্ত এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া

তেল চর্বিযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খেলে তা ত্বকের তেল গ্রন্থি থেকে তেল ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যা পোরসকে এনলার্জড করে। এছাড়াও এ সকল খাবার কোলাজেন প্রোডাকশনকে ব্যাহত করে।

৮) ত্বক শুষ্ক থাকলে 

ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকলে মুখের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে বেশি বেশি সেবাম, তেল উৎপন্ন হয় ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করার জন্য। যার ফলে পোরস বা লোমকূপ ভিজিবল হয়ে ওঠে। তাই ত্বক যাতে শুষ্ক না হয়ে যায় সেজন্য স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার, বিভিন্ন হাইড্রেটিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে।

৯) প্রোপার সান প্রোটেকশন ব্যবহার না করা

অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহারে অনাগ্রহী, এর ফলে তাদের স্কিন সান ড্যামেজ হতে থাকে। যার কারণে স্কিনে দেখা দেয় মেসতা, মেলাজমা। সেই সাথে ত্বকের ইলাস্টিসিটি ও কোলাজেন প্রোডাকশন কমে যায়। যার ফলে ত্বকে এজিং সাইনস দেখা যায়, যার প্রধান লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় এনলার্জড পোরস। তাই ত্বক সুন্দর রাখতে এবং পোরস এনলার্জড হওয়া থেকে কমাতে প্রোপার সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে৷

ফেইসের প্রোপার সান প্রোটেকশন

এই ভুলগুলো এড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কোলাজেনযুক্ত খাবারের দিকে ফোকাস করতে হবে, কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়ায় এমন প্রোডাক্ট ব্যবহার করা অথবা সাপ্লিমেন্ট বয়স বাড়ার সাথে রুটিনে যোগ করলে এনলার্জড পোরস হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে। মূলত উপরে উল্লেখিত ভুলগুলো করার জন্যই বয়সের আগেই মুখে অনেক বেশি এনলার্জড পোরস ভিজিবল হয়ে ওঠে। তাই এই ভুলগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং এড়িয়ে চলতে হবে।

 

অথেনটিক স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক

The post ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায় কোন ৯টি ভুলের কারণে? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/ZMT2Pzt
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...