Skip to main content

ঈদের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিতে খেয়াল রাখুন ১০টি বিষয়

ঈদ তো চলেই এলো। চলছে নানা ব্যস্ততা। সদাইপাতির লিস্ট অনুযায়ী কেনাকাটায় কিছু বাদ নেই নিশ্চয়ই? পোশাকের পাশাপাশি নানা ধরনের ঘর সাজানোর জিনিসও কিনেছেন। কিন্তু এত সব কিছুর মাঝে নিজের ঘরটা ঠিকমতো পরিষ্কার করা শুরু করেছেন তো? বাসা ছোট বা বড় যেমনই হোক না কেন, যদি পরিপাটিই না থাকে, তাহলে কিন্তু কোনো সাজসজ্জাই ঘরে মানাবে না। অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের সময় ঘর গোছানোর প্ল্যান কিছুটা আলাদা হয়। তাই অনেকেই বুঝতে পারেন না কোন কাজ কীভাবে করা উচিত। এই দ্বিধা কাটাতে ঈদের আগে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি নিয়েই আজকের আর্টিকেল।

ঈদের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিতে দরকারি কিছু বিষয় 

১) ঘর পরিষ্কার

ঈদের আগে পুরো ঘর পরিষ্কার করা মানে হচ্ছে ঘরের সব জায়গা ভালোভাবে ক্লিন করা। অপ্রয়োজনীয় যত জিনিস আছে সব ঘর থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। যে জায়গাগুলো অবশ্যই ক্লিন করতে হবে- সোফার পেছনে, বিছানার নিচে, কিচেন কাপবোর্ড, সব ধরনের লাইট, ড্রয়ার, পর্দা লাগানোর রড, বাসার সামনের এরিয়া (পাপোষসহ), বাথরুম, জানালা ইত্যাদি। বাসায় যদি এসি থাকে তাহলে ঈদের আগে সার্ভিসিং করে ফেলতে হবে সেটিরও। সাথে প্রতি ঘরে থাকা ফ্যানের ব্লেডগুলোও ভালো করে ক্লিন করে নিন।

ঈদের আগে ঘর পরিষ্কার

২) পর্দা বাছাই

সারা বছর ঘরে পর্দা লাগানো নিয়ে তেমন কোনো ভাবনা কাজ না করলেও ঈদের মৌসুমে নতুন পর্দা লাগাতে চান অনেকেই। আসবাবপত্রের ভিড়ে ড্রয়িং রুম যেন অন্ধকার না দেখায় এবং একইসাথে যেন আলোকিত ও উজ্জ্বল থাকে, সেজন্য হালকা রঙের পর্দা বেছে নিন। রান্নাঘরের পাশে হওয়ায় খাবার ঘরে তাপের আনাগোনা সব সময় বেশি থাকে। তাই এ ঘরের জন্য বাদামি, লালচে কমলা, চকলেট বা মেরুন কালারের পর্দা বেছে নিতে পারেন। শোবার ঘর যেহেতু নিজের এক টুকরো প্রশান্তির জায়গা, তাই এ ঘরের পর্দা হওয়া চাই হালকা রঙের। গোলাপি, সবুজ, আকাশি বা পিচ কালারের পর্দা হতে পারে আপনার ঘরের জন্য পারফেক্ট।

৩) চাদর ও কভার বদলে ফেলা

বসার ঘরের সোফা, কুশন কভারসহ শোবার ঘরের বিছানার চাদর এবং বালিশের কভার বদলে ফেলুন। ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য উজ্জ্বল রঙের চাদর ও কভার বেছে নিন। যদি ডাইনিং রুমের টেবিল ক্লথ কাপড়ের হয়, তাহলে খাবার পরিবেশনের আগে পাতলা ট্রান্সপারেন্ট পলিথিন বিছিয়ে দিন। এতে খাবার পড়ে ক্লথ নষ্ট হবে না।

