Skip to main content

চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে কার্যকরী অয়েল ট্রিটমেন্ট ও হেয়ার মাস্ক

এক রাশ কালো ও লম্বা চুল সব মেয়েদেরই পছন্দ! যত্ন নিতে না পারার কারণে বা চুলের আগা ফাটার জন্য অনেকেই চুল কেটে ছোট করে ফেলে। এখন শর্ট হেয়ারের ট্রেন্ড চললেও ঘন, লম্বা চুল নজর কাড়ে সবারই। নানা ধরনের স্টাইলিশ হেয়ার কাট করে লুকে চেঞ্জ আনছে অনেকেই, কিন্তু লম্বা চুলের কদর আগেও ছিল আর এখনও আছে। কিন্তু লম্বা চুল পাওয়ার উপায় কী? চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে কার্যকরী অয়েল ট্রিটমেন্ট ও হেয়ার মাস্ক রেসিপি নিয়েই আজকের ফিচার।

চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করবো কীভাবে?

আমাদের আগের প্রজন্ম মানে নানী-দাদিরা চুলের পরিচর্যায় একদম খাঁটি ও অরগানিক উপাদান ব্যবহার করতেন। তাদের চুলও ছিল ঘন আর লম্বা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এখন আমাদের লাইফস্টাইলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। পল্যুশন, স্ট্রেস, ভেজাল- সবকিছুই বেশি! লম্বা চুল পেতে হলে প্রোপারলি যত্ন নিতে হবে। আর একটু জেনে নিতেও হবে যে কোন কোন উপাদান ন্যাচারালি হেয়ার গ্রোথ বুস্ট করে। ‘চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করবো কীভাবে?’ এই প্রশ্নটা অনেকেই করেন! একদম কম খরচে ও অল্প সময়ে চুলের গ্রোথ কীভাবে বাড়ানো যায়, সেই সিক্রেটটাই আজ শেয়ার করবো।

চুলের গ্রোথ

১) হেয়ার গ্রোথের জন্য কার্যকরী অয়েল ট্রিটমেন্ট

অয়েল ম্যাসাজ চুলের গোড়াতে ব্লাড সার্কুলেশন ইম্প্রুভ করে। হেয়ার অয়েল আমাদের স্ক্যাল্পের ফলিকলে বা হেয়ার রুটে নিউট্রিয়েন্টস প্রোভাইড করে। ঘরে বসে মাত্র কয়েকটি উপকরণ দিয়েই অয়েল ট্রিটমেন্ট করে নিতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত দু’বার অয়েল ম্যাসাজ করুন, এতে আপনি নিজেই পার্থক্যটা দেখতে পাবেন। চলুন দেখে নেই কী কী উপকরণ লাগবে-

  • নারকেল তেল- ৩ টেবিল চামচ (চুলের লেন্থ অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে)
  • ক্যাস্টর অয়েল- ১ চা চামচ
  • রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল- ২ ফোঁটা

কীভাবে করতে হবে? 

একটি হিটপ্রুফ বোলে সব উপকরণ মিক্স করে ওভেনে হালকা গরম করে নিন। আর ওভেন যদি না থাকে তাহলে একটি বড় বোলে গরম পানি নিয়ে তাতে তেলের বোলটি রেখে গরম করে নিতে পারেন। সরাসরি চুলায় তেল গরম করলে অতিরিক্ত তাপে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এবার হালকা গরম তেল স্ক্যাল্পে ও চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। ৪০ মিনিট চুলে রেখে দিন এবং এরপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ওয়াশ করে ফেলুন।

কী কী বেনিফিট পাবেন এই অয়েল ট্রিটমেন্টে?

অয়েল ট্রিটমেন্ট

১. নারকেল তেল

নারকেল তেলে আছে প্রয়োজনীয় মিনারেলস ও ফ্যাটি অ্যাসিড যা স্ক্যাল্প নারিশমেন্টে কাজ করে। সেই সাথে চুলের দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। আর এতে থাকা ময়েশ্চারাইজিং এলিমেন্টস চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, চুল ফাটা প্রতিরোধ করে। এটি হেয়ার কিউটিকলে পেনিট্রেট করে ড্যামেজ রিপেয়ার করে।

২. ক্যাস্টর অয়েল

হেয়ার ফলিকলে পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারলে চুলের বৃদ্ধি নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। ক্যাস্টর অয়েলে আছে ভিটামিন ই, প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড যেগুলো চুলের যত্নে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে এই তেল দারুণ কার্যকরী। যেহেতু ক্যাস্টর অয়েল বেশ থিক, তাই ক্যারিয়ার অয়েলের সাথে মিশিয়ে এটি স্ক্যাল্পে ইউজ করতে হয়।

 

