Skip to main content

ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়াতে চান? ফলো করুন মাত্র ৫টি স্টেপস!

করোনাভাইরাস হানা দেওয়ার পর সবচেয়ে বেশি যে সিস্টেমকে মানুষ উন্নত করার চেষ্টা করেছে সেটা হলো ইমিউন সিস্টেম। আমাদের শরীরে বেশ কিছু সিস্টেম বা তন্ত্র আছে। কয়েকটি অঙ্গ মিলে একটি তন্ত্র হয়। সেসব তন্ত্রের মধ্যে পরিপাক, সংবহন, প্রজনন, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি আরো বেশ কিছু তন্ত্র রয়েছে। প্রতিরক্ষা তন্ত্র বা ইমিউন সিস্টেম আমাদের শরীরে যত রোগজীবাণু প্রবেশ করে এদের সবাইকে হিরোর মতো ফাইট করে হারিয়ে দেয়, যার জন্য আমরা হুট করেই অসুস্থ হয়ে যাই না। কিন্তু অনেক সময় আমাদের নিজেদের ভুলে বা শারীরিক অন্যান্য সমস্যার জন্য এই ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়। যে নিজেই দুর্বল সে আর কীভাবে লড়াই করে আমাদের শরীরের অন্য সব তন্ত্রকে সুরক্ষা দিবে? আজকে জানাবো ডায়েট ও লাইফস্টাইলের মাধ্যমে ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়াতে কী কী করা যায় তার উপায় সম্পর্কে।

কীভাবে কাজ করে আমাদের ইমিউন সিস্টেম?

ইমিউনিটি বাড়াতে কী কী করা দরকার সেগুলো তো জানা হবেই, তার আগে চলুন একটু ছোট করে জেনে আসি কীভাবে আমাদের ইমিউন সিস্টেম কাজ করে। চারটি অঙ্গ নিয়ে আমাদের ইমিউন সিস্টেম গঠিত। এগুলো হলো-

  • থাইমাস ও বোন ম্যারো
  • লিম্ফ নোডস ও ভেসেলস
  • স্প্লিন বা প্লীহা
  • স্কিন বা চামড়া

মজার কথা হলো, আমাদের সারাদেহের সব অঙ্গের বাহ্যিক আবরণী বা কাভারিং এর কাজ করে একটি মাত্র অঙ্গ, চামড়া। অর্থাৎ সারাদেহের চামড়া একসাথে একটি অঙ্গের মতো কাজ করে। বাইরের যে কোনো শত্রুর বিরুদ্ধে সবার আগে তাই সুরক্ষা দেয় এই স্কিন বা চামড়া।

ইমিউন সিস্টেম

আমাদের ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলোর প্রায় ৭০-৮০ ভাগ কোষেরই অবস্থান হলো আমাদের অন্ত্র বা গাটসে। তাই যদি ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদান্ত্র তাদের কাজ ঠিকমতো করে, বলা যেতে পারে এতেই দেহের সুরক্ষার সিংহভাগ কাজ হয়ে যায়। কীভাবে এই তন্ত্র আমাদের সুরক্ষা দেয়? আমাদের ইমিউন সিস্টেমে ডেনড্রাইট, টি সেল ও ম্যাক্রোফেজ নামে তিন ধরনের কোষ আছে। দেহে যখনই ক্ষতিকর কোনো জীবাণু প্রবেশ করে তখনই ডেনড্রাইট সক্রিয় হয়ে টি সেলকে বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করে দেয়। টি সেল তখন সৈনিকের মতো ঢাল তলোয়ার দিয়ে যুদ্ধ করে সেই বিদেশি শত্রুর বিরুদ্ধে- যাকে আমরা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, মাইক্রোবস ইত্যাদি নামে ডাকি। টি সেল একাই বেশিরভাগ সময় যুদ্ধ করে এদেরকে হারিয়ে দেয়। তবে যদি সেটা না হয়, তখন ব্যাক আপ হিসেবে ম্যাক্রোফেইজ কোষগুলো সেই শত্রুকে ভ্যানিশ করে ফেলে। এভাবেই কোষগুলোর ইউনিটির মাধ্যমে আমাদের দেহের ইমিউনিটি রক্ষা পায়।

ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়গুলো কী কী?