৪) সৌন্দর্য বাড়াতে যা কিছু

ঘরকে নতুন রূপ দেওয়ার জন্য চাইলে আসবাবপত্র কিছুটা এদিক সেদিক করতে পারেন। মেঝেতে বিছিয়ে দিতে পারেন শতরঞ্জি কিংবা রাগ। বিছানার পাশের টেবিলে রেখে দিন কিছু তাজা ফুল। ডাইনিং টেবিলের মাঝে ফলের ঝুড়িতে তাজা কিছু ফল রেখে দিতে পারেন। ঘরে সাজিয়ে রাখা কোনো আয়না যদি নষ্ট হয়ে থাকে অথবা ভেঙে যায়, তাহলে সেটি বদলে ফেলুন। ঘরের পাপোষগুলো পরিষ্কার করে নিন অথবা নতুন পাপোষ বিছিয়ে দিন। ঘরের বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা যেমন- ল্যাম্প শেড, তারা বা মরিচ বাতিগুলো রাখতে পারেন। অনেকেই হালকা বাতাসে টুং টাং শব্দ ভালোবাসেন। এমন হলে দরজার সামনে বা বারান্দায় উইন্ড চাইম লাগাতে পারেন। ঘরে স্নিগ্ধ আবহ আনতে সুগন্ধী মোমবাতিও রাখতে পারেন। ঘরের বারান্দা বড় হলে ঝুলিয়ে দিতে পারেন দোলনাও।

সুগন্ধী মোম

৫) ফ্রিজ পরিষ্কার

ঈদের সময় রান্না করা নানা ধরনের খাবার রাখার জন্য ফ্রিজে জায়গার দরকার হয়। তাই ফ্রিজে রাখা বাড়তি সব খাবার সরিয়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করে নিন। ডিটারজেন্ট গোলানো পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে ফ্রিজ ভিতরে ভালো করে ক্লিন করুন। যদি কোনো গন্ধ থাকে তাহলে অল্প ভিনেগার অথবা লেবুর রসও ব্যবহার করতে পারেন।

৬) রান্নাঘর পরিষ্কার

ঈদ উপলক্ষে রান্নাঘরে গৃহিণীদের অনেকটা সময় কাটে। তাই রান্নাঘরে ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেক। এ জন্য রান্নাঘর ক্লিন করা অনেক জরুরি। সবার আগে অব্যবহৃত জিনিস ফেলে দিয়ে পুরো ঘরের জিনিস থরে থরে সাজিয়ে নিন। রান্নাঘর জীবাণুমুক্ত রাখতে জীবাণুনাশক তরল দিয়ে মেঝে, সিংক পরিষ্কার করে নিন। ঈদ উপলক্ষে বদলে ফেলতে পারেন পুরনো ডাস্টবিনটাও। রান্নাঘরের কাজ আরেকটু এগিয়ে রাখার জন্য শো কেস থেকে প্লেট, গ্লাস, চামচ ইত্যাদি বের করে ধুয়ে মুছে রাখুন। এতে মেহমান আসলে ঝামেলায় পড়তে হবে না।

৭) অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দেওয়া

অনেকেই ব্যবহার না হলেও সে জিনিসগুলো দিনের পর দিন ঘরে রেখে দেন। এতে যেমন ঘরের জায়গা নষ্ট হয়, তেমনই নোংরাও হয়। ঈদের আগে চেষ্টা করুন অব্যবহৃত জিনিসগুলো ফেলে দিতে। রান্নাঘর, ওয়্যারড্রোবের উপরে, আলমারির উপরে কিংবা টেবিল, ড্রেসিং টেবিল জুড়ে থাকা জিনিসগুলোর মাঝে বাছাই করুন কোনটি বেশি দরকার। শুধু সেগুলোই হাতের কাছে রাখুন। বাকি জিনিসগুলো কোনো ড্রয়ারে রেখে দিন।

