Skip to main content

অফিসে ইমোশনাল হয়ে কাজের ক্ষতি করছেন না তো?

মানুষ মাত্রই তার ইমোশন থাকবে। ইমোশন এক্সপ্রেস করা অবশ্যই ভালো, তবে অফিসে কাজ করার সময় এই ইমোশনই আপনার জন্য ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জীবনে নানা সমস্যা থাকে। এই সমস্যাগুলো বিভিন্নভাবে প্রফেশনাল লাইফে এফেক্ট ফেলতে পারে। ফ্রাস্ট্রেশন, দুশ্চিন্তা, রাগ, কাউকে অপছন্দ করা বা নিজে ভালো না থাকা- সবই কোনো না ভাবে ইমোশন। তাই আগে বুঝতে হবে আপনি কী ধরনের ইমোশনাল প্রবলেম ফেইস করছেন এবং কীভাবে সেটি কাটিয়ে উঠবেন। আজকের আর্টিকেলে জানাবো অফিসে ইমোশনাল হয়ে পড়লেও কীভাবে সামলে উঠবেন সে সম্পর্কে।

১) নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বোঝা

আপনি যে ইমোশনাল প্রবলেম ফেইস করছেন সেটা বোঝার জন্য আগে বুঝতে হবে আপনি কেমন আছেন। আমাদের মস্তিষ্কের আগে শরীর বুঝতে পারে আমরা কেমন আছি। চোখ লাল হয়ে যাওয়া, স্বাভাবিকের তুলনায় বুকে ধড়ফড় বেশি হওয়া এগুলো ইমোশন এক্সপ্রেস করারই একটি লক্ষণ। যদি বুঝতে পারেন অন্য সময়ের তুলনায় বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে অথবা মন খারাপ হয়ে আছে, তাহলে যে কোনো অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার ভাবুন। এ সময়গুলোতে যদি একা থাকতে ভালো না লাগে তাহলে অফিসেই ক্লোজ কোনো সহকর্মীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন।

শরীর খারাপ লাগা

২) রিল্যাক্স থাকা

কর্মক্ষেত্রে রিল্যাক্স থাকা অনেক জরুরি। সুযোগ পেলে চেষ্টা করুন নিজেকে একটু সময় দেওয়ার। ডিপ ব্রিদিং কিন্তু রিল্যাক্স হওয়ার খুব ভালো একটি উপায়। দুশ্চিন্তা, ফ্রাস্ট্রেশন, রাগ ঝেড়ে ফেলার জন্য এই পদ্ধতিটি বেশ কাজে দেয়। জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে ১০ পর্যন্ত গুণে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। এছাড়া হাঁটাহাঁটি বা রিল্যাক্সিং মিউজিক শুনলেও বেশ আরাম লাগে। কারও সঙ্গে কথা বলতে যদি ভালো লাগে তবে সেটাও করতে পারেন।

৩) ১০ পর্যন্ত গোণা

অফিসে ইমোশনাল হয়ে যদি কখনো রাগ হয় বা ফ্রাস্ট্রেশন কাজ করে অথবা তার চেয়েও খারাপ কিছু হয়, তখন মনে মনে ১০ পর্যন্ত গুণতে শুরু করুন। যদি বুঝতে পারেন নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছেন না তখন এই মেথড ইউজ করুন। যদি কোনো ঘটনার জন্য আপনি দায়ী হয়ে থাকেন, তবে কিছুটা সময় একা থাকুন। তবে হ্যাঁ, কিছু সময় পর অবশ্যই যে কারণে এমনটি হয়েছে সেটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

৪) নিজের দোষ স্বীকার করা

যদি আপনার ভুলের কারণে কোনো মিস কমিউনিকেশন অথবা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই রিয়েক্ট করা যাবে না। নিজের ভুল স্বীকার করে নিতে হবে।

স্টিকি নোট লেখা

৫) পছন্দের কাজ করা 

কাজের সময় মেন্টাল স্ট্রেস নতুন কিছু নয়। যে কোনো কারণেই স্ট্রেস হতে পারে। যে সময় এমন হচ্ছে, হতে পারে তখন কথা বলার জন্য আশেপাশে কাউকে পাচ্ছেন না। তখন আপনার নিজেকেই নিজের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে হবে। ছোট একটি জার্নাল পড়া, স্টিকি নোটে নিজের কথা লিখে রাখা, পছন্দের কোনো ভিডিও দেখা বা গান শোনা, কাগজে আঁকিবুঁকি- সে কোনো কিছুই হয়ে উঠতে পারে আপনার ইমোশন নিয়ন্ত্রণের উপায়।

৬) কলিগদের প্রতি সম্মান থাকা

আপনি নিজেকে যেমন সম্মানিত হিসেবে দেখতে চান, আপনার কলিগকেও ঠিক একইভাবে ট্রিট করুন। যদি কেউ রুড আচরণ করে, জরুরি নয় আপনাকেও তার মতো হতে হবে। বরং রাগ না করে তাকে আপনার মতামত বোঝানোর চেষ্টা করুন।

