কলেজে ফেয়ারওয়েল পার্টিতে পরার জন্য মায়ের একটি শাড়ি অনেক আগে থেকেই সিলেক্ট করে রেখেছে সাবিহা। সাথে ম্যাচিং ঝুমকা, গলার মালা আর চুড়িও কেনা হয়ে গেছে। কিন্তু মেকআপ লুকটা ঠিক কেমন হবে সেটা ভাবতে ভাবতে রীতিমতো দ্বিধায় পড়ে গেলো ১৭ বছরের সাবিহা! শুধু সাবিহাই না, এমন সিচুয়েশন কিন্তু সব টিনেজ মেয়েরাই কম বেশি ফেইস করে। টিনেজ মানেই তো মেকআপে নানা ধরনের এক্সপেরিমেন্ট! টিনেজার্স গ্ল্যাম মেকআপ লুক কীভাবে খুব সহজেই ক্রিয়েট করা যায়, সেটা জানাবো আজকের ফিচারে।
টিনেজে কী কী মেকআপ প্রোডাক্ট ইউজ করতে হবে, কোন প্রোডাক্ট স্কিনে স্যুট করবে অথবা কেমন ধরনের লুক এই বয়সের সাথে মানানসই হবে- এই বিষয়গুলো নিয়ে কনফিউজড হয়ে যায় অনেকেই। কি ঠিক বললাম তো? চিন্তা নেই! কোন কোন স্টেপস ফলো করে অল্প সময়েই রেডি হওয়া যায়, সেটি জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
টিনেজার্স গ্ল্যাম মেকআপ লুক
এই বয়সের প্রতিটি মেয়েকেই দেখতে অন্যরকম সুন্দর লাগে। তাদের ফেইসে এমনিতেই ন্যাচারাল গ্লো থাকে এবং সেরকম কোনো স্কিন কনসার্নও তাদের থাকে না। যদি মেকআপের ব্যাপারে বলি, সত্যি বলতে টিনেজে খুব বেশি মেকআপ করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে হ্যাঁ, কলেজের বিভিন্ন প্রোগ্রাম, দাওয়াত কিংবা পার্টিতে একটু মেকআপ করার ইচ্ছা হওয়াটা কিন্তু স্বাভাবিক। ন্যাচারাল বা সফট গ্ল্যাম, যেকোনো লুকই ট্রাই করতে পারেন। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক টিনেজার্স গ্ল্যাম মেকআপ লুক কীভাবে ক্রিয়েট করা যায়।
১. মেকআপের আগে স্কিন প্রিপেয়ার করা
মেকআপ শুরু করার আগে স্কিন প্রিপেয়ার করতে হবে। তবে টিনেজে অনেকগুলো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। একটি মাইল্ড ফেইস ওয়াশ ও ভালো কোয়ালিটির একটি ময়েশ্চারাইজার ইউজ করাই এনাফ।
২. হাইড্রেটিং প্রাইমার ইউজ করা
প্রাইমার তো অনেক রকমেরই হয়, যেমন- হাইড্রেটিং, ইল্যুমিনেটিং, পোর মিনিমাইজিং ইত্যাদি। সাধারণত টিনেজারদের ফেইসে ওপেন পোরস অনেক কম থাকে। তাই হাইড্রেটিং প্রাইমারই তাদের জন্য হতে পারে পারফেক্ট চয়েস। এতে মেকআপ লুক ন্যাচারাল তো হবেই, পাশাপাশি স্কিন স্মুথ দেখাবে।
৩. লাইট কভারেজের বেইজ মেকআপ প্রোডাক্ট বেছে নেওয়া
টিনেজে বেইজ মেকআপ প্রোডাক্ট হিসেবে ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশনের বদলে বিবি, সিসি ক্রিম অথবা টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার ইউজ করা যায়। এই ক্রিমগুলো লাইট কভারেজ দেয়, পাশাপাশি স্কিন হাইড্রেটেড রাখে। যদি ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করতে চান, সেক্ষেত্রে একদম লাইট কভারেজের ফাউন্ডেশন সিলেক্ট করাই বেটার।
এবার আসি কনসিলারে। এই বয়সে লাইট শেইডের কনসিলার ইউজ না করে স্কিনটোনের সাথে একদম ম্যাচ করে এমন শেইডের কনসিলার বেছে নিন। তাহলে বেইজ মেকআপ দেখতে ন্যাচারাল লাগবে। এখন ন্যাচারাল মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার একটি টিপস দেই। সেটা হলো বেইজ মেকআপ প্রোডাক্টগুলো ফুল ফেইসে অ্যাপ্লাই না করে ফেইসের যে এরিয়াগুলোতে একটু কভারেজ দরকার, শুধু সে এরিয়ায় অ্যাপ্লাই করে ড্যাবিং মোশনে হাতের আঙুল বা ভেজা বিউটি স্পঞ্জ দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। “নো মেকআপ” মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে চাইলে এই ট্রিকস ফলো করতে পারেন।
৪. কমপ্যাক্ট বা লুজ পাউডার ইউজ করা