শুধু যে নির্দিষ্ট কিছু খাবার ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে এমনটা কিন্তু নয়, বরং স্বাস্থ্যকর ডায়েটের সাথে যখন স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা যোগ হয় তখন কোনো বাইরের শত্রুর ক্ষমতা নেই আমাদের শরীরে ঢুকে রোগ বাসা বাঁধাবে। তাই বেশ কিছু অভ্যাস আমাদের জীবনে গড়ে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-

১) হালকা ব্যায়াম করা

আপনাকে জিমে গিয়ে মাসে মাসে পার্সোনাল ট্রেইনার রেখে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করতে হবে এমন নয়, বরং বাসায় বসেই প্রতিদিন হালকা কিছু এক্সারসাইজ বা ইয়োগা করে নিতে পারেন। গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, যারা ব্যায়াম করে তাদের দেহে অন্যান্যদের তুলনায় টি সেল বেশি তৈরি হয়। তাই ফিট থাকা মানে সুস্থ থাকাও বটে।

ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়াতে ব্যায়াম

২) পর্যাপ্ত ঘুমানো

জ্বি হ্যাঁ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও সুস্থ থাকা যায়! তবে সেই ঘুমটা অবশ্যই হতে হবে পরিমিত ও নিয়মিত। আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের ব্রেইন অ্যাড্রিনালিন ও প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন হরমোন ক্ষরণ কমিয়ে দেয়, এর ফলে টি সেলগুলো নিজের কাজ সুন্দরভাবে করতে পারে। টি সেলের কাজ ঠিকমতো হওয়া মানেই ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধে জয়ী হওয়া। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমের অভ্যাস থাকা জরুরি। আর কোনোভাবেই লেট নাইট জাগা শরীরের জন্য ভালো না, এতে হরমোনের ইমব্যালেন্স হয়।

৩) শারীরিক পরিশ্রম করা 

আমাদের জীবন এখন অফিসের কাজ আর বাসায় টিভির সামনে বসে থাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমরাও অলস হয়েছি আর ইমিউন সিস্টেমও অলস হয়ে যাচ্ছে। এই বিপদ থেকে বাঁচতে প্রতিদিন কিছু হলেও শারীরিক পরিশ্রম করুন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা, হেঁটে গিয়ে বাজার করা, কিছুক্ষণ বাগানে সময় দেয়া এরকম সহজ কিছু কাজের মাধ্যমেই আপনার দেহের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে এবং শরীরের দূরতম কোষ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে অক্সিজেন। তখন আমাদের কোষগুলো সজীব থাকবে এবং ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়াতে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।

৪) ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার তালিকায় রাখা

ভিটামিন ডি আমাদের দেহের ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলোকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। শরীরে ভিটামিন ডি কম থাকা মানে টাইপ ১ ও ২ ডায়াবেটিস, আলঝেইমার, হার্টের ও কিডনির অসুখের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া। তাই যদি এগুলোকে দূরে রাখতে চান প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিটের জন্য সূর্যের আলোতে যান এবং বেশি করে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার

৫) স্ট্রেসকে দূরে রাখা

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এটা শুনতে অসম্ভব লাগলেও এই ছোট কাজটিই আপনার শরীরের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে দিতে পারে। আপনি খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করলেন, ঠিকঠাক সময়ে ঘুমালেন কিন্তু আপনার দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা একেবারেই কমলো না। এতে করে কী হবে? আপনার ব্রেইন কর্টিসল হরমোন বের করবে, যেটা কিনা টি সেলের কাজ কমিয়ে দেয়। ফলে কী হবে? ইমিউনিটি আস্তে আস্তে কমে যাবে। তাই রোগ দূরে রাখতে চাইলে, দূরে রাখুন স্ট্রেসটাও।

সুস্থ থাকতে কে না চায়? কিন্তু তারপরও নিজেদের ছোট ছোট অভ্যাসের ভুলেই আমরা নিজেদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলি। ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়াতে এই পদ্ধতিগুলো ফলো করলে সুস্থ থাকা সম্ভব। নিজেকে যদি ভালোবেসে থাকেন তাহলে এখন থেকেই সতর্ক হোন ইমিউনিটি নিয়ে! সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

 

ছবিঃ সাটারস্টক

The post ন্যাচারালি ইমিউনিটি বাড়াতে চান? ফলো করুন মাত্র ৫টি স্টেপস! appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/xKJkXpa
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

Uttara Lake View Specialized Hospital

Uttara Lake View Specialized Hospital Address: Address: House#34, Road# 5A/10B, Sector#11, Uttara, Dhaka, 1230 Phone:  01813-904080 Available Services: 24 hours emergency service Self-contained ICU NICU HDU Cabin General Ward Corona Unit Chamber of Specialist Doctors. Also, all units are open including any complex operation. from Specialist Doctor List https://ift.tt/GFQ56KdRb via IFTTT