৭) ক্ষমা চাওয়া

ইমোশনাল হয়ে রাগ করা খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। যদিও উচিত নয়, তবু কাজ করতে করতে এমন যদি কখনো হয়েও যায়, তবে চেষ্টা করুন দ্রুত ক্ষমা চাওয়ার। একদম ডিফেন্সিভ হয়ে যে কিছু বলতে হবে এমন নয় কিন্তু! ‘আমি আমার আচরণের জন্য দুঃখিত’ – এমন একটি কথাও অনেক কিছু বদলে দিতে পারে।

আড্ডা দেওয়া

৮) নেগেটিভ ইমোশন বাড়ি পর্যন্ত না নিয়ে যাওয়া

কথাটি শুনতে একটু অবাক লাগলেও চেষ্টা করুন দিনের যত রাগ, মন খারাপ আছে সেগুলো অফিসেই শেষ করে ফেলতে। যদি এই খারাপের রেশ বাড়ি পর্যন্ত থাকে, তাহলে ভিতরে ভিতরে আপনি নিজেই হতাশ হয়ে যাবেন। অফিস শেষ করে বাড়ি ফেরার আগে সম্ভব হলে বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে বাইরে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসতে পারেন। এতে অনেকটা হালকা লাগবে।

৯) নিয়মিত বিশ্রাম নেওয়া

কাজের শেষে পরিমিত বিশ্রাম ক্লান্তি যেমন দূর করে, তেমনই অনেক নেতিবাচক অনুভূতি ঠেকিয়ে রাখতেও সাহায্য করে। ঘুম ভালো হলে শরীর ভালো থাকবে, সাথে ইমোশন কন্ট্রোল করাও ইজি হবে। রাতে দেরি করে ঘুমানো, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, সকালে দেরি করে অফিসে যাওয়া – এগুলো টেনশন অনেক বাড়িয়ে দেয়। তাই চেষ্টা করুন সময়মতো ঘুমিয়ে সকাল সকাল উঠে পড়তে।

১০) নিজেকে দোষ না দেওয়া

অনেকেই যে কোনো নেগেটিভ ঘটনার কারণে নিজেকে দোষী মানতে থাকেন। এমনটি করা একদমই উচিত নয়। সব সময় পরিস্থিতি আপনার হাতে থাকবে না এটা মেনে নেওয়া শিখতে হবে। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, সেটা সামাল দিতে পারা জরুরি। এতে যে কোনো সময় নিজেকে যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া সহজ হবে।

এক নজরে অফিসে ইমোশন কন্ট্রোল করার উপায়

  • নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বুঝতে পারা
  • বাড়তি চাপ না নিয়ে কর্মক্ষেত্রে রিল্যাক্স থাকা
  • ১০ পর্যন্ত গোণা
  • স্টিকি নোটে কিছু লেখা অথবা পছন্দের গান শোনা, ভিডিও দেখা
  • নেগেটিভ ইমোশন বাড়ি পর্যন্ত না নিয়ে যাওয়া
  • পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়া

ইমোশন প্রতিটি মানুষের ইম্পরট্যান্ট একটি পার্ট। আবেগ না থাকলে আমরা কেউই টিকে থাকতে পারবো না। এর মানে এই নয় যে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইমোশনকেই প্রায়োরিটি দিতে হবে। অফিসে যদি ইমোশন কন্ট্রোলে রাখতে পারেন, তবে কর্মস্থলে যেমন আপনি ভালো থাকবেন, তেমনই কাজ করাও আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।

 

ছবিঃ সাজগোজ

The post অফিসে ইমোশনাল হয়ে কাজের ক্ষতি করছেন না তো? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/WTuJ1YG
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

Dr. Fariah Sharmeen - Woman Oncology Specialist

Dr. Fariah Sharmeen Specialty - Associate Consultant, Oncology Degree - MBBS, FCPS (Radiotherapy) Chamber: SQUARE Hospitals Ltd. Dhaka Address: 18/F Bir Uttam Qazi Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka - 1205, Bangladesh Call For Appointment 10616 Call Now About: Dr. Fariah Sharmeen successfully completed her MBBS from Cumilla Medical College, and subsequently completed a one-year internship at BIRDEM Hospital, Dhaka. After completing of the internship, she started her post-graduate training in Medical Oncology at the National Institute of Cancer Research & Hospital. She started her fellowship in Radiotherapy in 2010. She completed 4 years of training at the National Institute of Cancer Research & Hospital on External Beam Radiotherapy Planning and Brachytherapy. She achieved FCPS in Radiotherapy from the Bangladesh College of Physicians & Surgeons (BCPS) in 2015. She has obtained several hands-on pieces of training on Head - Neck, Lung, Genitourina...

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...