বিবি ক্রিম, ফাউন্ডেশন কিংবা কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের পর তা সেট করতে পাউডার অ্যাপ্লাই করা একদম মাস্ট। এক্ষেত্রে টিনেজাররা মেকআপ সেট করতে ইউজ করতে পারেন কমপ্যাক্ট অথবা লুজ পাউডার। কমপ্যাক্ট/প্রেসড পাউডার স্কিনটোনের সাথে ম্যাচ করে নিতে হবে অবশ্যই। লুজ পাউডার সাধারণত লাইট ওয়েট হয়ে থাকে এবং সব ধরনের স্কিনটোনে মানিয়ে যায়। এটি স্কিনে ম্যাট ফিনিশ দেয়। তাই মেকআপ লং লাস্টিং করতে যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন।
৫. ন্যাচারাল শেইডের আইশ্যাডো সিলেক্ট করা
আইব্রো পমেড দিয়ে আইব্রো আর্ট করার দরকার নেই, কারণ সেটি তাদের বয়সের সাথে মানানসই হবে না। বরং তারা আইব্রো জেল ইউজ করতে পারে। এতে আইব্রো ন্যাচারালি ডিফাইনড হবে, আবার দেখতে ড্রামাটিকও লাগবে না। আর আইশ্যাডোর কালার সিলেকশনে ন্যুড, ন্যাচারাল শেইডগুলোকে প্রাধান্য দিন। তবে গ্ল্যাম মেকআপ লুকে গোল্ডেন, শিমারি বা গ্লিটারি এই ধরনের আইশ্যাডো ভালো মানিয়ে যায়।
৬. স্ম্যাজপ্রুফ আইলাইনার ও ভলিউমিনাস মাশকারা বেছে নেওয়া
আইলাইনার সিলেকশনের ক্ষেত্রে সেটি ম্যাট, ওয়াটার প্রুফ, স্ম্যাজ প্রুফ কিনা সেগুলো দেখে নিন। চোখের শেইপ অনুযায়ী আইলাইনার অ্যাপ্লাই করতে হবে। ভলিউমিনাস মাশকারা হতে পারে টিনেজার্স মেকআপ লুকের গেইম চেঞ্জার। চাইলে মাশকারা অ্যাপ্লাই করার আগে আইল্যাশ কার্লার ইউজ করা যেতে পারে।
৭. ব্লাশ ও লিপস্টিক দিয়ে মেকআপ কমপ্লিট করা
ড্রেসের সাথে ম্যাচ করে লিপস্টিক ও লিপগ্লস অ্যাপ্লাই করতে পারেন। টিনেজার্স গ্ল্যাম মেকআপ লুকের সাথে ন্যুড, ব্রাউন, মভ, পিংক, রেড এই শেইডের লিপ কালার ভালো মানিয়ে যায়। আর ব্লাশের ক্ষেত্রে পিচ, বাবলগাম পিংক এই ধরনের কালারগুলো বেশ ভালো লাগে। ওয়েডিং গেস্ট লুক বা গ্ল্যামারাস পার্টি লুকে হাইলাইটার ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে অল্প পরিমাণে।
যদি মেকআপ লুক ছিমছাম ও স্নিগ্ধ রাখতে চান, তাহলে ব্লাশ ও লিপস্টিকের পরিবর্তে ইউজ করতে পারেন চিক ও লিপ টিন্ট। এই টিন্টগুলোর মেইন ফিচার হলো এগুলোর পিগমেন্ট হালকা হওয়ায় অ্যাপ্লাই করার পর গালে ও ঠোঁটে একদম ন্যাচারাল কালার আসে। আপনার অকেশন, আউটফিট, প্রিফারেন্স অনুযায়ী মেকআপ লুক ক্রিয়েট করুন।
তো এই ছিলো টিনেজার্স গ্ল্যাম মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার স্টেপস! অল্প কয়েকটি প্রোডাক্ট ইউজ করে কীভাবে পার্টি মেকআপ লুক ক্রিয়েট করা যেতে পারে, সেটা বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়। এমনভাবে মেকআপ করা যাবে না যাতে ন্যাচারাল বিউটি ঢাকা পড়ে যায়! সেইসাথে সবসময় অথেনটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে, যাতে শখের বশে মেকআপ করতে যেয়ে স্কিনের কোনো ক্ষতি না হয়। আর দিনশেষে প্রোপারলি মেকআপ রিমুভ করতে ভুলবেন না!
মেকআপ, স্কিন কেয়ার কিংবা হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট পারচেজ করার জন্য সাজগোজ আমার ভরসার জায়গা। চাইলে আপনারা ভিজিট করতে পারেন সাজগোজের ওয়েবসাইট (শপ.সাজগোজ.কম), অ্যাপ কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভারে থাকা সাজগোজের ফিজিক্যাল স্টোরে। আজ এই পর্যন্তই।
ছবি- সাজগোজ
The post টিনেজার্স গ্ল্যাম মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার ৭টি সহজ ধাপ appeared first on Shajgoj.
from Shajgoj https://ift.tt/oe2uanl
Munia
Comments
Post a Comment