৩. রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল

রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল চুলের গোড়া মজবুত করে আর চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এই অ্যাসেনশিয়াল অয়েল নতুন চুল গজাতে হেল্প করে। তাই যারা লম্বা ও ঘন চুল অল্প সময়েই পেতে চান, তারা হেয়ার কেয়ার রুটিনে ইনক্লুড করুন রোজমেরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল! যেহেতু এই অ্যাসেনশিয়াল অয়েল বেশ স্ট্রং, তাই ২/৩ ফোঁটাই এনাফ। যেকোনো ক্যারিয়ার অয়েলের সাথে মিক্স করে এটি ব্যবহার করতে হয়।

চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করার উপায়

২) চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে হেয়ার মাস্ক

রেগুলার হেয়ার কেয়ারের পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত একবার চুলে মাস্ক বা প্যাক অ্যাপ্লাই করা উচিত। এতে চুলের হেলথ ভালো থাকে, চুল পড়া কমে এবং সেই সাথে নতুন চুল গজায়। তবে কোন কোন ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো চুলের গ্রোথের জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ করে, সেটা জেনে নেওয়া জরুরি। চলুন দেখে নেই কী কী উপকরণ লাগবে হেয়ার মাস্ক বানাতে-

  • আমলা গুঁড়ো- ৪ চা চামচ (চুলের লেন্থ অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে)
  • অ্যালোভেরা জেল- ২ চা চামচ
  • ডিম- ১টি
  • লেবুর রস- সামান্য

কীভাবে করতে হবে?

সব উপকরণগুলো একসাথে মিক্স করে স্মুথ পেস্ট বানিয়ে নিন এবং চুলের গোড়া থেকে লেন্থ অবধি ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করুন। ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। যাদের চুল অতিরিক্ত ড্রাই বা ফ্রিজি, তারা এই হেয়ার মাস্কে কয়েক ড্রপ আমন্ড অয়েল মিক্স করতে পারেন।

কী কী বেনিফিট পাবেন এই হেয়ার মাস্কে?

হেয়ার মাস্ক

১. আমলা

এই উপকরণটি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই! এতে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস স্ক্যাল্পের ব্লাড সার্কুলেশন বাড়িয়ে হেয়ার গ্রোথ স্টিমুলেট করে। হেয়ার ফলিকলে যখন পুষ্টি ও অক্সিজেন সাপ্ল্যাই ঠিকমতো হয়, তখন চুলের বৃদ্ধি তরান্বিত হয়। আমলা চুল পড়া কমাতে ও চুল পাকা রোধ করতেও দারুণ কার্যকরী।

২. অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরাকে বলা হয় ম্যাজিকাল প্ল্যান্ট। এতে আছে মিনারেলস, অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই। হেয়ার গ্রোথের জন্য অ্যালোভেরা জেল কাজ করে ঠিক ম্যাজিকের মতোই। সেই সাথে চুলের রুক্ষতা দূর করে এবং চুলের ন্যাচারাল শাইনি লুক রিস্টোর করে।

৩. ডিম

চুলের যত্নে ডিম ব্যবহৃত হয়ে আসছে অনেক আগের থেকেই। চুলের হেলদি গ্রোথ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের যোগান দেয় এই উপকরণটি। হেয়ার রুট স্ট্রং করে, চুল পড়া কমায়, চুলকে কোমল করে তোলে, আগা ফাটা রোধ করে- এমন অনেক বেনিফিটস আছে ডিমের! তাই হেয়ার মাস্কে এই উপকরণটি অ্যাড করলে এর ইফেক্টিভনেস অনেক বেড়ে যায়।

চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে হেয়ার মাস্ক

৪. লেবু

লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট করে। আর এর ফলে চুল খুব দ্রুত বড় হয়। এতে আরও আছে কিছু ভাইটাল নিউট্রিয়েন্টস যা চুলের গোড়া মজবুত করে। কিন্তু অ্যাসিডিক হওয়ার কারণে সরাসরি লেবু অ্যাপ্লাই করতে মানা করা হয়, কোনো প্যাকের সাথে সামান্য পরিমাণে মিক্স করে চুলে ও স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন।

চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে কার্যকরী অয়েল ট্রিটমেন্ট ও হেয়ার মাস্ক সম্পর্কে জানা হয়ে গেলো। তাহলে ট্রাই করুন আজই। আর হ্যাঁ, চুলের সুস্থতার জন্য রেগুলার ডায়েট চার্টে প্রোটিনজাতীয় খাবার অবশ্যই রাখতে হবে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ছবি- সাজগোজ

The post চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করতে কার্যকরী অয়েল ট্রিটমেন্ট ও হেয়ার মাস্ক appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/m758164
Munia

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...