বাজার করা

৮) রেসিপি সিলেকশন ও বাজার

ঈদের রান্নায় কোন কোন রেসিপি রাখবেন সেটি এখনই ঠিক করে নিন। এতে প্রয়োজনীয় সব কিছু লিস্ট করে বাজার থেকে এনে রাখতে পারবেন। প্যাকেটজাত দুধ, কোল্ড ড্রিংকস, জুস, আইসক্রিম, ফ্রোজেন আইটেম ইত্যাদি এনে ফ্রিজে রেখে দিন। রান্নার সময় যেন হাতের কাছেই পাওয়া যায় তাই মশলা গুঁড়া করে কিংবা বেটে রাখুন।

৯) দর্জির কাজ করিয়ে ফেলা

পোশাকের কেনাকাটা তো অলমোস্ট শেষ। তবে অনেকের পোশাকেই কিছু কাজ বাকি থাকে যার জন্য শেষ মুহূর্তে দর্জির কাছে যেতে হয়। এমন হলে দ্রুত কাজগুলো করে ফেলুন। ঈদের সময় যেন তাড়াহুড়ো না হয়, তাই নিজের ও বাচ্চাদের পোশাক রেডি করে রাখুন।

১০) ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে ঘর সাজানো 

ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে এবং ঘর সাজাতে ইনডোর প্ল্যান্ট রাখতে পারেন। এতে পুরো ঘরের সৌন্দর্যই পাল্টে যাবে। ইনডোর প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে অ্যালোভেরা, মানি প্ল্যান্ট, লাকি ব্যাম্বু, লিলি, ফিলোডেনড্রন হার্টলিফ, মিকান্স, স্নেক প্ল্যান্ট রাখতে পারেন। ঘরে সাজিয়ে রাখা সবুজ আপনার মন তো ভালো রাখবেই, সাথে ঘরকেও রাখবে শীতল।

ঈদের আগে পুরো ঘর মনের মতো করে সাজিয়ে নিন। এতে ঈদের সময় মন যেমন ভালো থাকবে, তেমনই ঘরে আসা মেহমানও আপনার পছন্দের প্রশংসা করবে। ঈদের সময় আমরা যত আগ্রহ নিয়ে ঘর সাজাই বা গোছাই, চেষ্টা করবেন বছরের অন্যান্য সময়েও যেন ঘর এমন পরিষ্কার থাকে। এতে পরিবারের সকলেরই মন ভালো থাকবে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। সবার ঈদ ভালো কাটুক।

 

ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক

The post ঈদের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিতে খেয়াল রাখুন ১০টি বিষয় appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/czmGhQR
Arfatun Nabila

Comments

Popular posts from this blog

রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা | সঠিক ইনার ওয়্যার কীভাবে সিলেক্ট করবেন?

রেগুলার ব্রা আর পুশ-আপ ব্রা, এই দু’টার মধ্যে আসলে পার্থক্য কী আর কখন কোনটা ইউজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের অ্যাকটিভিটি আর আউটফিটের সাথে ইনার ওয়্যারেও ভ্যারিয়েশন আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়ার্ক আউট করছি, এরপর ভার্সিটি বা অফিসে যাচ্ছি, সন্ধ্যায় পার্টি অ্যাটেন্ড করছি। সব সময় কি আমরা সেইম ব্রা পরি? না তো! শাড়ি পরলে এক ধরনের ব্রা পরি, জিমে গেলে অন্য ধরনের ব্রা পরি, বাসায় থাকলে আবার আরেক রকম! কখন কোন ব্রা পরা উচিত বা কোন ড্রেসের সাথে কোনটা মানাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। এই বিষয়গুলো এখনও অনেকের কাছেই ট্যাবু। দিন বদলাচ্ছে, এই সামাজিক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সবাইকে। লঞ্জেরি মেয়েদের জন্য বেসিক একটি জিনিস। তাই লঞ্জেরির ক্যাটাগরিটা আমাদের জেনে রাখা উচিত। পুশ-আপ ব্রা কেন ইউজ করে, এটাই এখনও অনেক মেয়েরা জানে না! রেগুলার ব্রা এর সাথে সাথে নিজের কালেকশনে পুশ-আপ ব্রা কেন রাখা উচিত, সেটা কিন্তু অনেকে বুঝতে পারে না। চলুন এই কনফিউশনগুলো আজ দূর করা যাক। রেগুলার ব্রা vs পুশ-আপ ব্রা    বেসিক রেগুলার ব্রা-এর ক্ষেত্রে ফেব্রিক ম্যাটেরিয়াল ও কমফোর্টের বিষ...

বিবি ক্রিম vs সিসি ক্রিম | স্কিন টাইপ অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্য স্যুইটেবল?

ন্যাচারাল মেকআপ লুকের জন্য এখন বিবি ক্রিম ও সিসি ক্রিম বেশ জনপ্রিয়। পার্টি মেকআপ বা ফুল কভারেজ মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ইউজ করা হয়। কিন্তু যারা রেগুলার হালকা মেকআপ করে বাইরে বের হন, তাদের জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে BB বা CC ক্রিম । কিন্তু আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী কীভাবে রাইট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করতে হবে। এই দু’টি মেকআপ প্রোডাক্টের বেনিফিট বা কার্যকারিতা নিয়ে আজকের ফিচার। এগুলোর মধ্যে বেসিক ডিফারেন্সটা আসলে কোথায়, সেটাও জানা হয়ে যাবে। বিবি ক্রিম BB (Beauty Balm, Blemish Balm) ক্রিম স্কিনকে ইভেন টোনড করে এবং ব্লেমিশ হাইড করে ফ্ললেস লুক দেয় নিমিষেই। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজিং ও হাইড্রেটিং এলিমেন্টস থাকে, যার কারণে ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য এটি একদম পারফেক্ট। এর টেক্সচার ফাউন্ডেশনের থেকে লাইট, তাই কভারেজটাও হয় একদম ন্যাচারাল। মানে একদমই হেভি ফিল হয় না, আর স্কিনটাও পিকচার পারফেক্ট দেখায়। অনেক বিবি ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা SPF থাকে। সিসি ক্রিম CC (Color Corrector, Complexion Corrector) ক্রিমের ফর্মুলা লাইট ওয়েট ও লং লাস্টিং। ম্যাট ফর্মুলার হওয়াতে অয়েল...

লো পোরোসিটি চুল | কীভাবে চিনবেন এবং সঠিক যত্ন নিবেন?

একরাশ সুন্দর ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু অনেক সময় সঠিক যত্নের অভাবে সুন্দর চুলগুলো দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। চুলের যত্নের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় ভুল হলো পোরোসিটি না বুঝে হেয়ার কেয়ার করা। এতে করে চুল আরো ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। আজকের ফিচারটি মূলত লো পোরোসিটি হেয়ার কেয়ার নিয়ে। লো পোরোসিটি চুল কীভাবে বুঝবো, কীভাবে যত্ন নিতে হবে, কী ব্যবহার করা যাবে ও যাবেনা ইত্যাদি বিস্তারিত জানবো আজকের ফিচারে। লো পোরোসিটি বলতে কী বোঝানো হয়? পোরোসিটি শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। ত্বকে যেমন অসংখ্য পোর বা ছিদ্র থাকে, চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি চুলে অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান, যার মাধ্যমে চুলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে এবং চুল আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করে। একেই হেয়ার পোরোসিটি বলে। পোরোসিটি ৩ রকম, হাই, মিডিয়াম ও লো। এই হেয়ার পোরোসিটির মাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে থাকে। লো পোরোসিটির চুলগুলো কম ছিদ্র সম্পন্ন হয়ে থাকে। লো পোরোসিটি চুলের কিউটিকল লেয়ার খুব শক্ত ভাবে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এ ধরনের চুল আর্দ্রতা সহজে গ্রহণ করতে পারেনা, তবে একবার আর্দ্রতা গ্রহণ করলে এ ধরনের...